সায়নী সাহা, বনগাঁ: হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপরে দেবীর আগমন একটা বছরের অপেক্ষার পর দেবী উমা আসছেন তার বাপের বাড়ি। তারই জন্য চরম ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে পূজা উদ্যোক্তাদের মধ্যে। এই হাতে গোনা কয়েকটা দিনের মধ্যেই প্রতিমা তৈরির ব্যাস্ততায় মেতে উঠেছেন সকল মৃৎ শিল্পীরা। বনগাঁর কুমোর পাড়া সহ জেলায় জেলায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরাও।আর এই মৃৎশিল্পীর কথা বলতেই মাথায় আসে যাদের নাম কার্তিক পাল ,মুক্তি পাল গণেশ পাল ও সুধীর পাল এর মতো কিংবদন্তি মৃৎশিল্পীদের কথা। দেখুন ভিডিও

দুর্গাপুজোর প্রস্তুতির মধ্যেই একটা অভাবনীয় কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে বনগাঁ হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র ঋক ৷

বাড়িতে বসেই সে বানিয়ে ফেলেছে আড়াই ফুট এর দুর্গা মূর্তি সঙ্গে রয়েছে লক্ষ্মী,সরস্বতী, কার্তিক ,গণেশ। তার এত সুন্দর শিল্পকলা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসতেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।

ছোট থেকেই পরিবারের সকলের সঙ্গে বাড়ির সামনে মন্ডপে দুর্গা পুজোর অঞ্জলি দিত এই ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। ঠাকুরের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত এই ভাবুক ক্ষুদে শিল্পী। মাঝেমাঝেই বাবার কাছে বায়না করত “কুমোরটুলি যাব, ঠাকুর বানানো দেখব” এবং তার বাবা তার সেই বায়না রাখতেন।মন দিয়ে সেখানে কীভাবে কারিগররা মা দুর্গাকে মৃন্ময়ী থেকে চিন্ময়ী রূপ দিচ্ছেন তা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখত ঋক। সেই থেকেই মাথায় ঢুকে ছিল যে নিজেই মূর্তি বানাবো এবার। তাই বাবা-মার বকুনি খেয়ে ও সে নিজের সে স্বপ্ন সফল করলো বনগাঁ হাই স্কুলেরএর ষষ্ঠ শ্রেণীর এই ছাত্র।

তার পড়ার ঘরের এক পাশেই আড়াই ফুট এর দুর্গা মা অবস্থান করছেন।মূর্তিতে তুলির টান দিতে দিতেই ঋক আরও জানালো যে, সে যখন আরো ছোট ছিল তখন থেকেই তার ইচ্ছা ছিল সে প্রতিমা বানাবে। এর আগেও সরস্বতী , শিব,কালী ঠাকুরের প্রতিমাও বানিয়েছিল। এমনকি গত বছরও দুর্গা ঠাকুরের মূর্তি বানিয়ে ছিল ঋক। তবে সেক্ষেত্রে তার বাবাও ঠাকুমা সাহায্য করেছিলেন এবং প্রতিমা তৈরীর সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে তাঁরাই সাহায্য করেছিলেন।ঋকের কথায় ঠাকুমার ইচ্ছা পূরণেই সে দুৰ্গা গড়ছে এবারও৷

লকডাউনের সময় স্কুল বন্ধ তাই বাড়িতে বসে অনলাইনে পড়াশোনা সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিমা তৈরীর কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছে ঋক। এবছর রথযাত্রার পর থেকে কাঠামো তৈরীর মধ্যে দিয়ে ঋক মা দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছিল।

ঋকের ঠাকুমা মায়া দাস জানালেন, বাড়িতে বসেই ঋক প্রতিমা তৈরীর কাজ করছে এবং তা শেষও হতে চলেছে। গতবছর তার বাড়ির পাশের মন্দিরের মন্ডপে পুজোতে তার তৈরি ঠাকুরকেও পুজো করা হয়েছিল। এ বছরও সেই মন্ডপে মা দুর্গার সঙ্গে তাঁর তৈরি করা মা দুর্গার প্রতিমা পুজো করা হবে। তার ইচ্ছা ভবিষ্যতে সে আরো ভালো করে প্রতিমা তৈরি করবে। তার এই বিরল প্রতিভায় তার পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত গর্বিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here