দুর্গাপুজো মানেই বেহিসেবী হয়ে যাওয়া। শুধুই খাওয়া- দাওয়া, ঘোরাঘুরি আর রাত জাগা। রোজকার নিয়মের বাইরে গিয়ে ক’টা দিন শুধুই অনাবিল আনন্দে মেতে থাকা। তাই পুজোর কিছুদিন আগে থেকেই শরীরের আলাদা করে যত্ন নেওয়াটা খুবই জরুরি শরীর সুস্থ রাখার জন্য। আবার যারা পুজোর সময় একটু ফ্যাশনের দিকে ঝোঁকেন তারা চটজলদি ওজন কমানোর কাজে লেগে পড়েন। তা না হলে ট্রেন্ডিং ড্রেস পড়েও বেমানান লাগবে। তাই পুজোর আগে অনেকেই সুন্দর চেহারা পাওয়ার আশায় জিমে ভর্তি হন। তবে হঠাৎ জোর করে ব্যায়াম করলে শরীরে নানান রকম সমস্যা আসতে পারে, তাই কি করে শরীর সুস্থ রাখা যায় বা শরীরের গঠন ঠিক করা যায় সে ব্যাপারেই কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ জয়শ্রী বনিক তাঁর অভিজ্ঞ মতামত প্রদান করেছেন।
(১) বর্তমানে যে আবহাওয়া চলছে কখনও বৃষ্টি আবার কখনও গুমোট গরম, অন্যদিকে ঋতু পরিবর্তনের পালা- এইরকম পরিস্থিতিতে ভাইরাল ফিভারের প্রকোপ বেড়েছে। তাই শরীরকে ঠিক রাখতে এই সময় কোন রকম ঠান্ডা জিনিস না খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
(২) এই মুহূর্তে সবারই একটা পুজোর শপিং- এর পর্ব চলছে আর শপিং মানেই বাইরে খাওয়া। তাই এই সময় ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুড না খেয়ে খাবার বাছতে হবে যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়, যেমন- স্টিম মোমো, ধোকলা, দই বড়া বা সাউথ ইন্ডিয়ান খাবার।
(৩) এই সময় ভাইরাল ফিভারের সম্ভাবনা থেকে যায় বলে প্রোটিন রোজকার ডায়েটে রাখতে হবে। তাই রোজ একটা করে ডিম খাওয়া জরুরি।
(৪) ডায়েটে মাছ- মাংস থাকলে সেটা দিনের বেলা খেতে হবে। রাতের বেলা একটু হালকা খাবার খাওয়া উচিত। যেমন- রুটি, সবজি, ডাল, স্যালাড। রোজ ডায়েটে অবশ্যই স্যালাড রাখতে হবে। শাক রাখা যাবে তবে সেটা যেন ঠিক করে পরিস্কার করা হয়। রোজ ফল খেতে হবে। রোগা হওয়ার থেকেও জরুরি শরীরকে সুস্থ রাখা।
(৫) শরীরকে সুস্থ রাখার আর একটি উপায় হল শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখা। শরীরে আর্দ্রতা বজায় থাকলে রোগের প্রবনতাও কমে এবং ওজনও কমে দ্রুত। তাই প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। যেমন- ডাবের জল, লেবুর জল, আখের রস ইত্যাদি।
(৬) ওজন ঠিক রাখার জন্য খাওয়া বন্ধ না করে সঠিক পরিমাণে খাদ্য খাওয়া দরকার। একসঙ্গে বেশি পরিমাণ খাবার না খেয়ে তার পরিবর্তে অল্প পরিমাণে খাবার খেতে হবে দু- তিন ঘণ্টার ব্যবধানে। এতে শরীর সুস্থ থাকবে এবং ওজনও বাড়বে না।
(৭) শরীর ঠিক রাখা এবং সুন্দর চেহারার জন্য সবচেয়ে জরুরি রোজ আধ ঘণ্টা নিয়ম করে যোগ ব্যায়াম করা বা হাঁটা।
পুষ্টিবিদের উপরোক্ত মত মেনে চললে আশা করা যায় এ বছরের পুজোটা বেশ ভালোই কাটবে।