বঙ্গে লোকসভা ভোটের প্রচারে ঝড় তুলতে বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতায় পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবারই করছেন তিনটি সভা। এদিন সকালে সোজা চলে যান বর্ধমানে। বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের দক্ষিণ বর্ধমান সাই কমপ্লেক্স মাঠে করলেন সভা। বর্ধমান-দুর্গাপুরে এবারের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তাঁর সমর্থনে সভা করার পাশাপাশি অসীম সরকারের হয়েও প্রচার করছেন তিনি। তারপর তাঁর যাওয়ার কথা নদিয়া ও বীরভূমে।
শুক্রবার বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে নিজের ভাষণের শুরুটা অন্যরকম করলেন নরেন্দ্র মোদী। কোনও রাজনৈতিক কথা না বলে নিজের স্বপ্নের কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। জানালেন, তিনি নিজের জন্য বাঁচতে চান না, দেশবাসীর সেবা করতেই জন্মেছেন।
দু’দফার ভোট মিটে যাওয়ার পর তৃতীয় দফা ভোটের আগে বাংলায় ফের প্রচারে এসেছেন মোদী। কিন্তু শুক্রবার বর্ধমানে তাঁর প্রথম জনসভা থেকে শুরুতে কোনও রাজনৈতিক বার্তাই দিলেন না তিনি। বরং দেশের জনতাকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে বললেন, ”ঈশ্বররূপী জনতার আশীর্বাদ আমার মতো গোটা বিশ্বে কেউ পায়নি। বছর বছর এই আশীর্বাদ বেড়ে চলুক।” মোদী বলেন, দু’বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলে ইতিহাসের পাতায় তো নাম উঠেই যায়। কিন্তু তিনি এর পরেও আরাম করেন না। কেন, সেটাও নিজেই জানান।
“এই তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস দিনরাত মোদীকে আক্রমণ করে চলেছে। বলছে মোদীকে গুলি করে দাও। কিন্তু, ভয় পাই না। যাঁরা ভয় পায় তাঁদের দলে থাকি না।”
“আমি চাই ধান চাষে ফের বর্ধমানের জয়জয়কার হোক। আমি চাই শিল্পনগরী হিসাবে দুর্গাপুরের পরিচয় দেশের পাশাপাশি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক।”
জনসভায় আসা সকলের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ”আমি ফুর্তি করার জন্য জন্মায়নি। আমি নিজের জন্য বাঁচতে চাই না, আপনাদের সেবা করার সংকল্প নিয়ে ভারত মাতার পায়ে মাথা পেতে ১৪০ কোটি দেশবাসীর সেবা করতে চাই।”
দেশ তথা বাংলার মা-বোনেদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ”আমার কাছে কী আছে? আগে-পিছে কেউ নেই। আমার জন্য জনতাই পরিবার। দেশের সব পরিবারের সন্তান আমার সন্তান। নিজের কেউ নেই, যাঁদের জন্য কিছু করব।” এক্ষেত্রে নিজের স্বপ্ন কী, সেটাও খোলসা করে দেন নরেন্দ্র মোদী।
দেশের প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যে এদিন উঠে এসেছে গরিবি প্রসঙ্গ। মোদী দাবি করেছেন, তিনি ছোট থেকেই গরিবি দেখে বড় হয়েছেন। তাই তাঁদের কষ্টটা জানেন। তিনি বলেন, ”আমার একটা স্বপ্ন, দেশবাসীর সকলের স্বপ্ন পূরণ করা। আমি শুধু দেশের মানুষের হয়ে কাজ করতে চাই, তাঁদের সন্তানদের জন্য কাজ করতে চাই।” এই সভা থেকে দেশের গরিবি সমস্যা পুরোপুরি মেটানোর বার্তা দিয়েছেন মোদী।
আগামী ৫ বছর আরও বেশি কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোদী বলেছেন, গত ১০ বছরে যে কাজ হয়েছে তাতে গরিবি সমস্যা অনেকটা মিটেছে। অন্তত ২৫ কোটি মানুষকে গরিবি সমস্যা থেকে বের করতে তিনি আরও পরিশ্রম করবেন। প্রত্যেক ভারতবাসীর আয় বৃদ্ধি হবে, এমন আশ্বাসও বর্ধমানের সভা থেকে দিয়েছেন মোদী। বলেন, বিজেপির হাত ধরে দেশের বিকাশ হলে সকলের আয় বাড়বে। তাতে বাংলারও উপকার হবে।