দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার অনেক আগে থেকেই বেশ কিছু জায়গায় দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছিল শাসক দল তৃণমূল।। এবার পালা ছোট লালবাড়ি দখলের লক্ষ্যে লড়াইয়ের। শুক্রবার সকালে প্রথমে বামেরা প্রার্থী ঘোষণা করে। বিজেপি এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি। কিন্তু যাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা, সেই তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা অবশেষে ঘোষণা করলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শুক্রবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোররাও। দীর্ঘ বৈঠকের পর অবশ্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় সূত্রে খবর, প্রার্থী তালিকা ঘোষণায় এক ব্যক্তি, এক পদ নীতিতেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে কিছুক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রমও হতে পারে বলে মনে করছিলেন অনেকেই।
তবে পুরো বিষয়টিই ছিল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন সাপেক্ষ। দেখা গেল, মমতার অনুমোদন পায়নি সেই সিদ্ধান্ত। মমতা আবার বেছে নিয়েছেন তাঁর পুরোন দিনের লড়াইয়ের সঙ্গীদেরই। বস্তুত, প্রার্থিতালিকায় শেষমুহূর্তের রদবদলের কারণেই ছাপানো প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করতে খানিক বিলম্ব হয়ে যায় তৃণমূলের। পূর্ণাঙ্গ প্রার্থিতালিকা হাতে পেতে সংবাদমাধ্যমকে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের বাকি সব শীর্ষ নেতৃত্বের সর্বসম্মতিক্রমে ১৪৪ কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও সম্মত হয়েছেন। প্রার্থী তালিকায় মহিলা, যুবদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।” তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”তৃণমূলের ১২৬ পুরনো প্রার্থীর মধ্যে ৮৭ জনকে আবার প্রার্থী করা হল। পুরনো ৬ জনের ওয়ার্ড পরিবর্তন করা হয়েছে। পুরনোদের মধ্যে ৩৯ জনকে প্রার্থী করা হয়নি। তাঁরা সংগঠনের কাজ করবে।” ৪৫ শতাংশ কেন্দ্রে মহিলা প্রার্থীরা জায়গা পেয়েছেন।”
তবে, যাঁদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা, সেই ফিরহাদ হাকিমকে প্রার্থী করা হচ্ছে, প্রার্থী হচ্ছেন অতীন ঘোষও। দেবাশিস কুমার এবং দেবব্রত মজুমদার বিধায়ক হয়ে ঠাঁই পেয়েছেন। প্রার্থী হচ্ছেন সাংসদ মালা রায়ও।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ”তৃণমূলের ১২৬ পুরনো প্রার্থীর মধ্যে ৮৭ জনকে আবার প্রার্থী করা হল। পুরনো ৬ জনের ওয়ার্ড পরিবর্তন করা হয়েছে। পুরনোদের মধ্যে ৩৯ জনকে প্রার্থী করা হয়নি। তাঁরা সংগঠনের কাজ করবে।” ৪৫ শতাংশ কেন্দ্রে মহিলা প্রার্থীদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। তবে, পুরভোটে প্রার্থী করা হয় তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।
তবে, সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে ফিরহাদ হাকিমের পুনরায় জায়গা পাওয়া নিয়ে। কারণ এবারের কলকাতা পুরভোটে রাজ্যের মন্ত্রী এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম টিকিট নাও পেতে পারেন, এমন জল্পনা বিগত কয়েকদিন ধরেই চলছিল। বরং তাঁর ওয়ার্ডে তাঁর বদলে টিকিট পেতে পারেন ফিরহাদ-কন্যা প্রিয়দর্শিনী হাকিম, এমনটাই মনে করছিল দলের একটা বড় অংশই। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হল, প্রার্থী হলেন ফিরহাদ।
তবে, রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, প্রার্থী করা হলেও ফিরহাদই ফের মেয়র হবেন, এমনটা ধরে নেওয়া সরলীকরণ হবে। তাই পুরভোটে প্রার্থী হলেও ফিরহাদ হাকিমই গুরুদায়িত্ব পাবেন, এমনটা নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ প্রসঙ্গে বলেন ‘‘ভোটের পর কাউন্সিলাররা বসে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। এখন থেকেই কিছু বলা হচ্ছে না।’’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা প্রার্থিতালিকা তৈরিতে আইপ্যাক-এর সুপারিশ যেমন বিবেচনা করা হয়েছে, তেমনই প্রার্থীর জনসংযোগ কেমন সে বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে।