দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লোকসভা ভোটের আগে বৃহস্পতিবার সংসদে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এদিনের বাজেট বক্তৃতায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর ক্ষেত্রে কোনও নতুন পদক্ষেপ করলেন না তিনি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর যা ছিল সেটাই অব্যাহত থাকবে। তবে হ্যাঁ, সরকার কর ব্যবস্থা, তার আদায় ও রিফান্ডের ব্যবস্থা আরও সহজ ও সুগম করবে।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এদিন তাঁর বাজেট ঘোষণায় বলেন, প্রত্যক্ষ করের আদায় তিন গুণ বেড়েছে। তার কারণ আরও বেশি সংখ্যক মানুষ কর দিচ্ছেন। তাদের করের আওতায় আনা গিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার ইতিমধ্যে ব্যক্তিগত আয়করে যে ছাড়ের ব্যবস্থা করেছে তাতে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যক্তিগত আয়ের উপর কোনও কর দিতে হবে না। তা ছাড়া পেশাদারদের ক্ষেত্রেও সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কর্পোরেট ট্যাক্স ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ শতাংশ করা হয়েছে। 

অর্থমন্ত্রীর কথায়, “এই অন্তর্বতী বাজেটে তাই নতুন করে প্রত্যক্ষ করে কোনও ছাড় ঘোষণা করা হল না। তবে আগামী দিনে সরকার কর ব্যবস্থার আরও সংস্কার করতে ব্রতী থাকবে”।

আর্থিক বছরের শুরুতে সরকার আয় ব্যায়ের যে হিসাব সংসদে পেশ করে সেটাই হল সাধারণ বাজেট। এবার লোকসভা ভোট আসন্ন। বর্তমান সরকার টিকে থাকবে কিনা তা সাধারণ নির্বাচনে দেশের মানুষ স্থির করবে। তাই পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করার সুযোগ নেই। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অন্তর্বতী বাজেট পেশ করেছেন। যাকে বলা যায় ভোট অন অ্যাকাউন্ট। অর্থাৎ জুলাই মাস পর্যন্ত সরকারি খরচ চালানোর জন্য অর্থ বরাদ্দর ব্যবস্থা কর হল বাজেটে।

এমনিতে অন্তবর্তী বাজেটে নতুন কর ছাড় ঘোষণার রীতি বিশেষ নেই। নির্মলাও তাই কপি বুক বাজেট পেশ করেছেন। যে বাজেট ঘোষণার মধ্যে সরকারের মোদী গত দশ বছরের সাফল্যের কথা ছিল মাত্র। তেমন নতুন কোনও ঘোষণা ছিল না।

আয়কর কাঠামোয় কোনও বদল হল না দ্বিতীয় মোদী সরকারের শেষ বাজেটে। তার কারণও জানিয়ে দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁর ঘোষণা, ‘‘ভোটের বছর বলেই এ বিষয়ে আমরা কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলাম না।’’ যদিও এর আগে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেটে বেড়েছিল আয়কর ছাড়ের উর্ধ্বসীমা।

পুরনো কর কাঠামোয় ২ লক্ষ ৫০ টাকা আয়ের উপর থেকে সর্বনিম্ন হারে আয়কর প্রযোজ্য হয়। অন্তর্বর্তী বাজেটে তা ৫০,০০০ টাকা বাড়িয়ে ৩ লক্ষ করা হতে পারে বলে জল্পনা ছিল। এর ফলে বছরে ১২৫০ টাকা সাশ্রয় হবে। ৫.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হবে না। একই সঙ্গে পুরনো এবং নতুন, দুই কর কাঠামোতেই ‘স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন’-এর পরিমাণ ৫০,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০,০০০ টাকা করা হতে পারে বলেও সরকারি সূত্রে ‘খবর’ মিলেছিল। কিন্ত তা হল না।

সাধারণত লোকসভা ভোটের বছরে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হয় নির্বাচনের পরে, নতুন সরকার গঠন হলে। সরকারি খরচ ও কাজে যাতে বাধা না আসে, তার জন্য নির্বাচনের আগে ‘ভোট-অন-অ্যাকাউন্ট’ বা অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ হয়। অন্তর্বর্তী বাজেটে সাধারণ ভাবে বড় কোনও ঘোষণা হয় না। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগেও অন্তর্বর্তী বাজেটে আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কাউকেই আয়কর দিতে হবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে দু’টি আয়কর কাঠামো চালু রয়েছে। একটি পুরনো। অন্যটি নতুন। নতুন কর কাঠামোয় ঊর্ধ্বসীমা ৭ লক্ষ টাকা। সেখানে করের হার কম, কিন্তু কোনও কর ছাড় মেলে না। পুরনোয় এখনও নানা ছাড় চালু রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here