” ইচ্ছেগুলো ভাসিয়েদেখ ইছামতির ধারায় – বইবে সে সব ইছামতির ইচ্ছা অনিচ্ছায়…. বনগাঁ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা শান্ত -স্নিগ্ধ নদী ইছামতি – কে নিয়ে গান লিখলেন আর্চার্য সঞ্জয় চক্রবর্তী, আর তাতে সুর বসালেন বিশাখজ্যোতি…. সৃষ্টি হল নতুন গান ৷ সেই গানেই বনগাঁ উৎসব ২০২২-এর মঞ্চ মাতালেন বিশাখজ্যোতি ৷ কারণ ইছামতি নদী বনগাঁর মানুষের প্রাণ। আর সেই ইচ্ছামতীর সার্বিক সংস্কারের ভাবনা নিচ্ছেন নবনির্বাচিত পুরপ্রধান গোপাল শেঠ।।

পার্থ সারথি নন্দী, বনগাঁ: দূর থেকে দেখলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবুজ মাঠ যেন আঁকাবাঁকা পথ ধরে এগিয়ে গেছে বহু দূর! কচুরিপানায় ভরা ইছামতি নদী এমনই চেহারা নিয়েছে৷ বনগাঁয় সে নাব্যতা হারিয়েছে বহুদিন আগেই৷৷ নদী মৃতপ্রায়৷
শেষ কবে জোয়ার-ভাটা খেলে ছিল তা নদী পাড়ের মানুষ ভুলতে বসেছেন ৷ বছরের বেশিরভাগ সময়ই নদী কচুরিপানায় ভরা থাকে৷ বনগাঁয় ইছামতি নদীতে কচুরিপানার সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে পদক্ষেপ করল বনগাঁ পৌরসভা৷


পুরো প্রধান গোপাল শেঠ জানিয়েছেন নদী কচুরিপানা মুক্ত করতে স্থায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে৷ ৯১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি বিশেষ আধুনিক যন্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে আগামী দেড় মাসের মধ্যে কচুরিপানা তোলার কাজ শুরু হবে৷

অতীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে নদী থেকে কচুরিপানা তোলা হয়েছে পরবর্তী সময়ে এই প্রকল্পে কচুরিপানা তোলা বন্ধ হয়ে যায়৷ বিক্ষিপ্তভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সেচ দপ্তর এর পক্ষ থেকে কয়েকবার কচুরিপানা তোলা হয়েছিল৷

পুরসভা থেকেও কচুরিপানা তোলা হয় গত পৌষ মাসে বনগাঁ শহর থেকে সাতভাই কালিতলা এলাকা পর্যন্ত পুরসভার তবে কচুরিপানা তোলা হয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন বিক্ষিপ্তভাবে কচুরিপানা তোলা হলেও আখেরে লাভ কিছুই হয়না কয়েক মাস পরেই নদীতে কচুরিপানা ভরে যায় এজন্যই চাই পরিকল্পনা৷

গোপাল বাবুর কথায়, নতুন যন্ত্রটি দিয়ে খুব কম সময়ে হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে নদী থেকে কচুরিপানা তোলা যাবে এবং নিয়মিত নদীর কচুরিপানা মুক্ত করা সম্ভব হবে৷ নদীতে কচুরিপানা যেতে পারবেনা৷

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে নতুন যন্ত্রটি ব্যবহার করে বনগাঁ পুরো এলাকা ছাড়াও বাগদা ব্লকের দত্তপুলিয়া পর্যন্ত কচুরিপানা তোলার কাজ হবে৷
পুরো প্রধানের কথায় নদী থেকে তোলা কচুরিপানা দিয়ে সার তৈরি হবে এছাড়া স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কচুরিপানা দিয়ে হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করবেন৷ পরীক্ষামুলকভাবে সেই কাজ শুরু করেছেন ৷

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে সেই সমস্ত হস্তশিল্প সামগ্রী পৌরসভার পক্ষ থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হবে৷ নদী কচুরিপানা মুক্ত করে বনগাঁ থেকে বাগদা পর্যন্ত জল পথে যাতায়াত ব্যবস্থা করা হবে৷ ফের চলবে লঞ্চ৷ স্থানীয় কলেজ পাড়ার বাসিন্দা কবি মলয় গোস্বামীর কথায় নদীর জল দেখিনা বহুদিন, সর্বত্র মশা ও সাপের উপদ্রব আছে ৷ সমস্যা সমাধান হলে খুবই উপকার হবে৷

আরেক কবি বিভাস রায়চৌধুরী বলেন, এটা শুধু বিভূতি ভূষণের ইছামতি ছিল না,যে তার অবর্তমানে এই নদী শুধু বই-এর পাতায় নাম আর ছবিতে থেকে যাবে৷ এটা আমাদেরও নদী তাকে বাঁচাতে হবে৷ গোপাল বাবুর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই৷ ইছামতি বাঁচলে এই শহর শুধু নয় এই নদীর রেখার দু’পাড়ের অসংখ্য গ্রামের মানুষও নতুন জীবন ফিরে পাবেন৷ জেলেরা ফের মাছের সন্ধ্যানে নৌকা ভাসাবেন৷ যুবক – যুবতীরা সাঁতারে ফের দেশ-বিদেশ থেকে পুরষ্কার পাওয়ার লক্ষ্যে স্বপ্ন দেখবে৷ এক কথায় ইছামতি সংস্কার হলে সবুজ ফিরবে। নীচে দেখুন ভিডিও:- ইছামতি নদী কাহিনি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here