দেশের সময়, ওয়েবডেস্কঃ নভেম্বরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে বেশ খানিকটা ঠান্ডা পড়েছিল। গরম জামা বেরিয়ে আসছিল আলমারি থেকে। কিন্তু তারপরেই ডিসেম্বরে শহরে শীত গায়েব হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় তৈরির আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল হাওয়া অফিস। সেই আশঙ্কা সত্যি করে বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ যা ইতিমধ্যেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামী ৩ ডিসেম্বর তা ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমে পরিণত হতে চলেছে বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি নিম্নচাপ ইতিমধ্যেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে পুদুচেরি থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পূর্বে অবস্থান করছে এই গভীর নিম্নচাপ। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, ৩ ডিসেম্বর বঙ্গোপসাগরের উপরে তৈরি হবে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম।
ধীরে ধীরে উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড়টি আগামী ৪ ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ ও সংলগ্ন তামিলনাড়ুর উত্তর উপকূলে আছড়ে পড়বে। আপাতত যা পরিস্থিতি তাতে নেল্লোর ও মছিলিপত্তনমের মাঝে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। ল্যান্ডফলের সময়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ, শনিবার থেকে তামিলনাড়ুর উত্তর উপকূল ও পুদুচেরিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ৩ ডিসেম্বর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে। অন্ধ্রপ্রদেশের অধিকাংশ জায়গাতেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ৫ ডিসেম্বর অবধি বৃষ্টিপাত চলবে বলে জানানো হয়েছে মৌসম ভবনের তরফে। নিম্নচাপের প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর পাশাপাশি ওড়িশাতেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ৪ ডিসেম্বর থেকে ওড়িশার দক্ষিণ উপকূল ও সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন ১২টি জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
আলিপুর সূত্রে খবর, অত্যন্ত দ্রুত গতি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপটি। আগামীকাল অর্থাৎ ২ তারিখ সেটি ঘূর্ণঝড় মিগজাউমে পরিণত হবে। তারপরের দিন তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে তাণ্ডব শুরু করবে সেটি। ৫ তারিখ, অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরে ল্যান্ডফল হবে মিগজাউমের। সেই সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বচ্চ ৯০-১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলবর্তী এলাকায় সোমবার থেকেই ভারী বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। মঙ্গলবার ল্যান্ডফলের সময় ওড়িশাতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
যদিও আলিপুর সূত্রে খবর, কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। দুই মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং বাঁকুড়া জেলায় রবিবার বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। আপাতত তাপমাত্রা একই রকম থাকবে। উত্তরবঙ্গেও আপাতত নতুন করে পারদ পতনের সম্ভাবনা নেই। ফলে জাঁকিয়ে শীত এখনই যে পড়ছে না, তা স্পষ্ট।