দেশের সময় : ‘দানা’র ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ স্থলভাগে ঢুকতে শুরু করেছিল ঘূর্ণিঝড়। সারা রাত ধরে সেই প্রক্রিয়া চলে। শুক্রবার ভোরে স্থলভাগ অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজ’ অর্থাৎ শেষ অংশ।

সোশাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ট্রেন্ডিং ‘সাইক্লোন টুরিজম’। অর্থাৎ ঝড় দেখতে উপকূল বা ল্যান্ডফল যেখানে হচ্ছে সেখানে ভিড় জমানো। আর এই জোয়ারে গা ভাসিয়ে প্রশাসনিক তৎপরতা সত্ত্বেও দেনা’র আতঙ্ক কাটতেই শুক্রববার সকালে সমুদ্রের পাড়ে ভিড় জমিয়েছেন পর্যটকরা। ঝড়ের দাপট দেখতে দিঘা-তাজপুর-মন্দারমণি থেকে পুরীর সমুদ্র সৈকতে জড়ো হয়েছিলেন একদল মানুষ। প্রবল ঢেউ, জলোচ্ছ্বাসকে সাক্ষী রাখতে সেলফি তোলার হিড়িক পড়েছে সমুদ্র সৈকতে।তাঁদের সেলফি তোলার হিড়িকও চোখে পড়ার মতো।

অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে ওড়িশায় কারও প্রাণহানি হয়নি। শুক্রবার সকালে দুর্যোগ-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এমনটাই জানালেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি। সকাল সাড়ে ৭টায় ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে ঢোকার প্রক্রিয়া (ল্যান্ডফল) শেষ হয়। ‘ল্যান্ডফলের’ এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “প্রশাসনিক নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কারণে কারও মৃত্যু হয়নি। সরকারের লক্ষ্য ছিল, আমরা কাউকে মারা যেত দেব না। আমরা কথা রাখতে পেরেছি।”

মাঝি জানান, প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলি থেকে অন্তত ৬ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ছ’লক্ষ মানুষের মধ্যে ছিলেন ৬০০০ সন্তানসম্ভবা মহিলাও। তাঁদের তড়িঘড়ি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হওয়া ১৬০০ জন প্রসূতি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি রুখতে আগেই ৮৩২২টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রেখেছিল ওড়িশা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে দুর্গতদের অন্তত ৬০০৮টি সেন্টারে রাখা হয়।

মাঝি জানান, প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলি থেকে অন্তত ৬ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ছ’লক্ষ মানুষের মধ্যে ছিলেন ৬০০০ সন্তানসম্ভবা মহিলাও। তাঁদের তড়িঘড়ি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হওয়া ১৬০০ জন প্রসূতি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি রুখতে আগেই ৮৩২২টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রেখেছিল ওড়িশা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে দুর্গতদের অন্তত ৬০০৮টি সেন্টারে রাখা হয়।

‘ল্যান্ডফল’ চলাকালীন ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। তবে সকালে ‘ল্যান্ডফল’ শেষ হওয়ার পর গতি কিছুটা কমেছে। বর্তমানে উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শক্তি হারিয়ে তা এখন ‘সাধারণ’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বিকেলের মধ্যে আরও কিছুটা শক্তিক্ষয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ‘দানা’।

‘দানা’-র জেরে বাংলায় সেভাবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেই প্রাথমিকভাবে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বৃহস্পতিবার রাতভর নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপকূলবর্তী জেলাগুলির মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরবে। শুক্রবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে দিঘা, রামনগর, মন্দারমণি, তাজপুরে। সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। উত্তাল সমুদ্রও। তবে পূর্ব মেদিনীপুরে বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। দেখুন ভিডিও

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও এ দিন সকাল থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। রাতে এই দুই জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বইলেও তা বেশিক্ষয় স্থায়ী হয়নি। তবে সকাল থেকেই সেখানে চলছে বৃষ্টিপাত। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, দুপুরের পর শক্তি হারাবে ‘দানা’। তবে শক্তি কমলেও পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা এবং বাঁকুড়াতে শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ঝোড়ো হাওয়া বইবার সম্ভাবনা কম। শনিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। শুক্রবারও মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

প্রশাসন ও উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের শঙ্কা ছিল, আমফান বা ইয়াসের মতো এবারও তছনছ হবে সবকিছু। কিন্তু তেমন বড় ক্ষয়ক্ষতি এখনও হয়নি বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। যে বিষয়টি স্বস্তি দিয়েছে সকলকেই।
