Kolkata Nabanna Abhijan চার ছাত্র নেতার গ্রেফতারের খবর দিল পুলিশ,নবান্নে পৌঁছলেন মমতা: দেখুন ভিডিও

0
198
  • দেশের সময়, কলকাতা: হাওড়া স্টেশনে স্বেচ্ছাসেবকদের খাবার দিচ্ছিলেন। তারপর থেকেই আর খোঁজ মিলছিল না চার ছাত্রের। বিষয়টি জানিয়ে মঙ্গলবার সকালে
    হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী। তারপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। দেখুন ভিডিও

সমাজমাধ্যমে রাজ্য পুলিশের হ্যান্ডলে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানে ওই চার জন অশান্তি পাকানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। সেই কারণেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নবান্ন অভিযানে ‘লাশ ফেলে দেওয়ার ছক’-এ জড়িত থাকার কারণে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ছাত্রসমাজের নবান্ন অভিযান ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রশাসনিক মহলে জোরদার তৎপরতা। তারমধ্যে এদিন সকালে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স-হ্যান্ডেলে অভিযোগ করেন, হাওড়া স্টেশনে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন চার ছাত্র। তাঁদের নাম শুভজিৎ ঘোষ, পুলকেশ পণ্ডিত, গৌতম সেনাপতি ও প্রীতম সরকার। রাতে হাওড়া স্টেশনে স্বেচ্ছাসেবকদের খাবার বিলি করছিলেন তাঁরা। মাঝরাতে আচমকাই তাঁরা নিখোঁজ হয়ে যান। 

মঙ্গলবার সকালে এক্স-হ্যান্ডেলে কড়া সমালোচনা করে শুভেন্দু অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ এই ছাত্রদের কিডন্যাপ করেছে। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ মামলা দায়েরের অনুমতি দেন। তার আগে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানাতেও অভিযোগ দায়ের করে বিজেপি।

বিরোধী দলনেতা হাইকোর্টে যাওয়ার কিছু পরেই পুলিশের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া হয়, নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কাতেই ওই চার ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের পরিবারকেও এই গ্রেফতারির খবর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

মধ্যরাতের পর হাওড়া স্টেশন থেকে ‘নিখোঁজ’ ছাত্র। আদালতের দ্বারস্থ পরিবার।  নিখোঁজ চার ছাত্র হলেন শুভজিৎ ঘোষ, পুলকেশ পণ্ডিত ,গৌতম সেনাপতি এবং প্রীতম সরকার। পুলিশ এই চার ছাত্রকে আটক করেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে এক্স স্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।  মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি ভরদ্বাজ। বুধবার এই মামলার শুনানি।

এদিকে মোট ৬ হাজার পুলিশকর্মী শহরের রাস্তায় মোতায়েন থাকার কথা মঙ্গলবার। ২৬ জন ডেপুটি কমিশনার আধিকারিকও থাকবেন পথে।  সকাল ৮টা থেকেই প্রস্তুতি তুঙ্গে। নবান্নের চারপাশে কার্যত মাছি গলতে না পারা নিরাপত্তার বলয়। সাদা পোশাকেও মোতায়েন বহু পুলিশ।

এর মধ্যে সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ নবান্নে এসে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিরাপত্তার মাঝখান দিয়ে নবান্নে ঢুকলেন তিনি।

এদিন অবশ্য নবান্ন অভিযান ঘিরে এই সাজোসাজো রবের মাঝে বাধ সেধেছে নাগাড়ে বৃষ্টি। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে নবান্ন অভিযানে ঠিক কী হবে আজ!
রাজ্য পুলিশ অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছে, যে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে তা বেআইনি। কারণ, একে তো কোনও নির্দিষ্ট সংগঠনের তরফে এই অভিযানের ডাক দেওয়া হয়নি। নিয়ম মেনে পুলিশের কাছে কোনও আবেদন জানানো হয়নি। তাই পুলিশ কোনও অনুমতি দিচ্ছে না।

রাজ্য পুলিশ এ কথা জানিয়ে দেওয়ার পর দুটি ইমেল বার্তা পাঠায় তথাকথিত ছাত্র সমাজের যৌথ মঞ্চ। পরে সন্ধেয় ফের সাংবাদিক বৈঠক করে এডিজি সাউথ বেঙ্গল সুপ্রতিম সরকার বলেন, “আমাদের কাছে ছাত্র সমাজের থেকে দুটো ই-মেল এসেছে। কোনও অনুমতি চেয়ে তারা ইমেল করেনি। শুধু মাত্র তারা এই তথ্য জানিয়েছে যে তারা নবান্ন অভিযান করতে চায়”। এডিজি সাউথ বেঙ্গল বলেন, “আগেও বলেছি যে মঙ্গলবার ইউজিসি-নেট পরীক্ষা রয়েছে। তাই আমরা অনুমতি দিচ্ছি না। আগামিকালের অভিযান তাই বেআইনি ও অবৈধ।”

পুলিশের দাবি,কলকাতাহাইকোর্টের নিয়ম মেনে কর্মসূচি সংক্রান্ত যে সমস্ত জরুরি তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয়, যেমন তাঁরা কোন পথে এগোবেন, কী কর্মসূচি , কোথায় অবস্থান করবেন, সেই সব তথ্যও জানানো হয়নি। আর সে জন্যই ওই অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। দ্বিতীয় ইমেলে সংগ্রামী যৌথমঞ্চের তরফে অনুমতি চাওয়া হলেও তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। 

তবে ছাত্রসমাজের সোমবার প্রেসক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, তাদের কোনও রাজনৈতিক মদত দেওয়া হচ্ছে না। এটা ভ্রান্ত প্রচার। তাঁরা এও বলেন, নবান্ন অভিযানে কোনও রাজনৈতিক নেতা যোগ দিন তা তাঁরা চান না। সাধারণ ছাত্র সমাজের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান তাঁরা আশা করছেন।

তবে অনুমতি-সংক্রান্ত জটিলতা থাকলও প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখছে না পুলিশ। লাঠি থেকে শুরু করে হেলমেট, বডি প্রটেক্টিভ গিয়ার রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সকলকে। সাদা পোশাকেও বহু পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে নবান্নের ভিতরে ও বাইরে। হাওড়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের জন্য চার জন আইজি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার ছাড়াও ডিআইজি এবং এসপি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকরাও থাকবেন। 

ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, কোনা এক্সপ্রেস (নিবরা থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতু), আন্দুল রোডের একাংশ, জিটি রোড (মল্লিক ফটক থেকে বেতাইতলা), হাওড়া স্টেশন থেকে গ্র্যান্ড ফোরসর রোড এইচআইটি ব্রিজ থেকে আরবি সেতু সহ একাধিক রাস্তায় গাড়ি চলাচল করবে না মঙ্গলবার। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, যে সমস্ত গাড়ি কোলাঘাট, ডানকুনি, হাওড়া, হাওড়া স্টেশন থেকে কলকাতার দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে আসতে চায় তাদের নিবেদিতা সেতু ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মিছিল আটকাতে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।

এখন এই পরিস্থিতিতে কী হয় নবান্ন অভিযানে, কতটা জমায়েত হয়, পুলিশি প্রতিরোধই বা কীরকম হয়, সারাদিন বৃষ্টির বিপর্যয় থামে কিনা, সেদিকেই চোখ রাজ্যবাসীর।

Previous articleCalcutta Journalists Club রবীন্দ্র সদনে ক্যালকাটা জার্নালিস্টস ক্লাবের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান
Next articleNabanna Rally for R G Kar Protest Live: নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমার ! অশান্তির ভরকেন্দ্র এ বার হেস্টিংস, বিক্ষোভকারীদের কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল পুলিশ,তুমুল অশান্তি: দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here