দেশের সময় ওয়েবডেস্ক নাম না করে এক্স হ্যান্ডেলে বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ। তবে দলেরই কোনও নেতা যে তাঁর নিশানায়, তা স্পষ্ট এই পোস্টে। কুণাল লিখেছেন, ‘নেতা অযোগ্য, গ্রুপবাজ, স্বার্থপর। সারাবছর ছ্যাঁচড়ামি করবে আর ভোটের মুখে দিদি, অভিষেক, দলের প্রতি কর্মীদের আবেগের উপর ভর করে জিতে যাবে, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করবে, সেটা বারবার হতে পারে না।’ নিঃসন্দেহে লোকসভা ভোটের আবহে শাসকদলের মুখপাত্রের এমন মন্তব্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এমনও খবর, এক্স হ্যান্ডেলে নিজের ‘বায়ো’তেও বদল এনেছেন কুণাল। সেখানে কোনও রাজনৈতিক পরিচয়ের উল্লেখ নেই। নিজেকে শুধুই ‘জার্নালিস্ট’ ও ‘সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট’ বলে লিখেছেন তিনি। তাঁরই ঘনিষ্ঠদের একাংশ বলছেন, সাংবাদিক ও সমাজকর্মীর বাইরেও কুণালের প্রোফাইলে উল্লেখ থাকত তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র পরিচিতি। শুক্রবার সকাল থেকে যা ‘উধাও’।
নেতা অযোগ্য গ্রুপবাজ স্বার্থপর। সারাবছর ছ্যাঁচড়ামি করবে আর ভোটের মুখে দিদি, অভিষেক, @AITCofficial দলের প্রতি কর্মীদের আবেগের উপর ভর করে জিতে যাবে, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করবে, সেটা বারবার হতে পারে না।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) February 29, 2024
তৃণমূলের অন্দরের খবর, আগামী ১০ মার্চ তৃণমূলের ব্রিগেডের প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর কলকাতার নেতাদের একটি বৈঠক ডেকেছিলেন সুদীপ। সেখানে ডাক পাননি কুণাল। তাতেই তিনি ক্ষুব্ধ হন। অনেকের মতে, সেই কারণেই তিনি বৃহস্পতিবার রাতের পোস্টটি করে থাকতে পারেন। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা কেউই স্বীকার করছেন না।
অনেকের মতে, নাম না-করে সুদীপ সম্পর্কে যে পোস্ট তিনি বৃহস্পতিবার রাতে করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতে দলের শীর্ষমহল থেকে কিছু বলা হয়ে থাকতে পারে। তার পরেই ‘অভিমানাহত’ কুণাল বায়ো পরিবর্তন করেছেন। যেখানে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, অতঃপর তিনি শুধুই সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী। রাজনৈতিক কর্মী বা দলের মুখপাত্র নন। মুখপাত্রের সঙ্গে কুণাল তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের পদেও রয়েছেন। এখন দেখার, সেই পদও তিনি ছেড়ে দেন কি না। তা হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যাবে।
এ নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় কুণাল ঘোষের সঙ্গে। কিন্তু সকাল থেকেই কুণাল ঘোষের ফোনের সুইচ বন্ধ। প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার শাহজাহানের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন হলেও সেখানে দেখা যায়নি কুণালকে। আবার রাত ৯টা ৯-এ এক্স হ্যান্ডেলে এই পোস্ট। সব মিলিয়ে জোর চর্চা শুরু।
যদিও এ নিয়ে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “একজন ব্যক্তি যেভাবে নিজের ব্যক্তিগত পরিচিতি দিতে চান, সেই পরিসরটাকে সকলেরই সম্মান করা উচিত। আমি সেই সম্মান জানিয়েই বলছি এ ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারব না।”
তবে রাজনীতিতে কোনও কিছুই চূড়ান্ত নয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেও সন্দেশখালি-সহ কুণাল বিবিধ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র হিসাবে।
শুক্রবার সকালে সেটাই উধাও হয়ে গিয়েছে তাঁর এক্স বায়ো থেকে। বেলা গড়ালে পরিস্থিতি কী হবে, তা তৃণমূলের অন্দরের লোকজনও খুব একটা বলতে পারছেন না বা বলতে চাইছেন না। মুখ খুলছেন না কুণালও।