দেশের সময় , হাবড়া: কেউ স্কুলশিক্ষিকা, কেউ স্কুল-কলেজের অশিক্ষক কর্মী, কেউ শিল্পী, কেউ আবার বেসরকারি সংস্থার কর্মী৷ মহিলাদের পরনে লাল পাড় সাদা শাড়ি ,মাথায় রজনীগন্ধার মালা৷

ছবিতুলেছেন দেবানন্দ পাইন।

সকলে গলা মিলিয়েছেন “হে নতুন , দেখা দিক আর- বার… কবিগুরুর এই গানের সঙ্গে পরিবেশন করা হল নৃত্য ও কবিতা ৷ বছরে একটি দিন তারা কিছুক্ষণের জন্য নিজেদের পেশার কথা ভুলে ট্রেনের সহ – যাত্রীদের সঙ্গে মেতে ওঠেন রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনে৷

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ,নাচ – কবিতা পাঠের মাধ্যমে মঙ্গলবার সকালে হাবড়া শিয়ালদহ শাখার মহিলা কামরার নিত্যযাত্রীরা স্মরণ করলেন বিশ্বকবি কে ৷ এই নিয়ে তাদের উদযাপন পঞ্চম বছরে পড়ল ৷

হাবরা থেকে সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটের শিয়ালদহগামী ট্রেনের মহিলা কামরার নিত্যযাত্রীরা ওই আয়োজনের জন্য এদিন অনেকটা আগেই স্টেশনে উপস্থিত হয়েছিলেন

কামরার একটি জায়গায় বসানো হয় কবিগুরুর ছবি৷তাঁর ছবিতে মাল্যদান করেন ওই ট্রেনের চালক-গার্ড সহ অন্যান্য মহিলা যাত্রীরা৷৷

ট্রেনের গায়ে রবি ঠাকুরের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স লাগানো হয়েছিল ৷ মহিলাদের আয়োজন দেখে পুরুষ যাত্রীরাও অভিভূত। প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে এই অনুষ্ঠান দেখছিলেন বিভিন্ন প্লাটফর্মের অসংখ্য যাত্রীরাও৷

এদিনের আয়োজন সম্পর্কে কামরার যাত্রীরা জানালেন রবীনাথের গান দৈনন্দিন জীবনের প্রতি মুহূর্তে ছড়িয়ে রয়েছে ৷ রবীন্দ্রনাথ বৈশাখ মাসে জন্মেছিলেন বলে এই মাসে যে কোন দিনে অনুষ্ঠান পালন করা যায়৷

ট্রেনের চালক তাপস মিত্র বলেন , আমাদের ছুটি নেই পরোজই কাজ করতে হয় ৷ বৈশাখ মাস পড়লেই এই অনুষ্ঠানের কথা মনে পড়ে৷ এত ভাল আয়োজন যে অংশগ্রহণ করতে পেরে মন ভালো হয়ে যায়।

নিত্যযাত্রী স্কুল শিক্ষিকা সায়নী দাশগুপ্ত এদিন রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেছেন ৷ তিনি জানান গত দু’বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা ২৫ শে বৈশাখ উদযাপন করতে পারিনি৷ এবছর আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করলাম ৷ খুব আনন্দ হচ্ছে৷

নিত্যযাত্রী অঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন , সারা বছর ব্যস্ততার মধ্যে থাকি বছরের একটি দিনে এই অনুষ্ঠানের জন্য আমরা সকলেই কবি গুরুকে স্মরণ করলাম ও আনন্দ উপভোগ করলাম৷

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন ২৫ শে বৈশাখ অফিস ছুটি থাকে অনেকেই নিজেদের এলাকায় কাজে বা অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকেন ফলে ওই দিন আলাদা করে পালন করা যায় না। পরে যেকোনো একটি দিন তারা বেছে নেন রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য ৷

যাঁরা অবসর নিয়েছেন বা যাদের বিবাহ সূত্রে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে তাঁদের এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ মহিলাদের পরিবারের সদস্যদের খুদে সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন৷

চলন্ত ট্রেনে চলে অনুষ্ঠান৷ একে একে গন্তব্য স্টেশনে নেমে যান যাত্রীরা৷ এই ভাবেই অনুষ্ঠানের মধ্যেই হাবড়া লোকাল পোঁছায় শিয়ালদহে। যাত্রীরা তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছেও প্রতীক্ষা রয়ে যায় আগামী ২৫ শে বৈশাখের৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here