বনগাঁ: নতুন বছর শুরু হয় নতুন সম্ভাবনা, আশা ও ভালোবাসার বার্তা নিয়ে। এই সময় প্রিয়জনকে একটি সুন্দর উপহার দেওয়ার মাধ্যমে আপনার ভালোবাসা ও যত্ন প্রকাশ করতে পারেন। উপহারটি নির্বাচন করতে পারেন প্রিয়জনের চিন্তা, ব্যবহারিক দিক বা তাদের বিশেষ কোনো শখের সঙ্গে মিল রেখে।
যেমন– ডায়েরি হতে পারে একটি অসাধারণ উপহার। নতুন বছরে কেউ যদি তাঁর লক্ষ্য নির্ধারণ বা প্রতিদিনের কাজ পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন করতে চান, তবে একটি ভালো মানের ডায়েরি উপহার দিয়ে তাঁকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন। এতে আপনি একটি ব্যক্তিগত বার্তাও লিখে দিতে পারেন, যা তাঁকে আরও উৎসাহিত করবে।
ডায়েরির শুরুতে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তা লিখে দিলে এটি আরও ব্যক্তিগত এবং অর্থবহ হয়ে উঠবে। আর যদি সেটি হাতে তৈরি হয় তাহলে একটি গিফট বক্সে সাজিয়ে উপহার দিলে তা আরও স্মৃতিময় হয়ে উঠবে। বলে জানান বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ । তাঁর এই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে বনগাঁর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা দিন রাত এক করে তৈরি করছেন ৫০০ টি কচুরিপানার ডায়েরি।
নতুন বছরের উপহার স্বরূপ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য তেমনই একটি সুন্দর ডায়েরি উপহার স্বরূপ পাঠালেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ ।
গোপাল বাবুর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মায়ের মতন তাই তাঁকে এই উপহার পাঠিয়েছি । বনগাঁর সাধারণ মানুষের কাছে আমার অনুরোধ আপনারাও আপনাদের মা, বাবা ও প্রিয় জনদেরকে পুরসভার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাদের হাতে তৈরী এই ডায়েরি উপহার দিতে পারেন, যা আপনার প্রিয়জনদের জন্য বিশেষ কিছু হয়ে উঠবে। এটি নতুন বছরের সতেজতার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।
উপহারের সবচেয়ে বড় মূল্য নির্ভর করে সেটির আবেগগত গুরুত্বের ওপর। দামি বা বড় গিফটের চেয়ে নিজের হাতে কিছু তৈরি করা কিংবা আন্তরিকভাবে বেছে নেওয়া উপহারই প্রিয়জনদের বেশি খুশি করবে। ছোট বা বড় যা-ই হোক না কেন, আপনার আন্তরিকতা এবং ভালোবাসা সেটিকে অসাধারণ করে তুলবে। নতুন বছরে এটি আপনার সম্পর্ক আরও গভীর এবং একটি সুন্দর স্মৃতি তৈরি করবে। শুধু বাংলা বাজারই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও এই ডায়েরি নজর কাড়বে, আশাবাদী বনগাঁর পুরপ্রধান ৷
সীমান্ত শহর বনগাঁয় ইছামতী তার নাব্যতা হারিয়ে মৃতপ্রায় এখন ৷ তার গতিপথে দীর্ঘদিনের বাধা হয়েছে দাঁড়িয়ে আছে পলি। আর তার বুক বছরভরই ভরে থাকে কচুরিপানায়৷। স্থানীয় বাসিন্দারা বহুবার কচুরিপানা পরিষ্কারের দাবি জানিয়েছিল সরকারের দুয়ারে৷
যদিও এলাকার মানুষের দাবিতে বনগাঁ পুরসভা ও সেচ দফতর মাঝেমধ্যে সে কাজও করেছে বেশ কযেকবার। তবুও অযত্নে কে জানে ইছামতীতে জলের বদলে দেখা মেলে শুধুই কচুরিপানার। অথচ এই ইছামতীর নামেই নতুন জেলা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন এই ইছামতীর এমন করুণ ছবি? এ প্রশ্ন অন্য বিষয় ভিন্ন আলোচনা। তবে অন্ধকারের মধ্যেও আলোর রেখার যে দেখা মেলে তা আবারও প্রমাণ পাওয়াগেল ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বছর দু’এক আগেই সেই কচুরিপানাকেই অন্য কাজে ব্যবহার করছে বনগাঁ স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করছে রাখী। সেই রাখী পাঠানো হয়েছে ভারতের রাষ্ট্রপতি, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে।
পুরপ্রধান জানান, পুরসভার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাদের এই হস্তশিল্পকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি। আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রায় ১২০০ মতো। সেখানে ১২ হাজার মহিলা আছেন। যাঁরা কাজ করতে চায় তাঁদেরকেউ কাজ দেওয়া হবে৷ বাইরে এই ধরনের হস্তশিল্পের দারুণ চাহিদা আছে। সেই দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বনগাঁ পুরসভা চাইবে বিশ্বময় এই কাজটা ছড়িয়ে দিতে। আমরা এর আগেই রাখী, ব্যাগ তৈরি করেছি। আমরা রাখী পাঠিয়েছিলাম। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ,দেশের রাষ্ট্রপতি সহ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কানাডার রাষ্ট্রপ্রধানকেও ।”
এবার নতুন বছরের সতেজতার প্রতীক হিসেবে বনগাঁবাসীর তরফে এই ডায়েরি পাঠানো হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ।