গোবরডাঙা হাসপাতাল চালুর দাবীতে ফের আন্দোলন শুরু করল স্থানীয় বাসিন্দারা

0
545

গোবরডাঙা হাসপাতাল চালুর দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নামলেন স্থানীয় বাসিন্দারাঃ সৌভিক দাস গোবরডাঙাঃগত বছর মে মাসে ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক সভাতে পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত এলাকার একমাত্র হাসপাতাল চালু করার দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ওখানে হাসপাতাল হবে না। এরপরেই দলমত নির্বিশেষে এলাকার মানুষ হাসপাতাল চালুর দাবিতে মিছিল, বন‌্ধ, সভা করেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এমনকী দলীয় নির্দেশে পুরপ্রধানকে পদত্যাগও করতে হয়েছিল। পরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে তিনি পদ ফিরে পান।এত কিছুর পরেও হাসপাতালটি আজও চালু না হওয়ায় পুরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এলাকায় হাসপাতালটি অত্যন্ত প্রয়োজন সে জন্যই ফের আন্দোলন শুরু করা হল বলে হাসপাতাল বাঁচাও কমিটি সূত্রের খবর। কমিটির আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান বাপি ভট্টাচার্য বলেন, পুরপ্রধানের কাছে আমরা হাসপাতালের ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্য পরিষেবা ও স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণার দাবি করেছি।এই আন্দোলনে যাতে পুরপ্রধানও সামিল হন তার অনুরোধও করা হয়েছে হাসপাতাল বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকে। পুরপ্রধানের কাছে কমিটির সদস্যেরা জানতে চান, এক বছরে তিনি হাসপাতাল খোলার বিষয়ে কী পদক্ষেপ করেছেন, বা বিকল্প কোনও পরিকল্পনা করেছেন কিনা?পুরপ্রধান বলেন, ‘‘হাসপাতালটির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী সব জানেন। রাজ্যে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।’’ হাসপাতাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন গোরবডাঙার পৌর উন্নয়ন পরিষদ। পরিষদের সদস্যদের কথায় অক্টোবর থেকে সপ্তাহের রবিবার বাদে প্রতিদিন এলাকার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের নাম ঠিকানা দিয়ে চিঠি লিখছেন। সেখানে অনুরোধ করা হচ্ছে, হাসপাতালটি সম্পূর্ণ রূপে চালু করতে। প্রায় তিন হাজার চিঠি ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে।গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটির অর্ন্তবিভাগটি ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আগে এখানে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা ছিল। ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হতো। গোবরডাঙা পুরসভা ও সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ ওই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। বন্ধ হাসপাতাল ভবনে পড়ে থাকা যন্ত্রপাতিগুলি সব নষ্ট হতে বসেছে৷ মানুষের দাবি। তাই হাসপাতালটি কেন চালু হবে না। এখন সপ্তাহের তিন চারদিন বহির্বিভাগে কয়েক ঘণ্টার জন্য একমাত্র চিকিৎসক রোগী দেখেন। কমিটির দাবি, রাতে গোবরডাঙার মানুষের নূন্যতম চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে বিনা চিকিৎসায় দূরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই অনেক রোগী মারা গিয়েছেন।এখন প্রশ্ন উঠেছে, এত কিছুর পরেও সম্প্রতি বারাসতে মুখ্যমন্ত্রীর যে প্রশাসনিক সভা হল, তাতে পুরপ্রতিনিধিরা কেউই হাসপাতালের বিষয় নিয়ে কোনও আলোচনা করেননি। স্থানীয় মানুষেরা জানান,‘আমরা আশা করেছিলাম, মুখ্যমন্ত্রী এ বার সভা থেকে হাসপাতাল নিয়ে কোনও ইতিবাচক বার্তা দেবেন।’’গোবরডাঙা হাসপাতাল জেলা পরিষদ পরিচালিত। কিন্তু পরিষদের পরিকাঠামো নেই হাসপাতাল চালানোর। জেলা পরিষদের তরফে হাসপাতালটির দায়িত্ব যাতে স্বাস্থ্য দফতর নেয় তার জন্য অনুরোধ করে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার স্থানীয় মানুষের আন্দোলনের জেরে স্বাস্থ দপ্তরের ঘুম ভাঙে কিনা!

Previous articleজল দান
Next articleশ্রী খোলের তালে রাম নবমী পালন খাদ্যমন্ত্রীর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here