দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী রাজ্য সরকার।
নবান্ন সূত্রের খবর, ইউনেস্কোর কাছ থেকে ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের স্বীকৃতি পাওয়ার পর বাংলার দুর্গাপুজোকে নিয়ে দুনিয়া জুড়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বহু বিদেশি পর্যটক এ বার পুজোর সময়ে কলকাতায় আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অনেকে আবার বিদেশে বসেই দুর্গাপুজোর নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান।
নবান্নের কর্তাদের দাবি,দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে শিল্প-স্থাপত্যের যে উৎকর্ষের পরিচয় মেলে, সে সব যাতে বিশ্ববাসী চাক্ষুষ করতে পারেন, সেই জন্য সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমে এই বছর ব্যাপক প্রচার চালানো হবে। সেই লক্ষ্যে কলকাতা এবং তার আশপাশের মোট ৪০টি সেরা পুজোকে বেছে নেবে সরকার। সেই সব পুজো মণ্ডপের রিয়েল টাইম ভিডিয়ো ক্লিপ সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুর্গাপুজোর চার দিন, অর্থাৎ সপ্তমী থেকে দশমী, ওই সব পুজো মণ্ডপের প্রতি মুহূর্তের ছবি ক্যামেরাবন্দি করা হবে। পুজোর থিম থেকে মণ্ডপসজ্জা, আলো, থিম মিউজি়ক, পুজোর আচার-অনুষ্ঠান এবং সর্বোপরি দর্শনার্থীদের উৎসাহ-উদ্দীপনার ছবি ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেখতে পাবেন দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের মানুষ। এই ব্যাপারে কোনও পেশাদার এজেন্সিকে রাজ্য পর্যটন দপ্তর দায়িত্ব দিতে চলেছে।
পর্যটন দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, ”এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। কোটি কোটি মানুষ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবে চোখ রাখেন এবং সে সবে তাঁরা সক্রিয়। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর দুর্গাপুজো এখন পুরোদস্তুর একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট। তাই, আমরাও দুর্গাপুজোর প্রচারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করতে চাইছি।”
এই বছর দুর্গাপুজোর সময়ে দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকে যাঁরা এবং যে সব বিদেশি পর্যটক আসবেন, তাঁদের আতিথেয়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। বিদেশি অতিথিরা যাতে স্বচ্ছন্দে মণ্ডপে ঢুকতে পারেন, সেই ব্যাপারে পুজো কমিটিগুলিকে অনুরোধ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের জন্য বিশেষ পাস-এর ব্যবস্থা থাকবে।
ভিআইপি দর্শনার্থীদের মতো তাঁরা সরাসরি মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন। কলকাতা বিমানবন্দর, বাগডোগরা বিমানবন্দর-সহ রাজ্যে ঢোকার বিভিন্ন জায়গায় ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্য পর্যটন দপ্তর অস্থায়ী ভাবে ট্যুরিস্ট অ্যাসিস্ট্যান্স বুথ তৈরি করবে। পর্যটন দপ্তরের লোগো বসানো বিশেষ ডিজ়াইনের টি-শার্ট, টুপি এবং মাস্কও বানানো হচ্ছে।
কলকাতা ও শিলিগুড়ি শহরের যে সব জায়গায় বিদেশিদের আনাগোনা এমনিতেই বেশি হয়, সেই সব তল্লাটে পর্যটন দপ্তরের তোরণ থাকবে। রাস্তাঘাট আলো দিয়ে বিশেষ ভাবে সাজানো হবে এবং সেই আলোকসজ্জায় তুলে ধরা হবে বাংলার পর্যটনকে। পর্যটন দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, বিদেশি পর্যটকরা কলকাতার দুর্গাপুজো দেখতে এলেও তাঁদের অনেকের ভ্রমণসূচিতে থাকে শৈল শহর দার্জিলিং।
শিলিগুড়ির উপর দিয়ে তাঁদের যেতে হয়। নিজেদের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য কলকাতার পাশাপাশি তাই শিলিগুড়িকেও রাজ্য সরকারের তরফে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।