Mahalaya 2024: ঢাকে পড়েছে কাঠি, মহালয়ার দিন চক্ষু দান করা হয় কেন? এর রীতি ও গুরুত্ব জানুন

0
131
হীয়া রায় , দেশের সময়

 

দেবী দুর্গা হলেন মহাশক্তি। এই চৈতন্যময় মহাশক্তিই নিয়ন্ত্রণ করেন সমগ্র বিশ্ব। সৃষ্টির আদিতেও ছিলেন তিনি ছিলেন মহাশক্তিরূপে। তাই তাঁকে আদ্যাশক্তি নামেও ডাকা হয়। দেবী দুর্গা হলেন জ্ঞানশক্তি, অচ্ছ শক্তি ও ক্রিয়া শক্তির সম্মিলিত রূপ। দেবী দুর্গাকে বলা হয় দুর্গতি নাশিনী। দুর্গতির অর্থ হল দুঃখ। দেবী দুর্গার স্বরূপ জেনে যে ভক্ত তাঁর পূজা করেন তাঁর জীবন থেকে দুঃখ দূর হয়।

কারণ তিনি জেনে যান জ্ঞান, ইচ্ছা ও ক্রিয়ার রূপ। তিনি নিজের জীবনের প্রয়োগ করেন এই তিন শক্তি। ফলে তাঁর জীবনে আসে সমৃদ্ধি। এই সমৃদ্ধি শুধউই জাগতিক নয়। বরং অনেকখানি অ্যাধ্যাত্মিক। প্রাচীন শাস্ত্রে দেবীর রূপের যে বর্ণনা মেলে তা হল, দেবীর কেশ জটাযুক্ত।

সেখানে শোভা পায় অর্ধচন্দ্র। তাঁর বদন পূর্ণচন্দ্রের মতো। গাত্র বর্ণ হরিদ্রাভ। তিনি নানা অলঙ্কার ভূষিতা। তাঁর দশ হাত এবং দশ হাত দিয়ে তিনি দশ দকি রক্ষা করছেন। দেবী ত্রিনয়না। দেবীর তিন চক্ষু দ্বার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতকে নির্দেশ করে। অর্থাৎ ত্রিকালের অধিষ্ঠাত্রী দেবী স্বয়ং।

দেবীর এহেন মূর্তি বাঙালিরা ছোট থেকেই দেখে আসছে। সকলেই চাক্ষুষ করেছেন মহালয়ার দিন দেবীর চক্ষুদান পর্বও। প্রতিমা শিল্পী, পুরোহিত এবং সমগ্র বাঙালির কাছে মহালয়া মায়ের মূর্তিতে চক্ষুদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মহালয়ার দিন প্রথমে স্নান করে একজন শিল্পী কুশের অগ্রভাগ দিয়ে প্রথমে মায়ের তৃতীয় নেত্র অঙ্কন করেন। এরপর আঁকেন বাম চোখ ও তারপর ডান নেত্র। পুরোহিত এই সময়ে জপ করেন মন্ত্র। পবিত্র এই আচার পালন নিয়ে বহু লোকেরই রয়েছে অদম্য প্রশ্ন। আর তা হল , মহালয়ার দিন কেন দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তিতে চক্ষুদান করা হয়?

মনে রাখতে হবে মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় কিন্তু সপ্তমীকে। তাহলে এত আগে মহালয়ার দিন কেন চক্ষুদান করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পিতৃপক্ষ শেষ হয়ে মহালয়া থেকেই শুরু হয় দেবী পক্ষ।আর মহালয়া শব্দটির অর্থ হল মহা আলয় বা আশ্রয়ের স্থান। সেক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন এই আলয় বা ভক্তের আশ্রয় স্থল।

দেবীপক্ষে চক্ষুদান করে দেবীর আগমনের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় দিকে দিকে।এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে, শরৎ কালে যে পূজা হয় তা আসলে অকাল বোধন। তাহলে বাসন্তী পুজো বা বসন্ত কালে যে দুর্গা পূজা হয় তখন কোন সময়ে চক্ষু দান হয়?

ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, আগে দুর্গাপূজা হতো জমিদার বাড়ি বা রাজার বাড়িতে। সেক্ষেত্রে রথের দিন শুরু হতো কাঠামো পূজা এবং মহাসপ্তমীর দিন নবপত্রিকা স্নান ও পূজার পর হতো দেবীর চক্ষুদান। মনে রাখতে হবে নবপত্রিকা আসলে দুর্গার আর-এক রূপ।

তবে শ্রীরামচন্দ্রের অকাল বোধনের পর শরৎ কালে শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা। এই রীতির সম্পর্কে মানুষকে জানাত. তাই মহালয়া থেকেই দেবী দুর্গার চক্ষুদানের রীতি চালু হয়।ঢাকে পড়ে কাঠি। দিকে দিকে ছড়িয়ে যায় মায়ের আগমন বার্তা।

Previous articleMamata Banerjee ‘আমার বাবা নিয়মিত চণ্ডীপাঠ করতেন , পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধন করি না, ধর্ম সম্পর্কে আমার যথেষ্ট জ্ঞান আছে’, শ্রীভূমিতে বললেন মমতা
Next articleMahalayaমহালয়া আদৌও ‘শুভ’ নয় কেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here