দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ জাঁকিয়ে শীত না পড়লেও, পাতা ঝরার মরসুমের আমেজ হয়েছে শুরু। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় তাপমাত্রা নেমেছে ১৫ ডিগ্রির নিচে। কিন্তু শীত কবে পড়বে আরও ভালভাবে? প্রশ্নটা সকলের।
এদিকে শীত পড়তে না পড়তেই বাংলায় আবার ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা জানাল মৌসম ভবন। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে উত্তর আন্দামান সাগর এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্ত শক্তি বাড়িয়ে তৈরি করেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আবার একটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দফতর।
বুধবার এই পূর্বাভাস সামনে আসার পরেই ফের বঙ্গোপসাগরে নতুন করে কোন ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে সে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘ফেনজ়ল’ নামে। আগের ঘূর্ণিঝড়ের নাম (ডেনা) ছিল কাতারের দেওয়া। ‘ফেনজ়ল’ নামকরণ করেছে সৌদি আরব।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, শীতের আগেই আবারও নিম্নচাপ দেখা দিতে পারে। ইতিমধ্যেই একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। আর যদি ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হয় , তাহলে আবারও আবহাওয়ায় বদল আসতে পারে।
কিন্তু এই ঘূর্ণাবর্ত থেকে যদি নিম্নচাপও তৈরি হয় ও তার থেকে ঘূর্ণিঝড় , তাহলে আবারও কি উথালপাথাল হবে বাংলা ? কী বলছে আবহাওয়া দফতর ?
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, দক্ষিণ আন্দামানের সাগর সংলগ্ন এলাকায় একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে এটির অভিমুখ হবে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ।
আবহাওয়া দফতরের ধারণা, ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়ে তারপর তা ২৩ নভেম্বর শনিবার নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। সেক্ষেত্রে নিম্নচাপটি তৈরি হবে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় ।
আইএমডি জানিয়েছে, ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর অবধি তামিলনাড়ু উপকূলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। এদিকে আইএমডি জানিয়েছে, ২৭ তারিখ ল্যান্ডফলের পর ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারাবে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, এর জেরে ২১ থেকে ২৪ নভেম্বর অবধি হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। আর ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর অবধি ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে তামিলনাড়ুর দক্ষিণাংশে। হালকা থেকে মাঝারি বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা পুডুচেরি, কেরলে। অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলেও থাকছে বৃষ্টির সম্ভাবনা।
তারপর এই সিস্টেমটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর অভিমুখ থাকবে শ্রীলঙ্কা ও তামিলনাড়ু উপকূল। ফলে বাংলায় এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
যদি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়ে তা ধাপে ধাপে ঝড় হিসেবে আছড়ে পড়লে নাম হতে পারে ফেঙ্গল বা ফেঙ্গাল বা ফেনজল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে ১১ রাজ্যে।
আবহবিদরা মনে করেন, অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি থাকে।
এই আবহে বঙ্গোপসাগরে ফের ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়া নতুন কিছু নয়। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব যে রাজ্যের ওপর পড়ে , সেখানে শীতের পথে কাঁটা তৈরি হয়।
এই মুহূর্তে কলকাতার জন্য আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রার বড়সড় পরিবর্তন হবে না। সামান্য ওঠা নামা করতে পারে পারদ।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাংলায় পড়বে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। ডানার সময় প্রশাসন যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছিল। তবে ডানা বঙ্গে ল্যান্ডফল না করায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে টানা দু’দিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছিল।