বলরামপুর , পুরুলিয়া : বৃষ্টি হলেও গরম খুব একটা কমেনি দক্ষিণবঙ্গে। এর মধ্যে লোডশেডিং লেগেই রয়েছে৷ রাজ্যজুড়ে জেলায় জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল সাধারণ মানুষজন। লোডশেডিংয়ের জ্বালায় অস্থির।
সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। চিকিৎসার কাজ করতে গিয়ে ডাক্তার থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বেশ কিছু হাসপাতালে বিকল্প হিসেবে জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, তেল খরচ ও অপারেটর না থাকায় চালানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
জানা যাচ্ছে,পুরুলিয়ার বলরামপুরের বাঁশগড় হাসপাতালেরও বেহাল অবস্থা। লোডশেডিংয়ের কারণে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। এমনকী সেখানে ডাক্তাররা লোডশেডিংয়ের মধ্যে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বেলে প্রসব করাচ্ছেন বলেও খবর শোনা গেছে।
ইতি মধ্যেই বলরামপুর ব্লক হাসপাতালের শোচনীয় অবস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন সেখানকার স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক বাণেশ্বর মাহাত। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালে প্রায়শই বন্ধ থাকছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। ঠিকাদার সংস্থাকে টাকা না দেওয়ায় জেনারেটরও কাজ করে না। সন্ধ্যা হলেই হাসপাতালে ডুবছে তিমিরে। এর জেরে চিকিৎসা করতে যেমন সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা। তেমনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদেরও। অভিযোগ, মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে চিকিৎসা করতে হচ্ছে প্রসূতিদের। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের প্রসবও হচ্ছে এ ভাবে। তা নিয়েই সরব হয়েছেন বলরামপুরের বিধায়ক। এই অভিযোগ সামনে আসতেই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বাঁশগড় হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে এখন অভিযোগ তুঙ্গে। রবিবার থেকেই বিক্ষোভ চলছে হাসপাতাল চত্বরে। রোগীর পরিজনরা দাবি করছেন, গর্ভবতী মহিলার প্রসব হচ্ছে মোবাইলের আলোয়। হাসপাতালে জেনারেটরের কোনও ব্যবস্থাই নেই। শৌচালও ব্যবহারের অযোগ্য। কয়েকটি ওয়ার্ডে এবং হাসপাতাল চত্বরে পর্যাপ্ত আলো নেই। তাছাড়া হাসপাতাল থেকে রোগী রেফারের সংখ্যা বেশি। প্রায় প্রতিদিনই ঘণ্টা খানেক ধরে লোডশেডিং চলছে। কারেন্ট বন্ধ হওয়ায় জরুরি বিভাগে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের।
গত ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় লোডশেডিংয়ের কারণে হাসপাতাল অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। প্রায় চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ আসেনি। ওটি রুমে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে করেন। এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে মুখ কুলুপ এঁটেছে।
এ বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ কুনাল কান্তি দে বলেছেন, “বিষয়টি আমাদের গোচরে রয়েছে। জেনারেটর নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিচ্ছে তা ঠিকা প্রাপ্ত সংস্থার টাকা বকেয়া থাকার কারণে হচ্ছিল। এবার তাদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে রোগীদের কোনো রকম অসুবিধায় না পড়তে হয়।” হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবস্থা যাতে আরও উন্নত হয় তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।