দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সূত্রের খবর, আগামীকাল এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই আলোচনার জন্য জেলা শাসক, পুলিশ সুপার, কমিশনার এবং সিআইডি ও আইবির উচ্চ পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে (CS Meeting) বসছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
আগামীকালের বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে সে বিষয়ে সরকারিভাবে কেউ মুখ না খুললেও সূত্রের খবর, আগামী দু’একদিনের মধ্যে ১০৮ পুরসভার চেয়ারম্যান এবং চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে।
এছাড়া ত্রিশঙ্কু পূরসিভাগুলিতে বোর্ড গঠন নিয়ে ভোটাভুটি হতে পারে। প্রশাসনের আশঙ্কা এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে ত্রিশঙ্কু পুর বোর্ডগুলি নিয়ে আশঙ্কা বেশি।
এছাড়া পদ নিয়ে বিবাদের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসন এবং শাসক দল তৃণমূলও। ষোলোআনা পুরসভাই শাসক দল দখল করেছে। শাসক। দলের অন্দরেও ক্ষমতা দখলের লড়াই আছে। সবমিলিয়ে গোটা রাজ্যে আগামী কয়দিন কড়া নজরদারি ও আইন শৃঙ্খলা কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব নবান্নের মনোভাব স্পষ্ট করে দেবেন পুলিশ প্রশাসনকে।রবিবারই ঝালদা ও পানিহাটির যথাক্রমে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলরের খুন হন। যা ঘিরে প্ৰশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়েও। পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস সমান সংখ্যক আসন জিতেছে। সেখানে দুই নির্দল প্রার্থী কংগ্রেসকে বোর্ড গড়তে সমর্থন দেবে বুঝেই তাঁর দলের কাউন্সিলরকে খুন করা হয়েছে বলে সোমবার অভিযোগ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
রবিবারই ঝালদা ও পানিহাটির যথাক্রমে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলরের খুন হন। যা ঘিরে প্ৰশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়েও। পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস সমান সংখ্যক আসন জিতেছে। সেখানে দুই নির্দল প্রার্থী কংগ্রেসকে বোর্ড গড়তে সমর্থন দেবে বুঝেই তাঁর দলের কাউন্সিলরকে খুন করা হয়েছে বলে সোমবার অভিযোগ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
কিন্তু পানিহাটিতে সেই পরিস্থিতি নেই। সেখানে ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩টি দখল করেছে তৃণমূল। বিজেপির অভিযোগ তার পরেও তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুন হতে হল দলের কোন্দলের কারণে।
সূত্রের খবর, কালকের বৈঠকে আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক পর্যালোচনার পাশাপাশি বিশেষভাবে প্রাধান্য পাবে পুর বোর্ড গঠন ঘিরে গোলমালের সম্ভাবনা নির্মূল করার বিষয়টি। ভার্চুয়ালি এই বৈঠক করবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।
প্রসঙ্গত, ১০৮ পুরসভায় নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে তৃণমূল। ফলাফল প্রকাশ হলেও এখনও পুরসভাগুলির চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হয়নি। এরই মধ্যে সোমবার বৈঠকে বসলেন মমতা ও অভিষেক। মূলত পুরসভাগুলির চেয়ারম্যান বাছাই নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি, আরও কিছু সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে বেশ কিছু ঘটনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরত্ব তৈরি হওয়ার ইঙ্গিত পেয়েছিলেন কেউ কেউ। প্রকাশ্যে ঘাসফুল শিবির মুখ না খুললেও, অভিষেক ও প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা বেশ স্পষ্ট। পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় থেকেই এই জটিলতা তৈরি হয়। তারপর এই প্রথমবার একান্ত বৈঠকে বসতে দেখা গেল দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সোমবার বিকেলে কালীঘাটে আধ ঘণ্টার বৈঠক হয় মমতা ও অভিষেকের। ঘাসফুল শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, পুরভোটে জয়ের পরও দলের অন্দরে কোথাও কোথাও জটিলতা তৈরি হয়েছে। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, একাধিক জেলায় পুরসভাগুলির চেয়ারম্যানদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, কোথাও কোথাও জটিলতা রয়েছে। আর সে সব নিয়েই মমতা ও অভিষেকের আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
যদিও সম্প্রতি নজরুল মঞ্চে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর দুজনকেই দেখা গিয়েছে, তবুও দীর্ঘদিন পর মমতা ও অভিষেকের এই বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
১২ ফেব্রুয়ারি দলের জাতীয় কর্মসমিতি গঠন করেছিলেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আপাতত তৃণমূলের সমস্ত সর্বভারতীয় পদ বিলোপ করা হল। নতুনভাবে পদ ঘোষণা করার কথা বলা হয়। এরপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোন পদ পাবেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। পরে অবশ্য দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয় অভিষেককে।