দেশের সময় , কলকাতা : সোদপুর থেকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব কত? বরাহনগর রোড ধরে এগোলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার! নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে রবিবার সূর্যাস্তের পর থেকে মানববন্ধনে মিশে গেল সেই দূরত্ব। দেখুন ভিডিও
গৃহবধূ থেকে স্কুল ছাত্র, অশীতিপর বৃদ্ধ থেকে তরুণী, ছুটির সন্ধেয় কে নেই পথে? মানব বন্ধন, প্রতিবা মিছিল, পথ নাটিকা, মশাল মিছিল-সহ একাধিক কর্মসূচিতে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে রাত দখলের কর্মসূচি। রাত যত বাড়ছে প্রতিবাদীদের কণ্ঠে জাস্টিসের আওয়াজও ততই জোরাল হয়েছে।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হলে ধর্ষণ-খুনের শিকার হন ডাক্তারি ছাত্রী। তারপর একমাস অতিক্রান্ত। আগামীকাল সুপ্রিমকোর্টে মামলার শুনানি রয়েছে। তাঁর আগে বিচারের জোরাল দাবিকে শীর্ষ আদালত পর্যন্ত পৌঁছে দিতে রবিবার দিনভর একাধিক কর্মসূচি নিয়ে পথে নেমেছেন জনতা।
এদিনই প্রতিবাদীদের মঞ্চ থেকে চোখের জল মুছতে মুছতে হাতের মুুঠো শক্ত করে নির্যাতিতার মা জানিয়ে দিয়েছেন, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস আর নয়, এবার উই ডিমান্ড জাস্টিস।” সন্তানহারা মায়ের আর্তিতে সাড়া দিয়ে রবিবারের রাতে ভিড় বাড়ছে কলকাতা
থেকে জেলা, সর্বত্র।
টালিগঞ্জ থেকে টালা কিংবা বনগাঁ থেকে আরজিক কর প্রতিবাদীদের মিছিলে অবরুদ্ধ শহর। যানজট তীব্রতর হলেও কারও চোখে মুখে নেই বিরক্তি। বরং সকলের মুখে একটাই আওয়াজ, উই ডিমান্ড জাস্টিস।
প্রতিবাদীদের একটাই বক্তব্য, একমাস হয়ে গেল। কবে সামনে আসবে প্রকৃত ঘটনা? কবে চিহ্নিত করা হবে প্রকৃত অপরাধীদের? পরক্ষণে নিজেরাই জানিয়ে দিয়েছেন, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রতিবাদ চলবে।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে যে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, তা রাতে মিশে গেল রাতদখল কর্মসূচির সঙ্গে। সোদপুর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রাস্তার ধারে হাজার হাজার মানুষ হাতে হাত রেখে মানববন্ধনে শামিল হয়েছিলেন। রাত ১১টা থেকে রাতদখল কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন মহিলারা। মানববন্ধন শেষে অনেকে ফিরে গিয়েছেন, অনেকে আবার সেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
তিলোত্তমার দোষীদের শাস্তির দাবিতে ইস্টবেঙ্গল. মোহনবাগান. মোহামেডান সমর্থকদের মশাল মিছিল এদিন স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি থেকে শুরু হয়ে বিধান সরণি – হাতিবাগান হয়ে শ্যামবাজার পোঁঁছায়।
মানুষের জমায়েতে একাকার হয়ে গিয়েছে শ্যামবাজার পাঁচ মাথা এলাকা। বহু মানুষ শ্যামবাজারে জড়ো হয়েছেন। নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। কেউ জাতীয় পতাকা হাতে স্লোগান দিচ্ছেন, কেউ রাস্তায় প্রদীপ জ্বালছেন।
১৪ অগস্ট, ২০২৪। স্বাধীনতার দিবসের ঠিক আগের দিন কলকাতা শহরে ‘রাতদখল’-এর ডাক দিয়েছিলেন মহিলারা। সেই ডাক কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে সঞ্চারিত হয়েছিল জেলায় জেলায়। বহু মানুষ মধ্যরাতে পথে নেমেছিলেন, নিজের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। বিক্ষোভে মিছিলে এক অভূতপূর্ব প্রতিবাদ দেখেছিল রাতের শহর এবং শহরতলি।
৮ সেপ্টেম্বর, ঠিক ২৫ দিনের মাথায় আবার সেই ডাকে পথে নেমেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। আবার রাতের দখল নিতে চলেছেন মহিলারা। শ্যামবাজার থেকে সিঁথির মোড়, যাদবপুর থেকে সল্টলেক , রাত ১১টার পর থেকে নতুন করে জমায়েত হয়েছে সর্বত্র।
বনগাঁ থেকে সোদপুর হয়ে আরজি কর । বিচারের দাবিতে জেলা থেকে কলকাতা মিশল মানব বন্ধনে ।