দেশের সময়: ভোটের ফল প্রকাশের পরই বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহের আগুন। দিলীপ ঘোষ, সৌমিত্র খাঁ থেকে জগন্নাথ সরকার। ক্রমেই বাড়ছে বিদ্রোহীর সংখ্যা। কেন বাংলায় বারোটি আসনে আটকে গেল বিজেপি, এর দায় কার তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। একইসঙ্গে প্রকাশ হয়ে পড়েছে বাংলায় বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা।
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজে স্বীকার করেছেন, বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রে বুথে কর্মী খুঁজে পাওয়া যায়নি। পোলিং এজেন্ট করার জন্য লোক খুঁজতে কালঘাম ছুটেছে। দিলীপের এই মন্তব্যের পরই প্রশ্ন উঠেছে, এই যদি সংগঠনের হাল হয়, তাহলে কোন ভরসায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলায় ৩৫টি আসনের স্বপ্ন দেখেছিল।
পাশাপাশি এ প্রশ্ন উঠছে, দিলীপ ঘোষকে কেন মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে বর্ধমান দুর্গাপুর এর মতো আনকোরা আসনে একেবারে শেষ মুহূর্তে প্রার্থী করা হল। রায়গঞ্জ থেকেই বা কেন দেবশ্রী চৌধুরীকে সরিয়ে আনা হল কলকাতা দক্ষিণে তাহলে কি তাঁদের হারানোর জন্যই এই আসন বদল?
গোটা বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ সংঘ পরিবার। বর্তমানে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব যে পুরোপুরি অসফল সে ব্যাপারে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিজেপির অনেক নেতাকর্মী। আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপিতে বদল এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
গেরুয়া শিবের সূত্রের খবর, মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই বিজেপিতে রদবদল শুরু হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে আবার আনা হতে পারে দিলীপ ঘোষকে।
একইসঙ্গে গুরুত্ব কমতে পারে শুভেন্দু অধিকারীর। কারণ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হয়েও তিনি শুধুমাত্র মেদিনীপুর এই আটকে পড়েছেন। মেদিনীপুরের দুটি আসনে দলের প্রার্থীকে জেতানো ছাড়া গোটা রাজ্যে তাঁর তেমন কোন সাফল্য চোখে পড়ার মতো নয়।
এদিকে রাজ্য বিজেপিতে রদবদলের পাশাপাশি ঢালাও রদবদল হতে পারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও। সেক্ষেত্রে বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার সম্প্রসারিত মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে এ মাসেই। নতুন করে তাঁর মেয়াদকাল আর বাড়ানো হবে না বলেই বিজেপি সূত্রের খবর।
উত্তরপ্রদেশেও বিজেপির বিজয় রথ মুখ থুবড়ে পড়েছে। যোগী রাজ্যে অখিলেশ ও রাহুলের ব্রিগেড ধরাশায়ী করে দিয়েছে পদ্মপার্টিকে। ফলে সেখানেও বিজেপিতে খোলনলচে বদলানোর কাজ শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে বলে খবর। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের জুন মালিয়া।
ফলে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। সেক্ষেত্রে ওই বিধানসভা আসনে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করে জিতিয়ে আনার চেষ্টা করা হতে পারে বলেও মনে করছে বিজেপির একাংশ। কিন্তু দলের ওই প্রস্তাবে দিলীপ ঘোষ শেষ পর্যন্ত রাজি হন কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।