দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: অচিরেই চুক্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত বলবৎ হতে যাচ্ছে প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন বিভাগ আর্মি, এয়ারফোর্স ও নেভিতে।
রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের সব ধরনের কাজেই চুক্তিতে নিয়োগ চালু হয়েছে প্রায় দু-দশক হতে চলল। বাকি ছিল সেনাবাহিনী । সেখানেও চুক্তিতে নিয়োগের কথাবার্তা চলছিল বেশ কয়েক বছর যাবত। চুক্তিতে লোক নিয়োগের সিদ্ধান্ত অল্পদিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
সরকারি সূত্রের খবর, নয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জওয়ান থেকে অফিসার, সব পদেই প্রাথমিক নিয়োগ হবে চার বছরের জন্য। চার বছর শেষে ২৫ শতাংশকে পাকাপাকিভাবে রেখে দেওয়া হবে। সেই ২৫ শতাংশকে নতুন করে নিয়োগ করবে সেনা। অর্থাৎ তাদের পাকা চাকরির সঙ্গে আগের চার বছর যোগ করা হবে না।
আর্মি, এয়ারফোর্স এবং নেভি, তিন বাহিনীতেই চার বছরের জন্য জওয়ান এবং অফিসার নিয়োগ করা হবে। প্রাথমিকভাবে ভাবা হয়েছিল, চুক্তিতে চাকরির মেয়াদ হবে তিন বছর। সেই প্রস্তাবে বদল আনা হয়েছে।
করোনার কারণে সেনা বাহিনীতে প্রায় দু’বছর নিয়োগ বন্ধ ছিল। ফলে বাড়তে বাড়তে শূন্য পদের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ২৫ হাজার ছাপিয়ে গিয়েছে। এত পদ অল্প দিনের ব্যবধানে পূরণ করা নানা দিক থেকেই সমস্যার। প্রধান কারণ আর্থিক। এত লোকের বেতন জোগাতে সেনার বাজেটে বিরাট বোঝা চাপবে। সেই কারণেই চুক্তিতে চার বছরের জন্য নিয়োগের ভাবনা। তবে, স্থায়ী পদে নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। শূন্য পদের বড় অংশ পূরণ করার ভাবনা চুক্তিতে নিয়োগের মাধ্যমে। এইভাবে আর্থিক সাশ্রয় হবে বলেও মনে করে সেনা বাহিনী।
ঠিক হয়েছে চার বছরের চুক্তির চাকরি শেষে ২৫ শতাংশকে রেখে দিয়ে বাকি ৭৫ শতাংশকে বসিয়ে দেওয়া হবে। সেনার মতে এই ৭৫ শতাংশের সরকারের অন্যান্য কাজে বা বেসরকারি অফিসে চাকরি পেতে অসুবিধা হবে না। কারণ, চার বছর সেনায় কাজ করার সুবাদে তারা অনেকটা এগিয়ে থাকবে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, চুক্তি বহাল থাকাকালীন যুদ্ধে কিংবা দেশের মধ্যেই উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যেতে হতে পারে। স্থায়ী পদে চাকরি করা সেনারা যত ধরনের কাজ করে থাকেন তার সবই করতে হবে চুক্তিবদ্ধ জওয়ান ও অফিসারদের।
আরও একটি প্রস্তাব এই ক্ষেত্রে সেনার বিবেচনাধীন। এখনও পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ারিং সহ কারিগরি ক্ষেত্রে নিয়োগে সেনাকর্মী -অফিসারদের চাকরির শুরুতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। খরচ বাঁচাতে সেনা কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র এবং প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ লোক নিয়োগ করবে।
এরফলে প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পাঠ দিতে হবে না। এইভাবেও অর্থ সাশ্রয় হবে। তবে চুক্তিতে নিয়োগে মেডিক্যাল কোর এবং কিছু অত্যন্ত গোপনীয় কাজের জায়গায় চুক্তিতে নিয়োগ বলবৎ হবে না।
চুক্তির চাকরিতেও স্থায়ী পদে যুক্ত সেনাকর্মীর সমান বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, চুক্তি শেষের পর তাদের পুনরায় চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে সেনা।
সেনাকর্তাদের ধারণা, দেশের কর্পোরেট কোম্পানিগুলি সেনায় চাকরি করা লোকজনকে নিজেদের সংস্থায় ডেকে চাকরি দেবে। কারণ, সেনায় কর্মজীবন শুরু করায় তারা অনেক বেশি শৃঙ্খলাপরায়ন হবেন। সেনার বক্তব্য, এই ভাবে তারা সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে উন্নত মানব সম্পদ জোগান দিয়ে নতুন ভূমিকা পালন করবে দেশের জন্য৷