সম্প্রতি মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সব রাজ্যকে আগামী দু’মাসে তাপপ্রবাহ নিয়ে সতর্ক করেছে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হিট স্ট্রোকের প্রবণতা বাড়বে বলেও আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। এই পরিস্থিতিতে বিনা চিকিৎসায় যাতে কারও মৃত্যু না হয় তা নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর।
সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি রাজ্যের সব হাসপাতালে যাতে হিট স্ট্রোকে আক্রান্তের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হয়, তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। বিশেষ ভাবে মনে করানো হয়েছে, চিকিৎসায় দেরি হলে অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে হিট স্ট্রোকে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, শরীর ঠিকমতো ঠান্ডা (কুলিং) না করার ফলে হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ৪০-৬৪% ক্ষেত্রে এড়ানো সম্ভব হয় না। এই বিষয়েও নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সব জেলার স্বাস্থ্য কর্তাকে। হিট স্ট্রোক মোকাবিলায় যাবতীয় ওষুধ মজুত রাখার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মশালা করার কথাও বলা হয়েছে।
গত বছর ৩০ এপ্রিল হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছিল বাগুইআটির সুমন রানার। বড়বাজারে ব্যক্তিগত কাজে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই যুুবক। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘যাঁরা দুপুরের দিকে রাস্তায় বেরোচ্ছেন, তাঁরা বেশি করে অবশ্যই জল খাবেন এবং চেষ্টা করবেন মাথা ঢেকে রাখতে। কারণ, মাথায় বেশি তাপ লাগা শরীরের জন্যে ক্ষতিকর।’ ষাটোর্ধ্বদের বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় না বেরোনোই ভালো বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, হিট স্ট্রোকে প্রবীণরাই বেশি আক্রান্ত হন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মলয় সাহার কথায়, ‘হঠাৎ তীব্র মাথা ব্যথা, চোখের সমস্যা, মাথা ঘোরা, ভারসাম্য বা সমন্বয়ের অভাব বা হাঁটতে অসুবিধা হওয়া হিট স্ট্রোকের লক্ষণ। এমন সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’ বাড়িতে কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাঁকে ভালো করে স্নান করানো বা আইসপ্যাক দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ওই চিকিৎসক।