সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার স্বপ্নময়, জাদুকরী, গ্ল্যামারাস এবং প্রলোভনসঙ্কুল জগতকে ছুঁতে সক্ষম হলো বিভিন্ন স্তরের মানুষ। আগে যেটা সকলের কাছে স্বপ্নময় জগত ছিল, এখন তার অংশীদার হতে পারেন অনেকেই। এ রকমই এক প্রতিযোগিতার সাক্ষী হলো গড়িয়ার নিকটবর্তী পঞ্চসায়রের ভর্দে ভিস্তা ক্লাব। আর যাদের হাত ধরে এই স্বপ্নের জগতে বিচরণ সম্ভবপর হলো তাঁরা হলেন গ্ল্যামারএক্স ইন্ডিয়ার মৌ সরকার এবং পীযূষ সরকার। অনুষ্ঠানের নিবেদক সেঞ্চুরি প্লাই। তবে এই অনুষ্ঠানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে অনেকের অবদান আছে। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এদিন একটি গানেরও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। নতুন প্রতিভাকে লাইমলাইটে নিয়ে আসাই তাদের লক্ষ্য ছিল। টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো- এর কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষ ছিলেন এই প্রতিযোগিতার বিচার পর্বে । শিল্পীদের সঙ্গে সহযোগিতায় ছিলেন রিয়েলিটি শো-এর মিউজিশিয়ানরা। দেখুন ভিডিও
এদিন প্রথমেই সঙ্গীতানুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। তারপর মঞ্চে আসেন একে একে ছয় থেকে সাতজন অ্যাসিড আক্রান্ত। তাঁরা এথনিক বুটিকের শাড়িতে নিজেদের ঝলমলে করে তুলেছিলেন। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে রানওয়েতে নিজেদের পরিচয়ে সদর্পে হেঁটে বেড়ান। এই রাউন্ডের শেষে এথনিক বুটিকের কর্ণধার গার্গী সোনকার এবং গ্ল্যামারএক্সের মৌ ও পীযূষ অ্যাসিড আক্রান্তদের সংবর্ধনা প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে গার্গী বলেন, ‘ মেয়েদের কোনভাবেই থামিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তার প্রমাণ আজকের এই অনুষ্ঠান। আমি খুব গর্বিত এই রকম একটা কাজে থাকতে পেরে।’ পীযূষ ও মৌ অ্যাসিড আক্রান্তদের আগের বছরেরও মঞ্চে এনেছিলেন। ভবিষ্যতেও এরকম আরও পদক্ষেপ নিতে চায়। মৌ জানান, আমাদের এই প্ল্যাটফর্ম অ্যাসিড আক্রান্ত সহ বহু মানুষের আত্মবিশ্বাস তৈরিতে সাহায্য করছে। এখান থেকে অনেক অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা নিজেদের আলাদা পরিচিতি বানাচ্ছে। এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্যকেই প্রকাশ করে না, মনের ওপরও আলোকপাত করে।
এই অনুষ্ঠানে এরপরের ধাপে এক ঝাঁক ছোট্ট ছোট্ট ছেলে মেয়ে মঞ্চ দাপিয়ে বেড়ায়। আলোর ঝলকানি আর সঙ্গীতের মূর্ছনায় মনে হয় রঙিন প্রজাপতির দল মঞ্চে উড়ে বেড়াচ্ছে। তাদের দুটো রাউন্ডে ধরা হয়। প্রথম রাউন্ডে তারা পড়ে সাবেকি পোশাক। পরের রাউন্ডে পাশ্চাত্যে পোশাকে দেখা যায়। বাচ্চাদের এই রাউন্ডগুলো ছিল ফ্যাশন শো। এরপরে অনুষ্ঠানটি মূল পর্বে প্রবেশ করে। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, ‘Mr, Miss, Mrs India’। এই প্রতিযোগিতায় কিছু পেশাদার মডেল ‘কলকাতা নামা’ – র পোশাক পড়ে রানওয়েতে আসেন। এই ব্র্যান্ডের কর্ণধার ডিজাইনার শান্তনু গুহঠাকুরতা বলেন, ‘ আমি বহু বছর ধরে কাজটা করছি। এর আগে বহু শো হয়েছে আমার পোশাকে। তিন বছর ধরে গ্ল্যামারএক্স-এর সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। খুব ভালো লাগছে।’
মিস্টার, মিস এবং মিসেস – এই তিন ক্যাটাগরির প্রতিযোগীদের জন্য তিনটে রাউন্ড ছিল। প্রথম রাউন্ডে প্রতিযোগীরা পড়ে সাবেকি পোশাক আর তৃতীয় রাউন্ডে পাশ্চাত্য পোশাক। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডের মধ্যে বেশ অভিনবত্ব ছিল। প্রতিযোগীরা খেলার পোশাকে এবং মেজাজে মঞ্চে ধরা দেন। কেউ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবে, কেউ ফুটবল, কেউ ক্রিকেটার- আরও নানা রূপে। বিজয়ী ছাড়াও সাতজনকে পুরস্কৃত করা হয়। এই শো-এর গ্রুমার ছিলেন সৈকত টুকাই। তাঁর তত্ত্বাবধানেই প্রায় ৫০ জনের বেশি প্রতিযোগীর গ্রুমিং সেশন হয়। এই শো -এর একজন শো স্টপার ছিলেন অভিনেতা, মডেল এবং গ্রুমার অনির্বাণ দে। তিনি বলেন, ‘এই শো এর জন্য আসানসোলে একটা গ্রান্ড অডিশন হয়। সেখানে আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু প্রতিযোগী অংশ নেয়। তবে শুধুমাত্র ২০ জন প্রতিযোগী নির্বাচিত হন। এদের গ্রুমিংসহ নির্বাচনের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়। গ্ল্যামারএক্সের কাছে এরজন্য খুবই কৃতজ্ঞ যে ওরা আমাকে এই কাজের যোগ্য মনে করেছে।’ গ্ল্যামারের বিচ্ছুরনে গ্ল্যামারএক্স- এর অনুষ্ঠান কোন বড়মাপের প্রতিযোগিতার থেকে কোন অংশেই কম ছিল না।