কলকাতা জুনিয়র ডাক্তারদের ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশের পরই ধর্মতলায় উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন মানুষ। সময়ের আগেই কার্যত শুরু হয়ে গেছে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। হাইকোর্টের নির্দেশের পরপরই রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সব ব্যারিকেড। লোহার শিকলের জায়গা হয়েছে ফুটপাতে। রাস্তায় প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন সকলে। বাজছে ঢাকও। দেখুন ভিডিও
স্লোগানে, গানে, নাচে মুখর রাজপথ। গাওয়া হচ্ছে শিকল ভাঙার গান। প্রতিবাদের এই মিছিলে শামিল হয়েছেন বহু মানুষ। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘যত দিন না বিচার পাচ্ছি, আমাদের কার্নিভাল চলবে।’’ আর এক আন্দোলনকারী বললেন, ‘‘এর চেয়ে বড় কার্নিভাল আর কিছু হয় না। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল আমাদের কার্নিভালে আসা।’’
কার্নিভালের অনুমতি দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদেরও কিছু শর্ত দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বলা হয়েছে, কত মানুষের জমায়েত হবে তা কলকাতা পুলিশকে জানাতে হবে। একই সঙ্গে, কোনও ভাবেই রানি রাসমণি রোড এলাকার বাইরে যেতে পারবে না তাঁরা। ব্যারিকেডের ভেতরেই থাকতে হবে।
এতএব কার্নিভালের রুট থেকে সব ব্যারিকেড তুলে দেওয়া হলেও পুজোর কার্নিভালের রুট এবং দ্রোহের কার্নিভালের রুটের মাঝে ব্যারিকেড রাখা হয়েছে। সেটা টপকাতে পারবেন না দ্রোহের কার্নিভালে অংশ নেওয়া মানুষ। হাইকোর্টের বিচারপতি রবি কৃষাণ কাপুরের বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে কার্নিভাল করতে হবে।
বিকেল ৪টে থেকে এই কার্নিভাল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ আসার পরই কার্যত মানুষ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের রাস্তায় নেমে যান। ঢাক-ঢোল বাজতে শুরু করে, প্রতিবাদের প্ল্যাকার্ড-ব্যানার নিয়ে নাচতে থাকেন। নির্ধারিত রুটেই জুনিয়র ডাক্তারদের এই কর্মসূচি হচ্ছে।
হাইকোর্টের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদনও করেছিলেন রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের জারি করা ১৪৪ (১৬৩) ধারাও খারিজ করে দিয়েছে আদালত। আর তারপরই রানি রাসমণি রোডে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সমস্ত ব্যারিকেড। ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে রাস্তা।
রাজ্যের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়েছিল, ডাক্তারদের এই কার্নিভালের জন্য গন্ডগোল হতে পারে। আর পুজোর কার্নিভাল দেখার জন্য বহু দেশ থেকে মানুষ এখানে আসেন। তাই কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে জন্যই পুলিশ ১৬৩ ধারা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়।
এজি অবশ্য জানিয়েছিলেন, দ্রোহের কার্নিভালের বিরোধিতা তাঁরা করছেন না। তবে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি কার্নিভালের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। বুধবার লক্ষ্মীপুজো হলেও কার্নিভাল হতে পারে তাঁদের, এই প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের আর্জিতে গুরুত্ব দেয়নি।