DIGHA: দীঘা মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনের আগেই পর্যটনে নতুন রূপে আকর্ষণ বাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের!রইল গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

0
1180

পিয়ালী মুখার্জী, দীঘা : বাঙালী সব সময় বেড়াতে ভালোবাসে। তার পায়ের তলায় সর্ষে। দু দিন ছুটি পেলেই ফুরসৎ খুঁজে বেরিয়ে পরে তার নিজস্ব “দিপুদা” র কাছে। অর্থাৎ দীঘা পুরী দার্জিলিং। হাতের কাছেই দীঘা, মাত্র ঘন্টা চারেকের পথ। আর যাতায়াতের সব রকম সুবিধা। ট্রেন বাস চার চাকা বা দুচাকায় পৌঁছে যাওয়া যায় খুব সহজেই। তাই কম খরচে পর্যটন হিসাবে দীঘা এখন খুবই জনপ্রিয়। তাই সমুদ্র দেখার ও জলে পা ভিজিয়ে আনন্দে মেতে ওঠার অন্যতম স্থান এখন এটি।

পর্যটনের এই জনপ্রিয়তা কে টানতেই দীঘায় রয়েছে প্রচুর হোটেল, লজ ও রেস্টুরেন্ট বিভিন্ন মানের। নতুন নতুন অনেক হোটেল এখন গড়ে উঠছে নিউ দীঘা ও ওল্ড দীঘায় দুদিনের শান্তির আস্তানা হিসাবে।

তেমনি এক নতুন ঠিকানা হলো নিউ দীঘার হোটেল ব্রাইটন (Hotel Brighton ) ৷ হেলিপ্যাড এর খুব কাছেই।

যারা কোলাহল থেকে একটু দূরে নিরিবিলিতে থাকতে চান তাদের জন্য আদর্শ। এর কর্নধার দিব্যেন্দু দলাই।স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় আইনজীবী। তাঁর এই হোটেল (Hotel Brighton ) গড়ার পরিকল্পনা। দিব্যেন্দু বাবু জানান, তিনি নিজের হাতেই সাজিয়েছেন তাঁর এইস্বপ্নের হোটেলেটি৷

সমুদ্র থেকে কিছুটা দূরে এই হোটেল হতে পারে আপনারও দু দিনের অস্থায়ী ঠিকানা।

জুলাই মাসে এর উদ্বোধন হয়েছে যা বাইরে থেকেই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। গ্রাউন্ড ফ্লোরে রয়েছে রিসেপশন ও কিচেন। ওপরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলে থাকার বন্দোবস্ত। ঝকঝকে ঘর, মানানসই আসবাব, সাথে ব্যালকনি ও বাথরুম। রযেছে আধুনিক লিফট-এর ব্যবস্থা ৷

এখানে হোটেল ম্যানেজার একজন চনমনে যুবক বাপ্পা থেকে রাধুনি সজ্ঞু সহ কর্মীদের আন্তরিক ব্যাবহার আতিথেয়তা আপনাকে মুগ্ধ করবে। হোটেলের উদ্বোধন জুলাই এ হলেও ডাইনিং এর উদ্বোধন হলো গত পয়লা আগস্ট। অপূর্ব স্বাদের বিভিন্ন পদে সাজানো প্লেটে বাঙালীর ষোলো আনা রসনা তৃপ্তি হবেই। এখন ভরা বর্ষার মরসুমে দীঘার টাটকা ইলিশ দিয়ে বানানো পদ আপনার মুখে লেগে থাকবে।

ভরা শ্রবণে দীঘার পর্যটনে পৌষ মাস দেখা গেলো মেরিন ড্রাইভে গিয়ে।

সমুদ্র সৈকতে উপচে পড়ছে মানুষের ঢল। বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় সেখানে। অজস্র দোকান তাদের পসরা সাজিয়ে বসে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। রয়েছে ঘর সাজানো থেকে নিজেকে সাজানোর সমস্ত আয়োজন। নানান স্বাদের খাবার দাবার। স্থানীয় মানুষের বিভিন্ন ভাবে রুজি রোজকারের মাধ্যম হয়েছে এই সৈকত পর্যটন কে ঘিরে। তাই আর দেরি কেন? সপ্তাহঅন্তের ছুটি তে বেরিয়ে পড়ুন আর ঘুরে আসুন নতুন রূপের দীঘা থেকে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে চলেছে। এবার এ রাজ্যেও উদ্বোধনের অপেক্ষায় মেরিন ড্রাইভ। আরব সাগরের তীরের মুম্বইয়ের ধাঁচে এক টুকরো মেরিন ড্রাইভের স্বাদ শীঘ্রই পেতে চলেছেন এ রাজ্যের পর্যটকেরা। দিঘা বেড়াতে গেলে কাঁথি থেকে সমুদ্রের জলরাশি দেখতে দেখতে সাগর কিনারের ওই রাস্তা ধরে পর্যটকেরা সেখানে পৌঁছে যাবেন। র্মেরিন ড্রাইভের মজা নিতে পর্যটকদের আর যেতে হবে না মুম্বইয়ের আরব সাগরের পাড়ে ।

রাজ্যবাসীর কাছে এ এক বড় পাওনা। পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়া এক বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। এর মাধ্যমে সৈকত শহরের পর্যটন ক্ষেত্রে এক নয়া দিগন্ত খুলে যাবে বলেই মত তাঁদের। সৈকত সরণি ধরে উদয়পুর থেকে নিউ দিঘা, ওল্ড দিঘা, দিঘা মোহনা, নায়েকালী, শঙ্করপুর, জলধা, তাজপুর, মন্দারমণি এবং শৌলা হয়ে কাঁথি পৌঁছানো শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা।

দিঘা থেকে মন্দারমণি দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাওয়া যাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বপ্নের প্রকল্পের সাহায্যে।

রইল দিঘার মেরিন ড্রাইভ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য:

দিঘা থেকে মন্দারমণি পর্যন্ত চোখধাঁধানো মেরিন ড্রাইভ তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ২০১৫ সালে দিঘায় মেরিন ড্রাইভের পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম দিয়েছিলেন ‘সৈকত সরণি’। এই প্রোজেক্টে বরাদ্দ হয়েছিল ৭০ কোটি টাকা।

মুম্বইয়ের ধাঁচে তৈরি এই মেরিন ড্রাইভ ৩০ কিলোমিটার লম্বা। মুম্বইতে যে মেরিন ড্রাইভ আছে তার দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ কিলোমিটার।

দিঘা থেকে শঙ্করপুর হয়ে তাজপুর ছুঁয়ে বাংলার মেরিন ড্রাইভ সোজা পৌঁছে দেবে মন্দারমণিতে। সমুদ্রের ধার ঘেঁষে মসৃণ ঝাঁ চকচকে এই রাস্তা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে। মেরিন ড্রাইভ বেয়ে সমুদ্রের রোমাঞ্চ ছুঁতে পারবেন পর্যটকরা।

শুধু সমুদ্র নয়, ঝাউবনের সবুজ হাতছানি, সুবিস্তৃত জলাভূমিতে হরেক মাছের চাষ আর রঙবেরঙের পাখি—সব মিলিয়ে পর্যটকদের জন্য সৌন্দর্যের ডালি সাজাচ্ছে মেরিন ড্রাইভ।

গত বছর ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের সময় মেরিন ড্রাইভের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। দুর্যোগ কাটিয়ে দ্রুতগতিতে ফের কাজ শুরু হয়েছে। মেরিন ড্রাইভের দায়িত্বে আছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ।

দিঘার মেরিন ড্রাইভ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও চালু হয়নি। তবে কাজ প্রায় শেষের দিকে, খুব শিগগিরই এর উদ্বোধন হবে।

উল্লেখ্য, গত এক দশকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সেজেছে দিঘা। এখন ‘সৈকত সরণি তৈরি হলে তা দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণির পর্যটনের মানকে অনেকটা এগিয়ে দেবে। পাশাপাশি, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সংলগ্ন এলাকাবাসীর জীবনযাত্রার মানও উন্নত হবে বলে আশা জেলা প্রশাসনের।

এমনিতেই, দিঘায় রোপওয়ে, টয় ট্রেন, কুমির পার্ক, চিড়িয়াখানা থেকে বিনোদনের নানা সম্ভার তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। এর পর দিঘা থেকে মন্দারমণি প্রায় ৩০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই মেরিন ড্রাইভ চালু হয়ে গেলে সমুদ্র তীরবর্তী বিস্তীর্ণ পর্যটন কেন্দ্রের বাণিজ্য অনেকটাই প্রাণ ফিরে পাবে বলে মনে করছেন এলাকার ব্যবসায়ীরাও।

দীঘা ভ্রমণের ক্ষেত্রে ট্রেনের চাহিদা যখন ব্যাপক সেই সময় ভারতীয় রেলের তরফ থেকে ভ্রমণপিপাসুদের রয়েছে.সুখবর । যাত্রী চাহিদার কথা মাথায় রেখে ভারতীয় রেল পুনরায় চালু করলো কান্ডারী এক্সপ্রেস। পুরাতন জনপ্রিয় এই ট্রেনটি পুনরায় চালু করার পাশাপাশি অন্য রুটে আরও তিন জোড়া ট্রেন চালু করা হবে বলে জানানো হয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফ থেকে।

২২৮৯৭ হাওড়া দিঘা কাণ্ডারী এক্সপ্রেস : প্রতিদিন দুপুর ২:২৫ মিনিটে হাওড়া থেকে ছাড়বে এবং বিকেল ৫:৫০ মিনিটে দিঘায় পৌঁছাবে।

২২৮৯৮ দিঘা হাওড়া কাণ্ডারী এক্সপ্রেস: প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬:২৫ মিনিটে দিঘা থেকে ছাড়বে এবং রাত ৯:৪৫ মিনিটে হাওড়ায় পৌঁছাবে।

অন্য যে তিনটি ট্রেন চালু হতে চলেছে সেই ট্রেন তিনটি হল

১৮০০৯ সাঁতরাগাছি আজমেঢ় এক্সপ্রস : আগামী ৫ অগস্ট থেকে প্রতি শুক্রবার দুপুর ১ টায় সাঁতরাগাছি থেকে ছাড়বে। তৃতীয় দিন ভোর ৪ টে ৫৫ মিনিটে আজমেঢ় পৌঁছাবে।

১৮০১০ আজমেঢ় সাঁতরাগাছি এক্সপ্রেস : ৭ অগস্ট থেকে পরিষেবা শুরু হবে। প্রতি রবিবার রাত ১১:৩০ মিনিটে আজমেঢ় থেকে ছাড়বে। তৃতীয় দিন দুপুর ২:৩০ মিনিটে সাঁতরাগাছিতে পৌঁছাবে।

২০৮২৮ সাঁতরাগাছি জব্বলপুর হামসফর একপ্রেস : ৩ অগস্ট থেকে চলবে এই ট্রেনটি। প্রতি বুধবার রাত ৮:৩৫ মিনিটে সাঁতরাগাছি থেকে ছাড়বে এবং জব্বলপুরে পৌঁছাবে পর দিন দুপুর ৩ টেয়।

২০৮২৭ জব্বলপুর সাঁতরাগাছি হামসফর একপ্রেস : ৪ অগস্ট থেকে শুরু হবে। প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ৮:৩৫ মিনিটে জব্বলপুর থেকে ছাড়বে। পরদিন দুপুর ৩:৩০ মিনিটে সাঁতরাগাছিতে পৌঁছাবে।

২২৮৩০ শালিমার ভূজ এক্সপ্রেস : আগামী ৬ অগস্ট থেকে শুরু হবে। প্রতি শনিবার হাওড়া থেকে ছাড়বে রাত ৮:২০ মিনিটে এবং তৃতীয় দিন দুপুর ২:৪৫ মিনিটে ভূজে পৌঁছাবে।

২২৮২৯ ভূজ শালিমার এক্সপ্রেস : প্রতি মঙ্গলবার ভূজ থেকে দুপুর ৩:০৫ মিনিটে ছাড়বে। তৃতীয় দিন সকাল ৯:৩০ মিনিটে শালিমারে পৌঁছাবে ৷

Previous articleHooghly: কলকাতা থেকে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরত্ব, পায়ে হেঁটে লাদাখের পথে রওনা দিলেন চন্দননগরের যুবক
Next articleTMC :’জনপ্রতিনিধির কোনও দল হয় না,আমি তৃণমূলেরই’.. দাবি বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ-এর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here