দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে করোনার প্রকোপ কম হতে শুরু করতেই বড় সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় রেল। শুক্রবার ভারতীয় রেলবোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সমস্ত দূরপাল্লার মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে করোনাকালের আগের মতো ফিরিয়ে আনা হবে।
অর্থাৎ, ‘স্পেশাল ট্রেনে’-এর তকমা ঝেড়ে ফেলে আগের মতো পুরোনো নাম ও নম্বর-সহ দৌড়বে ট্রেনগুলি। কিন্তু, আগের মতোই সমস্ত ট্রেনে কোভিড প্রটোকল চালু থাকবে।খোদ রেলমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এই সব স্পেশাল ট্রেনে সফরের জন্য যাত্রীদের ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে। মন্ত্রক ঠিক করেছে খুব তাড়াতাড়ি এই ব্যবস্থা বন্ধ করা হবে।’’
রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, ট্রেনগুলিকে করোনাকালের আগের রূপে ফিরিয়ে এনে নতুন আকারে যাত্রী পরিষেবা দিতে গিয়ে সফটঅয্যার আপডেট করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। এদিন রেল বোর্ডের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আগামী দু-চার দিনের মধ্যেই সবকটি ট্রেন আগের মতো পুরোনো নাম ও নম্বর-সহ চালু হবে। সেক্ষেত্রে ট্রেনের নম্বরের আগে যে ‘শূন্য’ বসানো হয়েছিল, তা উঠে যাবে। তাছাড়া কিছু ট্রেন ‘স্পেশাল’ হওয়ার কারণে ভাড়া প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল, সেই ভাড়া প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। অরথাৎ ওই ট্রেনগুলির যাত্রীভাড়া কমে যাবে।
এ ব্যাপরে শুক্রবার রাতে এক নির্দেশ জারি করেছে রেলবোর্ড। তাতে বলাহয়েছে, বর্তমান শতাব্দী, দুরন্ত, মেল এবং এক্সপ্রেস মিলিয়ে মোট ১৭৪৪টি ট্রেন চালু রয়েছে। এগুলির প্রত্যেকটি ‘স্পেশাল ট্রেন’ হিসেবে চলছে। এখন থেকে এগুলি আবার পুরোনো নাম ও নম্বরে চালু হবে।
কোভিড প্রোটোকল চালু থাকবে। অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণীতে সংরক্ষণ ছাড়া যাত্রা করা যাবে না। এছাড়া ট্রেনে সফর করার সময় কম্বল, বালিশ, তোয়ালে এবং আইআরসিটিসি-র খাবার পরিবেশনের সুবিধা পাওয়া যাবে না। এখনও পর্যন্ত স্পেশাল ট্রেনের জন্য যে ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে, এর ফলে তা আর দিতে হবে না। রেলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন স্বয়ং রেলমন্ত্রী অশ্বীন বৈষ্ণো।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালর ২৫ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয় রেল পরিষেবা। তারপর ধীরে ধীরে শ্রমিক স্পেশাল এবং আরও পরে স্পেশাল ট্রেন চালু হয়। যেহেতু এখন করোনা পরিস্থিতি ক্রমশই নিয়ন্ত্রণে চলে আসার সঙ্গে সঙ্গে রেলও পরিষেবা স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে এখনও অনেক ট্রেনই স্পেশাল হিসেবেই চলছে।
ট্রেন এ বার ফুল ক্যাপাসিটি নিয়ে পুরনো টাইমটেবিল মেনে চলবে
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে প্রায় ২০ মাস আগে গোটা দেশে স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। পাছে সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সেই কারণে অত্যাবশ্যকীয় কারণ ছাড়া প্রথমে ট্রেন চালানোই হয়নি। পরে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে কিছু ট্রেন চালিয়েছিল রেল।
দেশে কোভিড পরিস্থিতির ভয়াবহতা কমার লক্ষণ স্পষ্ট হওয়ার পর এ বার আগের মতোই ফুল ক্যাপাসিটিতে মেল, এক্সপ্রেস ও হলিডে স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিল রেল মন্ত্রক। শুক্রবার সন্ধ্যায় নোটিফিকেশন জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে রেল। সবকটি জোনকে তা জানিয়েও দিয়েছে রেল বোর্ড।
রেল মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মেল এক্সপ্রেস ট্রেন আগের মতোই স্বাভাবিক টাইমটেবিল মেনে চলবে। অর্থাৎ ট্রেনের ফ্রিকোয়েন্সি আগের মতোই হবে।
এ ক্ষেত্রে অনেকের কৌতূহল তৈরি হতে পারে যে ইতিমধ্যে যাঁরা দূরপাল্লার যাতায়াতের জন্য যে টিকিট বুক করেছেন, তাতে কি কোনও বদল হবে? সেই টিকিটের টাকা রিফান্ড নিয়ে কি নতুন করে টিকিট কাটতে হবে?
রেল জানিয়েছে, তার দরকার নেই। যারা ট্রেনের টিকিট বুক করে রেখেছেন তা বহাল থাকবে। ট্রেনের আসন সংখ্যা বাড়ার জন্য নতুন রিজারভেশন নেওয়ার ব্যবস্থাপনা রেলই করবে।