কাশ্মীরের পহেলগামের (Pahalgam Terror Attack) বৈসারণ উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহতের সংখ্যা আরও বেশি। মঙ্গলবার দুপুরে সশস্ত্র জঙ্গিরা হোটেলে ঢুকে বেছে বেছে পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই উত্তর ভারতের পর্যটক বলে জানা গেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । বর্তমানে সৌদি আরব সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এক টুইটে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, “পহেলগামে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করছি। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা রইল। আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেই প্রার্থনা করি। ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে।”
https://x.com/narendramodi/status/1914665856799302066?t=UU0rBBo_tT_b8VGaoSSd9g&s=19
প্রধানমন্ত্রী আরও লিখেছেন, “এই জঘন্য ঘটনার পিছনে যারা আছে, তারা কোনওভাবেই ছাড় পাবে না। আমাদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই অটুট এবং আরও দৃঢ় হবে।”
জানাগেছে ,পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় সৌদি আরব সফর কাটছাঁট করে ভারতে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কাশ্মীরের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তিনি ভারতের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, জঙ্গিরা সেনাবাহিনীর পোশাক পরে বৈসারণ উপত্যকায় ঢোকে এবং হঠাৎ করেই পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ওই এলাকা কেবলমাত্র হেঁটে বা ঘোড়ার পিঠে করেই পৌঁছনো যায়। জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার স্থানীয় শাখা ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
হামলার পর দ্রুত সেখানে পৌঁছায় নিরাপত্তা বাহিনী। আহতদের উদ্ধার করে নিচে নামানো হয়, স্থানীয়রা ঘোড়ায় চাপিয়ে অনেককে নামাতে সাহায্য করেন। পরবর্তীতে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আহতদের সরানো হয়।
এই ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্তারা এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন। অমিত শাহ জানিয়েছেন, তিনি শিগগিরই শ্রীনগর যাচ্ছেন এবং সেখানেই একটি জরুরি নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠক করবেন।
এক টুইটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, “পাহালগামে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। যারা এই কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে, তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানিয়েছি এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই জানান, ঘটনাস্থলে চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। একজন মহিলা কাঁদতে কাঁদতে তাঁর স্বামীকে বাঁচানোর জন্য সাহায্য চান। আরেকজন বলেন, এক বন্দুকবাজ তাঁকে বলে, “তুমি মুসলিম নও,” এবং গুলি চালায় তাঁর স্বামীর দিকে।
https://x.com/jpsin1/status/1914668719181082948?t=dDbI0JT1wIE7qU9Rpc8TyQ&s=19
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, জঙ্গিদের খুঁজে বের করার কাজ শুরু হয়েছে। গোটা অঞ্চল জুড়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।
কাশ্মীরের পর্যটনশিল্প যখন ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, তখন এই ধরণের হামলা নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।