
দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে বুধবার অশান্ত হয়ে ওঠে মহেশতলা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশও। ঘটনায় জখম পুলিশের একাধিক আধিকারিক ও কর্মী। এরপরই এলাকার দখল নেয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।

বৃহস্পতিবার সকালেও থমথমে পরিবেশ মহেশতলার রবীন্দ্রনগর এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন সেক্টর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে থানার সামনে ও সংলগ্ন এলাকায়। অলিগলিতে চলছে পুলিশের রুট মার্চ। সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত রবীন্দ্রনগর থানা এলাকায় মোট ২৮ জনকে এবং নাদিয়াল থানা এলাকায় মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সকাল থেকেই মাইকিং করে সতর্কবার্তা দিচ্ছে পুলিশ।

রবীন্দ্রনগর থানা সংলগ্ন এলাকায় জারি রয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা। বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৩টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। শুধুমাত্র রবীন্দ্রনগর থানা নয়, পাশাপাশি নাদিয়াল থানাতেও একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গোটা এলাকা থমথমে। দোকানপাট আংশিক খোলা থাকলেও রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের চলাফেরা কম। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে পুলিশ প্রশাসন। এলাকায় যাতে আর কোনও অশান্তি না ছড়ায়, সে দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। স্থানীয়দের একাংশ পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করলেও, অনেকেই আতঙ্কে ঘর থেকেই বের হতে চাইছেন না।

একই সঙ্গে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে গুজব না ছড়ানোর জন্যও পুলিশের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব সকলের। কেউ শান্তিভঙ্গের চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে বুধবার মহেশতলায় গোলমালের পরিস্থিতি তৈরি হয়। বেশ কয়েকটি দোকান ও বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামলাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে উন্মত্ত জনতা। তাতে জখম হন একাধিক পুলিশ কর্মী। এদের মধ্যে এক মহিলা পুলিশ কর্মীর আঘাত গুরুতর।
মহেশতলার ঘটনা নিয়ে বুধবার সন্ধেয় দুঃখপ্রকাশ করেন কুণাল ঘোষ। ‘দুর্ভাগ্যজনক’ উল্লেখ করে এক্ষেত্রে পুলিশের দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেন। বলেন, ‘কখনও কখনও এ ধরনের ঘটনা হয়, পুলিশ প্রশাসন যতেষ্ট সংবেদনশীলতার সঙ্গে কড়া মনোভাব নিয়ে গোটা বিষয়টা দেখছে। পুলিশ আধিকারিক জখম হয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন এখানে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। এমন কিছু করেনি যাতে পরিস্থিতি আরও বেড়ে যায় বা জটিল হয়ে যায়।’

তবে গোটা ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতা দেখছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মহেশতলার ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।