দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বালিগঞ্জে দলের প্রার্থী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাবুল সুপ্রিয়র নাম ঘোষণা করেন রবিবার সকালেই। আর ওইদিন বিকেলেই সেই চত্বরে প্রচারে নামেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের আসা একসময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকা বাবুল সুপ্রিয়। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির একটি মাঠে ক্রিকেট ম্যাচের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বাবুলের প্রচার। আজ ফের দেখা যায় তাঁকে দেওয়াল লিখনে ব্যস্ত। দেওয়ালে নিজে হাতে বাবুল আঁকলেন দলীয় চিহ্ন।

তাঁর পুরনো লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। এ নিয়ে সোমবার সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুললেন বাবুল সুপ্রিয় । একদিকে তিনি যেমন বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন তেমনই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।

এদিন প্রচারের শুরুতেও বাবুলের মুখে ছিল এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তাঁকে প্রার্থী করায় নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। বালিগঞ্জে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ব্যানার পড়েছে। তাতে লেখা, ‘বালিগঞ্জে  সবার প্রিয়, প্রগতি হাতে বাবুল সুপ্রিয়’। দেওয়ালে দলীয় প্রতীক জোড়াফুল আঁকতে আঁকতে বাবুল সুপ্রিয় সোমবার বলেন, “দিদি আমার উপর যে ভরসা-আস্থা দেখিয়েছেন তাতে আমি কৃতজ্ঞ।”

বাবুল সুপ্রিয় আরও বলেন, “আমি সর্বোতভাবে চেষ্টা করব তাঁর আস্থার মর্যাদা রাখতে। বিধায়কের দায়িত্ব বড় দায়িত্ব। এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন প্রবাদপ্রতীম সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তার মানে প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়ে যায় তাঁর মত নেতার কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়ানো। আমি আগেও বলেছিলাম, বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন। তাই আশা করছি, এবং চেষ্টা করব রেকর্ড মার্জিনে জেতার।

আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। বিজেপি তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে সেই কটাক্ষেরও জবাব দিলেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বাবুল। বললেন, “কে বহিরাগত! দেশের সর্বত্র শত্রুঘ্নজিকে সবাই চেনেন। কাশ্মীরে নামলেও মানুষ তাঁকে চেনেন আবার বিদেশে গেলেও মানুষ চেনে। তাই অন্য কারোর কথায় কান দিতে রাজি নই।” একইসঙ্গে শত্রুঘ্ন সিনহার ভূয়সী প্রংশসা করেন বাবুল। বলেন, “শত্রুঘ্নজিও বিজেপির মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ছিলেন। আমিও ছিলাম। আমাদের মেরুদণ্ড আছে। তাই সত্যি কথা বলেছি। দল ছাড়তে বলেছি।”

এদিনও যথারীতি বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও একহাত নেন বাবুল। তাঁর কটাক্ষ, দিলীপ ঘোষকে নিয়ে কিছু বলতে আমার রুচিতে বাঁধে। উনি তো সংবাদমাধ্যমের খোরাক। তবে এটা ওঁকে মনে রাখতে হবে, আমার পরে উনি রাজনীতিতে এসেছেন।” বাবুলের সমালোচনা করেছিলেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তাঁর প্রশংসা করে বাবুল বলেন. “বিজেপিতে যে ক’জন শিক্ষিত নেতা আছেন সুকান্ত তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ওঁর সমালোচনা আমার প্রেরণা।” এবার উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে তৃণমূলের জয় সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী তিনি। 

প্রসঙ্গত, সব ঠিক থাকলে আগামী ১২ এপ্রিল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সঙ্গে ভোট বালিগঞ্জ বিধানসভা  কেন্দ্রের। দু’টিই উপনির্বাচন। গণনা ১৬ এপ্রিল। আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয় পদত্যাগ করায় আসনটি ফাঁকা হয়। বালিগঞ্জ ফাঁকা হয় প্রাক্তন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার দু’টি কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করেন তৃণমূলনেত্রী ।

আসানসোলে ইতিমধ্যেই শত্রুঘ্ন সিনহার নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে। এবার বালিগঞ্জেও চললো প্রথম পর্যায়ের দেওয়াল লিখনের কাজ। হাত লাগলেন খোদ প্রার্থী, একদা বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকা বাবুল সুপ্রিয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here