দেশের সময় লোকসভা ভোটে রাজ্যে প্রচারে এসে সন্দেশখালি কাণ্ডে শাস্তির নিদান দিলেন অমিত শাহ।
সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় দোষীর কীভাবে শাস্তি দেওয়া উচিত তা কড়া ভাষায় ব্যাখ্যা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বললেন, ‘সন্দেশখালির দোষীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করবে বিজেপি’।
চতুর্থ দফার ভোটের আগে শুক্রবার বাংলায় প্রচারে এসেছেন অমিত শাহ। এদিন বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের সমর্থনে রানাঘাটের মাজদিয়া রেল বাজার হাই স্কুলের মাঠে সভার আয়োজন করে বিজেপি। সেখানেই শাহের বক্তব্যে উঠে আসে সন্দেশখালির প্রসঙ্গ।
রাণাঘাটের সভা থেকে এদিন সন্দেশখালির ঘটনায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন অমিত শাহ। গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকাকে সমালোচনা করে দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘মমতা এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উপস্থিতিতে ধর্মের ভিত্তিতে মহিলাদের শোষণ করা হয়েছে। এই কাজ করেছেন ওনার নেতারা। ওনার লজ্জা করা উচিত।” একইসঙ্গে সন্দেশখালির দোষীদের শাস্তির দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেন শাহ। তাঁর কথায়, “সিবিআই তদন্ত করছে। বাংলার মা, বোনদের চিন্তার দরকার নেই। সন্দেশখালির দোষীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করবে বিজেপি।’’
চব্বিশের লোক সভা ভোটের শুরু থেকেই শিরোনামে সন্দেশখালি ইস্যু। বঙ্গ বিজেপি তো বটেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ এবং আরও অনেক কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে সম্প্রতি সন্দেশখালির বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো, ধর্ষণের ঘটনা মিথ্যে, এমনও তথ্য সামনে এসেছে । দেশের সময় সেই ভিডিওগুলির সত্যতা যাচাই করেনি।
এদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে আসরে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাল্টা ভুয়ো ভিডিও বলে তোপ দেগেছে বিজেপিও। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে শাহের বক্তব্যে এদিন সন্দেশখালির ওই ভাইরাল ভিডিও নিয়ে কিছুই শোনা যায়নি। বদলে এর আগের নির্বাচনী সভাগুলির মতোই সন্দেশখালি নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, এদিন শাহের মুখে ফের উঠে আসে কাশ্মীর প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীর আমাদের কি না বলুন? কংগ্রেস নেতা খড়্গে বলেন, কাশ্মীর আর বাংলার যুবকদের কি লেনদেন? আপনি জানেন না, আমার রানাঘাটের যুবকেরা কাশ্মীরের জন্য প্রাণ দিতে পারেন। মোদীজি ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ ঘুঁচিয়ে দিয়েছেন।’’
লোকসভা ভোটের আগে দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু করেছে মোদী। প্রথম থেকেই সিএএ-র বিরোধিতা করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ নিয়ে মমতার বিরোধিতাকেও এদিন কটাক্ষ করেন শাহ। তাঁর মতে, “বহু মানুষ আজ নাগরিকত্ব পাননি। অনুপ্রবেশকারীদের ঠাঁই দিচ্ছে মমতা সরকার। কিন্তু মতুয়াদের নাগরিকত্বের বিরোধিতা করছে। আমরা সকলকে নাগরিকত্ব দেব।’’
আগামী ১৩ মে রাণাঘাটে ভোট। গত লোকসভা নির্বাচনেও এই আসন জিতেছিল বিজেপি। আসনটি ধরে রাখতে জোর প্রচারে নেমেছে গেরুয়া শিবির। এদিন রাণাঘাটের পর একইদিনে আসানসোল, বীরভূমে কর্মসূচী রয়েছে অমিত শাহের।