দেশের সময়, বাগদা: সোনা সহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ সামগ্রীর পাচার করত সে। এই কাজে সিদ্ধহস্তছিল সে৷ কাঁটাতারের ওপারে একবার পাঠিয়ে দিতে পারলেই হল! আর এই কাজ করতে গিয়ে বহুবার ধরাও পড়েছে সে। সীমান্ত পাচারের কাজে দীর্ঘদিন ধরে হাত পাকিয়েছে সে।
এতটাই বেশি সীমান্ত পাচারের কাজে যুক্ত ছিল যে বিএসএফ জওয়ানদের নজর এড়িয়ে চলাটাই এখন দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। তার মুখ চিনে ফেলেছেন সীমান্তে প্রহরারত জওয়ানরাও। ফলে বেজায় সমস্যায় পড়েছে ওই পাচারকারী। কিন্তু তাতে তো থেমে থাকলে চলবে না!
একবার সীমান্ত পার করতে পারলেই মোটা টাকা। অতঃপর পাচারের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। তাতে খামতি দিলে আর্থিক লোভ সামলানো যাবে না। আর তাই এবার আর নিজে নয়, নিজের ১১ বছরের ছেলেকে দিয়ে সোনা পাচারের চেষ্টা করল ওই ব্যক্তি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জওয়ানদের তৎপরতায় ওই কিশোরকে সীমান্তে আটকে ফেলা সম্ভব হয়।
ওই কিশোরের কাছ থেকে গোটা বিষয়টি জানতে পেরে রীতিমত হতভম্ব সীমান্তরক্ষী বাহিনীরাও। ওই কিশোর জওয়ানদের জানিয়েছে, তাকে তার বাবা বলেছিল, সোনাগুলি সীমান্তের ওই পারে যদি না দিয়ে আসতে পারে, তাহলে তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেবে। শুধু তাই নয়, অনাথ আশ্রমেও ফেলে রেখে আসবে। সেই ভয়েই ওই পাচারের কাজ করতে রাজি হয়ে যায় ১১ বছরের কিশোর। সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, কিশোরের নিষ্পাপতার সুযোগ নিয়ে পাচারের চেষ্টার এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করা সম্ভব হয়েছে। কিশোরের থেকে মোট ৬৫.৪৮ লাখ টাকার ১১ টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে বিএসএফ। ঘটনাটি ঘটেছে বাগদার মধুপুর সীমান্তে।
ওই কিশোরকে আটক করার পরই স্থানীয় গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানকে ডেকে পাঠানো হয়। কিশোরের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে সেই পঞ্চায়েত প্রধানও রীতিমত হতভম্ব হয়ে যান। বিএসএফ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই কিশোর স্থানীয় হরিহরপুরের বাসিন্দা। তার বাবা কাঁটাতারের ওপারে কৃষি কাজ করতে যেত। সেখানেই তার সঙ্গে এক সোনা পাচারকারীর পরিচয় হয়।
শুধু সোনাই নয়, বিভিন্ন নিষিদ্ধ সামগ্রী ওই ব্যক্তি এপার থেকে বাংলাদেশের ওপারে থাকা পাচারকারীর কাছে সহজেই পাচার করত। বিনিময় মোটা টাকা এই কিশোরের বাবা পেত। তবে এই কাণ্ড ঘটাতে গিয়ে একাধিকবার ধরা পড়েছে সে। কিন্তু লোভ সামলাতে পারিনি। যে কারণে এবার নিজের ছেলেকেও বিপাকে ফেলে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তি। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিপুল পরিমাণ সোনা সহ কিশোরকে শুল্কদফতরের হাতে তুলে দিয়েছে।