Justin Trudeau Resigns  ভারত বিরোধী অবস্থান? চাপের মুখে ইস্তফাই দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ,  ঘোষণার পরেই উত্তরসূরি নির্বাচন ঘিরে শুরু তৎপরতা

0
25

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঘরোয়া চাপের মুখে পড়ে শেষমেশ কানাডার শাসক দল তথা লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন জাস্টিন ট্রুডো ।

ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দল লিবারেল পার্টির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সের দলনেতার পদও ছাড়ছেন তিনি। সোমবার ট্রুডো নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। আর তার পরেই ক্ষমতাসীন দলের অন্দরে ট্রুডোর উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে।তবে পরবর্তী নেতা নির্বাচন করা পর্যন্ত আপাতত প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে যাবেন তিনি।

জাস্টিন ট্রুডো (Justin Trudeau Resigns) যে পদত্যাগ করতে চলেছেন গত কদিনে সেই দেওয়াল লিখন প্রায় স্পষ্ট হয়ে গেছিল। নিজের দলের মধ্যেই ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়া ট্রুডোর বিরুদ্ধে গুচ্ছ অভিযোগ উঠেছে। বড় অভিযোগ হল, দেশের আর্থিক মন্দা ও দলীয় বিদ্রোহের মতো অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি থেকে চোখ ঘোরাতে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে অসন্তোষে ইন্ধন দিচ্ছিলেন। 

গত এক বছরে লিবারেল পার্টির একাধিক হেভিওয়েট সাংসদ, যেমন শন কেসি এবং কেন ম্যাকডোনাল্ড, প্রকাশ্যে ট্রুডোর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। একটি প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, অন্তত ২০ জন লিবারেল সাংসদ ট্রুডোর বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন।

ডিসেম্বরে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগ ট্রুডোর সরকারের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেয়। ফ্রিল্যান্ড তাঁর পদত্যাগপত্রে ট্রুডোর “ব্যয়বহুল রাজনৈতিক স্টান্ট” এবং অর্থনৈতিক নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। পাশাপাশি, ট্রুডোর সঙ্গে তাঁর নীতি সংক্রান্ত মতবিরোধ এবং মার্কিন শুল্কের বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষের কথাও উল্লেখ করেন।

ক্রিস্টিয়ার পদত্যাগের পর থেকেই ট্রুডো অনেকটাই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। মিডিয়া ব্রিফিং বা জনসমক্ষে তাঁকে দেখা যায়নি। বেশিরভাগ সময় তিনি একটি স্কি রিসর্টে কাটিয়েছেন। লিবারেল পার্টির ভেতরে অস্থিরতা আরও বেড়েছে সাম্প্রতিক দুটি উপনির্বাচনে দলের পরাজয়ের পর।

এহেন পরিস্থিতিতে ট্রুডোর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে উদ্যত হয়েছিল নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)-র নেতা জগমিত সিং। ২৭ জানুয়ারি কানাডিয়ান পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হলে এই প্রস্তাব আনা হতে পারে বলে জানা গেছিল।
তবে ট্রুডোর পদত্যাগের পর লিবারেল পার্টির সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল একজন জনপ্রিয় নেতা বেছে নেওয়া। অন্তর্বর্তীকালীন নেতা পার্টির স্থায়ী নেতৃত্বের দৌড়ে থাকতে পারবেন না। ডমিনিক লে ব্লাঁ, মেলানি জলি, ফ্রাঁসোয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেন এবং মার্ক কার্নির নাম সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছে। তবে নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়ার দীর্ঘতা লিবারেলদের জন্য আগামী নির্বাচনে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ট্রুডোর এই সংকটের মধ্যেই বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি এবং তাদের নেতা পিয়ের পোলিভ্রে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে গিয়েছেন। ট্রুডোর কার্বন ট্যাক্স বাতিল এবং কানাডার আবাসন সংকট সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পোলিভ্রে জনসমর্থন কুড়োচ্ছেন।

ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে ট্রুডোর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে করা এক মন্তব্যের পর। তিনি দাবি করেছিলেন, খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত। ভারত এ অভিযোগ “হাস্যকর” বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনার পর ভারত কানাডার ছয় জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করে এবং কানাডার হাইকমিশনারকে ফিরিয়ে নেয়।


ট্রুডোর সমালোচকদের মতে, নিখুঁত প্রমাণ ছাড়াই এই অভিযোগ তোলা একটি ভোটকেন্দ্রিক কৌশল ছিল মাত্র। বিশেষত খলিস্তানি শিখ ভোটারদের মন জয়ের উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে অনেক কানাডিয়ানের মতে, এটি অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য নেওয়া একটি ভুল পদক্ষেপ।

কূটনীতিকদের অনেকে অবশ্য মনে করছেন, ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডার রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও তীব্র হতে পারে। লিবারেল পার্টি এই সংকট কীভাবে সামাল দেয়, সেটাই এখন দেখার।

ঘটনাচক্রে আগামী ২০ জানুয়ারি কানাডার প্রতিবেশী আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আবহে সে দেশে নির্বাচন এগিয়ে আনা হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে।

Previous articleGangasagar Mela 2024 গঙ্গাসাগরে গিয়ে ভারত সেবাশ্রমের প্রশংসা করেও কাকে বিঁধলেন মমতা?
Next articleEarthquake in Tibetতিব্বতে ভূমিকম্প! তীব্রতা ৭.১, মৃত অন্তত ৩২, কম্পন অনুভূত হল কলকাতা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here