দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে রাজভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
বাংলায় বিধানসভা ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে মমতার। তবে পরিস্থিতি এখন এমনই যে উদযাপনের অবসর নেই। এদিন শপথ নেওয়ার পর মমতাও বলেন সে কথা। তিনি জানান, রাজভবনে এই শপথ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই তিনি নবান্নে যাবেন। তার পর সেখানে বেলা সাড়ে ১২ নাগাদ কোভিড মোকাবিলা নিয়ে প্রশাসনের অফিসারদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করবেন। বেশ কিছু ঘোষণাও করা হবে।
https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/videos/367793294630515/
এদিনের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। কোভিডের কারণে উপস্থিতের সংখ্যাও সীমার মধ্যেই রাখা হয়েছিল।
এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিশিষ্ট চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ, ভারত সেবাশ্রম সংঘের সাধারণ সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ এবং সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফেলিক্স রাজও রয়েছেন।
আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের হয়ে এবার কার্যকরী ভূমিকা নেওয়া ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদায়ী বিধানসভার বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা, সাংসদ হিসেবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যকেও। আরও চার তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এই শপথ গ্রহণে আমন্ত্রিত হয়েছেন।
এঁরা হলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, শতাব্দী রায় এবং দেব। সংক্ষিপ্ত এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য বিদায়ী মন্ত্রিসভার মাত্র চার সদস্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস আমন্ত্রণ পেয়েছেন। অবশ্যই থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, রাজ্য পুলিশের ডিজি পি নীরজনয়ন, কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র সহ সাত আধিকারিক।
এরই পাশাপাশি এদিন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করার অঙ্গীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে হিংসার ঘটনা ঘটছে। আমি সব রাজনৈতিক দলের কাছে আহ্বাণ করব শান্তির পরিবেশ বজায় রাখুন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ভোট চলছিল। ফলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আমার হাতে ছিল না। আমি পুরোটা দেখতে পারিনি। আজই দরকার মতো প্রশাসনিক পরিবর্তন করব। কেউ অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করলে রেহাই পাবে না।
মমতার শপথ পাঠের পর রাজ্যপাল বলেন, তৃতীয় বারের জন্য সরকারে ফিরে আসা কম কথা নয়। আমি এজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তবে রাজ্যে যে হিংসার ঘটনা ঘটছে তা দ্রুত দমন করা উচিত। আশা করব মুখ্যমন্ত্রী তা করবেন। সেই সঙ্গে আক্রান্ত শিশু ও মহিলাদের কাছে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেবেন।
সূত্রের খবর , আজই আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কোভিড টিকা ও চিকিৎসা নিয়ে বড় কোনও সিদ্ধান্তও তিনি ঘোষণা করতে পারেন। যদিও কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও মমতা নিয়মিত কোভিড পরিস্থিতি নজরদারি করেছেন। ভোট পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও তিনি বৈঠক করতে পারেন।
তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল থেকে নবান্নকে নতুন করে সাজানো শুরু হয়। ঝাড়পোঁছের পাশাপাশি বহু জায়গায় নতুন করে রংও করা হয়। কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশের বাজনদাররা মহড়াপর্ব চালান এদিন বিকেল থেকেই।