দেশের সময় , কলকাতা : আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন মামলার তদন্তে পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষকে তলব করেছিল সিবিআই। সেই তলবে সাড়া দিয়ে সোমবার সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে যান বিধায়ক। সিবিআই দফতরে ঢোকার আগে সংবাদমাধ্যমে নির্মল ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁর কিছু নথি জমা দেওয়ার আছে সেই কারণেই তিনি এসেছেন। পাশাপাশি সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে।
জানা গেছে , এদিন সকাল ১১টার আগেই তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থার দফতরে পৌঁছে গিয়েছেন। ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
আরজি করে গত ৯ অগস্ট চারতলার সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সে দিন হাসপাতালে গিয়েছিলেন নির্মল। বস্তুত, আরজি করের নির্যাতিতা যে এলাকার বাসিন্দা, নির্মল সেখানকার বিধায়ক। ওই দিন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গেই তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
সিবিআই সূত্রের খবর, ওই দিন হাসপাতালে গেছিলেন নির্মল ঘোষ। শুধু তাই নয়, তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে এও জানা গেছে, শুধু হাসপাতালে নয়, নির্মল ঘোষকে পরবর্তী সময়ে হাসপাতালের মর্গ এবং পরে শ্মশান চত্বরেও দেখা যায়। সেই প্রেক্ষিতেই তাঁকে তলব করে বয়ান রেকর্ড করেছে সিবিআই।
সোমবার সিজিওতে পৌঁছে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে নির্মল বলেন, ‘‘এটা তো আমার এলাকার ঘটনা। আমার কিছু জিনিসপত্র জমা দেওয়ার আছে। তাই এসেছি।’’
ঘটনার দিন আরজি কর থেকে সংবাদমাধ্যমকে নির্মল বলেছিলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য মূল অপরাধীকে ধরা। সকলে তার জন্য চেষ্টা করছেন। সিপি-সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা এসেছেন। প্রশাসনিক কর্তারাও আছেন। একটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। কর্তব্যরত চিকিৎসককে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। বিচার সুনিশ্চিত করার জন্য আমাদের তরফ থেকে যা করার করছি। ক্যামেরার সামনেই যা হওয়ার হচ্ছে।’’
আরজি কর হাসপাতালের নির্যাতিতা যে এলাকার বাসিন্দা ছিলেন, সেখানকারই বিধায়ক নির্মল ঘোষ। হাসপাতাল থেকে দেহ উদ্ধারের পর নির্যাতিতার বাবা-মার সঙ্গেই তিনি আরজি করে গিয়েছিলেন বলে খবর। সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে, নির্যাতিতার দেহ সৎকারে নির্মল ঘোষ কিছুটা তৎপরতা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কেন, এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই তাঁকে তলব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কেন তিনি ঘটনার দিন হাসপাতালে গেছিলেন, কে তাঁকে যেতে বলেছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে মরিয়া সিবিআই।
হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল ইতিমধ্যেই ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁরা এখন সিবিআই হেফাজতেই। এরই মধ্যে নির্যাতিতার এলাকার বিধায়ক সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন।
ইতিমধ্যেই আরজি কর কাণ্ডে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিনের প্রফেসর অপূর্ব বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, ময়নাতদন্ত করার ক্ষেত্রে চাপ দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার রাতের মধ্যেই যদি ময়নাতদন্ত না হয় তাহলে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন কোনও এক প্রাক্তন কাউন্সিলর।
নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত করেছিলেন যে চিকিৎসক, সেই অপূর্ব বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ বার নির্মলকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হল।