কলকাতা : ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ৪৮ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। ওইদিন বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবারের বই মেলায় স্টল পেতে আবেদন করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত যায়। যদিও সেখানে আবেদন খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু কেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে স্টল দেওয়া হলো না, তা স্পষ্ট করলেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, বইমেলায় কোনও প্রকাশনা সংস্থা, ম্যাগাজিন বা খবরের কাগজকে স্টল দেওয়া হয়। কোনও সংগঠন এখানে স্টল পাবে না, এটা গিল্ড নিয়ম করেছে। একই সঙ্গে গিল্ড সভাপতি জানান, জট কেটেছে। হাইকোর্টের রায়ের পরই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পত্রিকা বিশ্ব হিন্দু বার্তার তরফে স্টল চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল, তাদের স্টল দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের স্টল পেতে কোথায় আপত্তি, তা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বলেন গিল্ড সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ব্যাখ্যা, ঠিক যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও স্টল বইমেলায় থাকে না, স্টল দেয় জাগো বাংলা। গণশক্তির স্টল থাকলেও সিপিএমের স্টল থাকে না, কিংবা বিজেপির স্টল থাকে না, থাকে ভারতীয় জন বার্তার স্টল। সে ভাবেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদকেও স্টলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, এখন আর বইমেলা শুধু বইয়ের মেলা নয়, আন্তর্জাতিক মিলনক্ষেত্র। বিভিন্ন দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতির আদানপ্রদানের মঞ্চ এই বইমেলা। সাহিত্য থেকে ইতিহাস, ধর্ম থেকে বিজ্ঞান— পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পীঠস্থান আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা চত্বর।
সেই বইমেলায় স্টল দিতে চেয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আবেদন জানালেও, তারা একটি সংগঠন হওয়ায় অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন গিল্ড সভাপতি। ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা কোনও সংগঠনকেই স্টল দিইনি। এটা গিল্ডের রেজ়োলিউশন। যাদের পত্রিকা, ম্যাগাজিন আছে তাদের স্টল দিয়েছি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যে মুখপত্র বিশ্ব হিন্দু বার্তা, তারা আমাদের কাছে স্টল চেয়েছে। শুনে খুশি হবেন, বিশ্ব হিন্দু বার্তাকে আমরা খুবই ভালো জায়গায় স্টল দিয়েছি। ২৪৯ নম্বর স্টল তাদের। আসলে শত পুষ্প বিকশিত হোক, আমরা এই মন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই নিয়ম মেনে সকলকেই সুযোগ দেওয়ায় বিশ্বাসী আমরা।’
শনিবার বইমেলার যাবতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপারে সল্টলেক করুণাময়ী সংলগ্ন বইমেলা প্রাঙ্গণে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানে মেলা আয়োজক সংস্থা, পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলার গিল্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট, দমকল সহ প্রশাসনিক একাধিক শীর্ষ স্তরের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন বৈঠক শেষে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার বলেন, বইমেলার সফল করতে সিসি ক্যামেরা, পুলিশি নজরদারি সহ যাবতীয় নিরাপত্তা বলায়ে মুড়ে ফেলা হবে।
দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থাকে মজবুত রাখা হচ্ছে বইমেলা প্রাঙ্গণকে। মেলা মাঠের স্টলের অলিগলিতে অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে ১২টি মোটরবাইক কর্মী মোতায়েন রাখা হচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে থাকছে ফায়ার রোবট, ইঞ্জিন ও আধুনিক সরঞ্জাম।