পিয়ালী মুখার্জি : দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে চলেছে। এবার এ রাজ্যেও উদ্বোধনের অপেক্ষায় মেরিন ড্রাইভ। আরব সাগরের তীরের মুম্বইয়ের ধাঁচে এক টুকরো মেরিন ড্রাইভের স্বাদ শীঘ্রই পেতে চলেছেন এ রাজ্যের পর্যটকেরা। দিঘা বেড়াতে গেলে কাঁথি থেকে সমুদ্রের জলরাশি দেখতে দেখতে সাগর কিনারের ওই রাস্তা ধরে পর্যটকেরা সেখানে পৌঁছে যাবেন। র্মেরিন ড্রাইভের মজা নিতে পর্যটকদের আর যেতে হবে না মুম্বইয়ের আরব সাগরের পাড়ে ।

রাজ্যবাসীর কাছে এ এক বড় পাওনা। পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়া এক বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। এর মাধ্যমে সৈকত শহরের পর্যটন ক্ষেত্রে এক নয়া দিগন্ত খুলে যাবে বলেই মত তাঁদের। সৈকত সরণি ধরে উদয়পুর থেকে নিউ দিঘা, ওল্ড দিঘা, দিঘা মোহনা, নায়েকালী, শঙ্করপুর, জলধা, তাজপুর, মন্দারমণি এবং শৌলা হয়ে কাঁথি পৌঁছানো শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা।

দিঘা থেকে মন্দারমণি দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাওয়া যাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বপ্নের প্রকল্পের সাহায্যে। রইল দিঘার মেরিন ড্রাইভ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য:

দিঘা থেকে মন্দারমণি পর্যন্ত চোখধাঁধানো মেরিন ড্রাইভ তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ২০১৫ সালে দিঘায় মেরিন ড্রাইভের পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম দিয়েছিলেন ‘সৈকত সরণি’। এই প্রোজেক্টে বরাদ্দ হয়েছিল ৭০ কোটি টাকা।

মুম্বইয়ের ধাঁচে তৈরি এই মেরিন ড্রাইভ ৩০ কিলোমিটার লম্বা। মুম্বইতে যে মেরিন ড্রাইভ আছে তার দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ কিলোমিটার।

দিঘা থেকে শঙ্করপুর হয়ে তাজপুর ছুঁয়ে বাংলার মেরিন ড্রাইভ সোজা পৌঁছে দেবে মন্দারমণিতে। সমুদ্রের ধার ঘেঁষে মসৃণ ঝাঁ চকচকে এই রাস্তা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে। মেরিন ড্রাইভ বেয়ে সমুদ্রের রোমাঞ্চ ছুঁতে পারবেন পর্যটকরা।

শুধু সমুদ্র নয়, ঝাউবনের সবুজ হাতছানি, সুবিস্তৃত জলাভূমিতে হরেক মাছের চাষ আর রঙবেরঙের পাখি—সব মিলিয়ে পর্যটকদের জন্য সৌন্দর্যের ডালি সাজাচ্ছে মেরিন ড্রাইভ।

গত বছর ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের সময় মেরিন ড্রাইভের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। দুর্যোগ কাটিয়ে দ্রুতগতিতে ফের কাজ শুরু হয়েছে। মেরিন ড্রাইভের দায়িত্বে আছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ।

দিঘার মেরিন ড্রাইভ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও চালু হয়নি। তবে কাজ প্রায় শেষের দিকে, খুব শিগগিরই এর উদ্বোধন হবে।

উল্লেখ্য, গত এক দশকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সেজেছে দিঘা। এখন ‘সৈকত সরণি তৈরি হলে তা দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণির পর্যটনের মানকে অনেকটা এগিয়ে দেবে। পাশাপাশি, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সংলগ্ন এলাকাবাসীর জীবনযাত্রার মানও উন্নত হবে বলে আশা জেলা প্রশাসনের।

এমনিতেই, দিঘায় রোপওয়ে, টয় ট্রেন, কুমির পার্ক, চিড়িয়াখানা থেকে বিনোদনের নানা সম্ভার তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। এর পর দিঘা থেকে মন্দারমণি প্রায় ৩০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই মেরিন ড্রাইভ চালু হয়ে গেলে সমুদ্র তীরবর্তী বিস্তীর্ণ পর্যটন কেন্দ্রের বাণিজ্য অনেকটাই প্রাণ ফিরে পাবে বলে মনে করছেন এলাকার ব্যবসায়ীরাও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here