দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারতের বাজারে ভোজ্য তেলের দামে এ বার ছ্যাঁকা লাগার অশনিসংকেত তৈরি হয়েছে। যা প্রায় বিপর্যয়ের পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে বলে মনে করছেন বাজার-অর্থনীতিবিদরা।

কারণ, আপাতত একটাই। তা হল ২৮ এপ্রিল থেকে ভারতকে পাম অয়েল রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইন্দোনেশিয়া। এই নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকালের জন্য আরোপ করা হয়েছে। অথচ বাস্তব হল, ভারতে মোট পাম অয়েলের যোগানের ৪৫ শতাংশ মেটানো হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা পাম অয়েল থেকে।

এমনিতেই সরষের তেলের দাম গত এক বছরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। গত বছর মার্চ মাসেও প্যাকেজড সরষের তেলের ১ লিটারের দাম ছিল গড়পরতায় ১১৩ টাকা। তা এখন বেড়ে প্রতিলিটারে ১৭৫ টাকা থেকে ১৮০ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ এক বছরে সরষের তেলের দাম ৫৪ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়েছে। যা ইতিমধ্যে মোদী সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। বস্তুত সেই কারণেই এ বারের বাজেটে তৈলবীজ চাষে উৎসাহ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সরকার।

এই গোদের উপর এ বার বিষফোঁড়া হতে চলেছে পাম অয়েল। এমনিতে বাংলায় গেরস্তের বাড়িতে পাম অয়েলে রান্না হয় না। কিন্তু বহু রেস্তোরাঁয় বা দোকানে রেডি-টু-ইট যে ভাজা খাবার পাওয়া যায় তাতে পাম অয়েল ব্যবহার করা হয়।

কারণ, তুলনায় পাম অয়েল ছিল সস্তা। প্রতি বছর ভারত ১ কোটি ৩০ লক্ষ টনের মতো ভোজ্য তেল আমদানি করে। তার মধ্যে ৮০ লক্ষ টন পাম অয়েল। ভারতে কত পাম অয়েল ব্যবহৃত হয় তা এই পরিসংখ্যানেই পরিষ্কার।
বড় কথা হল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ভোজ্য তেল আমদানিতে এমনিতে প্রভাব পড়েছে।

ভারত প্রতি মাসে ২ থেকে আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন সূর্যমুখী তেল আমদানি করে। যুদ্ধের কারণে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাসে ১ লক্ষ মেট্রিক টন। অর্থাৎ সূর্যমুখী তেলের যোগানও কমছে। আশঙ্কা হল, এর ফলে সূর্যমুখী তেলের দামও বাড়তে পারে। তার উপর ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রফতানি বন্ধ করে দিলে তা বড় সঙ্কট ডেকে আনবে বলে মনে করছেন সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ডিরেক্টর বিভি মেটা। তাঁর মতে, কূটনৈতিক চ্যানেলে ভারত বিকল্প ব্যবস্থা করুক। নইলে বিপর্যয় অনিবার্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here