দেশের সময় , ইম্ফল : ভয়াবহ ধস মণিপুরে। এখনও পর্যন্ত মৃত ৮১। নিখোঁজ প্রায় ৫৫ জন। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মণিপুরের ভয়ঙ্কর ধসে মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার গোপাল নগর থানার ব্যারাকপুর শ্রীপল্লীর বাসিন্দা সন্তু ব্যানার্জি নামে এক যুবকের৷ শ্রীপল্লী র বাসিন্দা গৌতম ব্যানার্জি ও সুজিত বসু জানান বুধবার রাতে ধস নামে মণিপুরের ননে জেলার টুপুল রেল স্টেশনের কাছে। সেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় সেনার ১১ নম্বর গোর্খা রেজিমেন্টের হাবিলদার সন্তু ব্যানার্জি৷ এমনই দুঃসংবাদের খবর প্রশাসন সূত্রে শনিবার সকালে সন্তুবাবুর পরিবারের কাছে টেলিফোনের মাধ্যমে পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রামে ৷

ধসের আসল বীভৎসতার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীই। গতকালই ঘটনাস্থান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। সেখানে তিনি বলেন, “রাজ্যের ইতিহাসে সবথেকে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় আমরা ৮১ জনকে হারিয়েছি।”

ধসের ভয়াবহতা দেখেই আন্দাজ করা হয়েছিল যে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কিন্তু তা যে এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারেনি কেউ। মণিপুরের ভয়াবহ ভূমিধসে কমপক্ষে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে, এখনও নিখোঁজ প্রায় ৫৫ জন। শুক্রবার বিপর্যয়স্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে এমনটাই জানালেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি জানান, ধসের জেরে ধুয়ে আসা কাদা-মাটির নীচে চাপা পড়েই প্রাণ হারিয়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। তাদের দেহ উদ্ধার করতে আরও ২-৩ দিন সময় লেগে যাবে বলেই জানান তিনি।

লাগাতার বৃষ্টির জেরে বুধবার রাতে ভয়াবহ ধস নেমেছিল মণিপুরের ননে জেলার টুপুল রেলইয়ার্ডে। সেই সময় রেললাইন পাতার কাজ চলছিল। ধসের পাথর, কাদামাটিতেই ভেসে যান শ্রমিক, সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। ভেসে গিয়েছে সেনার ক্যাম্প সহ একাধিক ঘরবাড়িও। প্রথমে ৮ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে শুক্রবার রাতে জানানো হয়, ভয়ঙ্কর ওই ভূমিধসে এখনও অবধি ২০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কমপক্ষে ৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

তবে ধসের আসল বীভৎসতার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীই। গতকালই ঘটনাস্থান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এন বীরেন সিং। সেখানে তিনি বলেন, “রাজ্যের ইতিহাসে সবথেকে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় আমরা ৮১ জনকে হারিয়েছি। এদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৮ জন টেরিটোরিয়াল আর্মি জওয়ানের দেহও রয়েছে। এখনও অবধি কমপক্ষে ৫৫ জন আটকে রয়েছেন। মাটি অত্যন্ত নরম হওয়ায় মৃতদেহগুলি এর নীচ থেকে উদ্ধার করত ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগবে।”

ইতিমধ্যেই মণিপুর সরকারের তরফে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, উদ্ধারকাজে সাহায্য করতে কেন্দ্রের তরফে এনডিআরএফ ও সেনা জওয়ানদের পাঠানো হচ্ছে। তবে মাটি এতটাই নরম হয়ে রয়েছে যে গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনাস্থানে যাওয়া যাচ্ছে না। লাগাতার বৃষ্টি হওয়া. ফের ধস নামার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এরফলেই উদ্ধারকাজে দেরী হচ্ছে। উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ শেষ হতে আরও ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগবে বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বুধবার রাতে ধস নামে মণিপুরের ননে জেলার টুপুল রেল স্টেশনের কাছে। সেখানেই ভারতীয় সেনার ১০৭ টেরিটোরিয়াল আর্মির ক্যাম্প ছিল। জওয়ানরা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রেললাইন নির্মাণকাজ পাহারায় ছিলেন। এদিকে, ভারতীয় সেনার তরফে বলা হয়েছে, ‘টেরিটোরিয়াল আর্মির জওয়ানদের দেহ সসম্মানে তাঁদের বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে।

এখনও ১৫ জন জওয়ানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ অনেক বাসিন্দা। উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে।’ এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও। মৃত জওয়ানদের মধ্যে ৯ জন দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা। মমতা টুইটে লিখেছেন, ‘‌মণিপুরে ধসে মৃতদের মধ্যে ৯ জওয়ান দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা। শোকস্তব্ধ। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল।’‌ 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here