দেশের সময়, :সপ্তাহের শুরুটা হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি দিয়ে। শেষটাতেও কি বৃষ্টি পাবে বাংলা? সপ্তাহান্তে কি একটু স্বস্তি পাওয়া যাবে, এই প্রশ্নই করছেন বাংলার মানুষ।
সাইক্লোন রিমালের বা রেমালের আগমন নিয়ে ইতিমধ্যেই উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। কবে তৈরি হবে রেমাল, আদৌ ঘূর্ণিঝড় তৈরির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কি ? উত্তর দিল আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ইতিমধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি পরিস্থিতি। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের সেটি অবস্থান করছে। ২২ মে নাগাদ, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত থেকে নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে।
আবহবিদদের ধারণা, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে সেই নিম্নচাপ। শুক্রবার সকালের মধ্যেই সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তা থেকে অতি গভীর নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। তার ফলে আবহাওয়ার বড় পরিবর্তন আসতে পারে। ভারী বৃষ্টিপাত থেকে, ঝোড়ো হাওয়া বইবার সম্ভাবনা থাকছে।তবে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে কিনা, কোন পথে এগোবে সাইক্লোন, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে।
আবহবিদরা মনে করছেন, যদি এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তবে বাংলাদেশের বরিশালে ল্যান্ডফল হতে পারে। তবে এই মডেলের ল্যান্ডফল নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। মৌসমভবন মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গে এর ততটা প্রভাব নাও পড়তে পারে। তবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কিছুই।
এখনও পর্যন্ত দিল্লির মৌসম ভবন থেকে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। অতি গভীর নিম্নচাপ হওয়ার পর এটির দিক ও গতি পরিবর্তন হতে পারে। নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে সিস্টেম টিকে। বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া রিসার্চ মডিউল দাবি করছে এই সিস্টেমের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
যদি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় তবে গ্লোবাল বে অফ বেঙ্গল মডেল অনুয়ায়ী এটির নামকরণ হবে রিমেল। নামটি ওমানের দেওয়া। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হতে শুরু করবে। বাড়বে ঢেউয়ের উচ্চতা। বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে মৎস্যজীবীদের উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট বলছে, শুধু ঝড়-বৃষ্টি নয়, রীতিমতো ভারী বৃষ্টি হবে বাংলায়। কলকাতা সহ একাধিক জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সোমবার সকাল থেকেই মেঘলা ছিল আকাশ। কলকাতা ও আশপাশের জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হয়েছে এদিন। আর এবার নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি বাড়বে আরও।
আগামী শুক্রবার থেকে উপকূলের দুই জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তৈরি হতে পারে নিম্নচাপ। বুধবার বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলেই বৃষ্টি বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। আর সেই নিম্নচাপ শুক্রবারের মধ্যে গভীর নিম্নচাপের রূপ নিতে পারে।
নিম্নচাপের চূড়ান্ত অভিমুখ এখনও স্পষ্ট করেনি আলিপুর। তবে অনুকূল বায়ুপ্রবাহে বৃষ্টি বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় হতে পারে কি না, সেদিকেও নজর রাখছে আবহাওয়া দফতর।
এপ্রিল মাসে কার্যত জ্বলে-পুড়ে গিয়েছে বাংলা। তবে মে মাস থেকে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি। আর বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রার পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখযোগ্যভাবে। তাপপ্রবাহের সম্ভাবনাও কমছে। তাই বৃষ্টির দিকেই তাকিয়ে আছে রাজ্যবাসী।