পাকিস্তানকে চরম বার্তা। আর একটাও সন্ত্রাসবাদী হামলা হলেই ভারত সেই হামলাকে যুদ্ধের আবাহন বলেই গণ্য করবে। শীর্ষ সরকারি সূত্রে এমনটাই খবর। সন্ত্রাস হামলাকে যুদ্ধের সমান বলেই গণ্য করবে ভারত।

সূত্রের খবর, ভারত স্পষ্টভাবে “অ্যাক্ট অব ওয়ার” শব্দটি ব্যবহার করেছে। সশস্ত্র হামলা বা শক্তির ব্যবহার যা দেশের সার্বভৌমত্ব বা সীমান্তের অখণ্ডতাকে বিপন্ন করে কিংবা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, সেক্ষেত্রে এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়।
অর্থাৎ পাকিস্তানকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হল, ভবিষ্যতে ভারতে পাকিস্তান কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলা করলে, তা যুদ্ধের আবাহন হিসাবেই গণ্য করা হবে। সেক্ষেত্রে ভারত সামরিক জবাব দেবে।

প্রসঙ্গত, আজই পাকিস্তান সুর নরম করে বলেছে যে তারা যুদ্ধ চায় না, শান্তি চায়। ভারত প্রত্যাঘাত থামালে, তারাও থেমে যাবে।
ভারত প্রথম থেকেই সংযত রয়েছে। পাকিস্তানই বারেবারে আঘাত হানছে। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারত সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করেছে। সেই সময় থেকেই পাকিস্তান ‘অ্যাক্ট অব ওয়ার’ শব্দটি ব্যবহার করেছে। এবার ভারতও একই শব্দবন্ধ দিয়ে পাকিস্তানকে চরম হুঁশিয়ারি দিল।

আমেরিকা ও ইজরায়েলের পথে হেঁটে জঙ্গি নিকেশে যুদ্ধ ঘোষণা করল ভারত । শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের মধ্যে অতি জরুরি বৈঠকের পর সরকারি সূত্রে এই খবর জানা গেছে। এরপর থেকে ভারতে কোনও জঙ্গি হামলা হলে তা সমূলে বিনাশ করা হবে।

৯/১১ হামলার পর আমেরিকা ওসামা বিন লাদেনের আল কায়েদা জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এভাবেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। একই পদ্ধতিতে ইজরায়েল হামাস, হিজবুল্লা, হুতি, আইসিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। আমেরিকা ও ইজরায়েলের মাটিতে ঢুকে জঙ্গি হানায় নিরীহের মৃত্যুর প্রতিবাদে দুই সরকারই রাষ্ট্রীয়ভাবে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যায়।
প্রসঙ্গত, আমেরিকায় ৯/১১ হামলার পর দীর্ঘদিন ধরে ওসামার খোঁজে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকায় অভিযান চালায় মার্কিন বাহিনী। অন্য রাষ্ট্রে ঢুকে জঙ্গি খতমের জন্য নানান পদ্ধতিতে একের পর এক আক্রমণ হয়। ইজরায়েলের রিসর্টে ঢুকে হামাস জঙ্গিরা বিদেশি-সহ বহু মানুষকে খুন করে ও পণবন্দি করে। তারপরই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা-প্যালেস্তাইন আক্রমণ শুরু করেন। ঠিক একই পদ্ধতিতে ভারত সরকার এবার সিদ্ধান্ত নিল, দেশের মাটিতে যেকোনও জঙ্গি কার্যকলাপকেই ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলে মনে করা হবে।
তাই জঙ্গিদের শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে নয়া দিল্লিও ‘ওয়ার অন টেরর’ ঘোষণা করল। এই নীতির ফলে যদি দেখা যায়, বিদেশি কোনও শক্তির সাহায্যে ভারতের বুকে জঙ্গি হামলা হয়, তাহলে সেই দেশে ঢুকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের চিহ্ন মাত্র আর রাখা হবে না। স্বাভাবিকভাবেই ভারত সরকারের এটা অত্যন্ত দৃঢ় ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলে মনে করা যায়।

গত তিনদিনের মতো এদিনও বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বিদেশ মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা বিভাগের তরফে একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হবে, সেখানেও আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা হতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের পরে ভারত বিরোধী জঙ্গি কার্যকলাপে মদতদাতা পাকিস্তানকে ঘুরিয়ে হুমকি দিয়ে রাখল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার।
