দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার সকালে জি-২০ সামিটে আন্তর্জাতিক অতিথিদের সামনে বক্তৃতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তারপর বিকেলে আলিপুর থেকে জোড়া উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারমধ্যে একটি গাড়ি পার্কিংয়ের বহুতল, অন্যটি একটি অ্যাপ।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই অ্যাপটির নাম ভেহিকেল লোকেশন ট্র্যাকিং অ্যাপ। কী কাজ করবে অ্যাপটি? মূলত পরিবহণ দফতর ও পুলিশের দায়িত্ব হবে এই অ্যাপটির মাধ্যমে অপরাধ রোখার। মমতা এদিন বলেন, ‘কিছু দুষ্টু লোক তো সব জায়গায় আছে। এই অ্যাপটি মা-বোনেদের নিরাপদ রাখার জন্য।’ মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, গাড়িতেই থাকবে প্যানিক বোতাম। তা টিপলেই পুলিশ এবং পরিবহণ দফতর সঙ্কেত পাবে কিছু হয়েছে। সেই মতো গাড়িটিকে চিহ্নিত করা যাবে। রাতবিরেতে মাঝা রাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়ে বিপাকে পড়লেও এই অ্যাপের মাধ্যমে সঙ্কেত পাঠালে সাহায্য করবে পুলিশ ও পরিবহণ দফতর। সেইসঙ্গে নজর রাখবে গাড়ির গতির উপরেও।
পরিবহণ দফতর (West Bengal Transport Department) এবং কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই সিস্টেম সহজেই একটি গাড়ির লোকেশন ট্র্যাক করতে পারবে। কোন গাড়ি কোন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে, কতদূর পৌঁছল, সবটা নজরদারি রাখা হবে। কেউ কোনও দুষ্টুমি করলে বা কোনও গাড়ি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলে প্যানিক বাটন (Panic Button) পুশ করলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেবে পুলিশ।”
যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে শহরের প্রত্যেক গাড়িতে বসতে চলেছে ভেহিক্যাল ট্র্যাকার। কোথাও কোনও বিপদ ঘটলে, গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রী পুলিশে খবর দিলেই, সঙ্গে সঙ্গে সেই গাড়ির লোকেশন ধরে ফেলা সহজ হবে। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকেই কলকাতা শহরে চলাচলকারী সমস্ত কমার্শিয়াল গাড়িতেই এই বিশেষ ট্র্যাকিং ডিভাইস লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে এই ডিভাইস লাগানোর কাজ সম্পন্ন করতে হবে শহরের গাড়িগুলিকে।
এই ট্র্যাকিং ডিভাইস লাগানো থাকবে চালকের কেবিনে। পরিবহণ দফতর এবং লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকে গাড়িগুলিকে এই ডিভাইসের সাহায্য ট্র্যাকিং করা যাবে। ফলে সহজেই স্থানীয় থানা গাড়ির অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবে। কলকাতা শহরের সমস্ত বাস ও ট্যাক্সি কিংবা অ্যাপ ক্যাবে থাকছে প্যানিক বাটন।
বিপদের আশঙ্কা করলেই গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রীরা ওই প্যানিক বাটন প্রেস করতে পারবেন। প্যানিক অ্যালার্ম পাওয়া মাত্রই ওই গাড়ি কিংবা বাসে থাকা যন্ত্রের মাধ্যমে লোকেশন ট্র্যাক করে ফেলতে পারবে পুলিশ। বাসের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী প্রতি দু’মিটার অন্তর থাকবে প্যানিক বাটন। কোনও যাত্রী বিপদ বুঝে প্যানিক বাটন পুশ করলে ৩০ মিনিটের মধ্যে স্থানীয় থানা গাড়ির অবস্থান জেনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ছ’তলা মাল্টি লেভেল কার পার্কিং জোনের উদ্বোধন করেন। মমতা জানিয়েছেন, আপাতত এখানে বড়, ছোট মিলিয়ে ৪০০ গাড়ি পার্ক করা যাবে। এটি আরও চারতলা বাড়বে। এই কার পার্কিং জোনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সম্পন্ন।’ আলিপুর চিড়িয়াখানা-সহ আশপাশের এলাকায় যাঁরা গাড়ি নিয়ে যাবেন তাঁদের আর রাস্তায় গাড়ি পার্ক করতে হবে না। এবার থেকে সম্পন্নতেই রাখা যাবে গাড়ি।
সেইসঙ্গে নির্মীয়মাণ ‘ধনধান্য’ স্টেডিয়াম উদ্বোধনের সময়সীমাও এদিন নির্ধারিত করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। হিডকো চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনের উদ্দেশে মমতা বলেন, কত দিন লাগবে? তিনি জানান, তিন মাস। তারপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পয়লা বৈশাখের আগেই যেন তা করা যায়। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রাপ্তির বছর শুরু হল। এবার তা চলবে।’