দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গরমের তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে সকলেই চাইছিলেন কালবৈশাখী।আর সেই কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টিই এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বোরো ধান চাষিদের।

গত সপ্তাহে তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস করছিল গোটা দক্ষিণবঙ্গ। তারপর সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে হাওয়া বদল। ঝড়বৃষ্টি তো আছেই, এর মধ্যে আবার বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপও দানা বেঁধেছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, বৃষ্টি, ঝড়জল দক্ষিণবঙ্গে আপাতত চলবে। চলতি সপ্তাহের পুরোটাই এমন আবহাওয়া থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে প্রায়দিন ঝড়বৃষ্টিতে অবস্থা খারাপ হচ্ছে। বিঘের পর বিঘে জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোথাও পাকা ধান ঝরে পড়েছে, কোথাও ভেঙে গাছ লুটিয়ে পড়েছে জমিতে। অনেক জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেছে। সেখানে পাকা ধানের কল বেরোনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

যে সমস্ত জমিতে কাটা ধান পড়েছিল তাদের বেশ কিছু ধান উড়িয়ে নিয়ে চলে গেছে।   আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল, পুরশুড়া সব ব্লকেই একই ছবি। কোথাও বালতি দিয়ে জল বের করে ধান কাটা চলছে, আবার কোথাও জল থেকে ছেঁকে ধান তোলা হচ্ছে। মাটিতে নুয়ে পড়ায় যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটা যাচ্ছে না। ফলে মজুর লাগিয়ে অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে বলে জানালেন চাষিরা।

গোঘাটের বাবলু বিশ্বাস, বিমল পাল প্রমুখ চাষি জানালেন, যখন বৃষ্টি দরকার ছিল তখন হয়নি। জল কিনে চাষ করতে হয়েছে। আর এখন ধান তোলার সময় ঝড়বৃষ্টিতে সব কিছু ওলোটপালোট করে দিয়েছে। আলু চাষ গেছে, এবার বোরো ধানও গেল। একেবারে বিপজ্জনক অবস্থা। কীভাবে সংসার চলবে বুঝতে পারছি না। মহাজনদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে চাষ করা অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন।

প্রায় একই আশঙ্কার কথা জানালেন উত্তর২৪পরগনার ছয়ঘরিয়ার কালিয়ানী গ্রামের বাসিন্দা শঙ্কর হালদার, তারাপদ বারুই। নির্মল বিশ্বাস বলেন, ‘‌ধান ভালই হয়েছিল। কিন্তু এখন ঝড়বৃষ্টি হয়ে মাঠ থেকে তোলা যাচ্ছে না। চাষিদের সব শেষ করে দিচ্ছে। ১০ বিঘে জমির মধ্যে ৬ বিঘে জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছরও একই অবস্থা হয়েছিল। তবে গত বছর সরকার থেকে কিছু অনুদান পাওয়া গিয়েছিল। তাই এবারও যদি সরকার অনুদানের ব্যবস্থা করে তাহলে চাষিরা উপকৃত হবে৷না হলে সবাই শেষ হয়ে যাবে।’‌

আরও এক চাষি বলেন, ‘‌ ৫ বিঘে জমিতে ধানচাষ করেছি। তার সিকিভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। জলে পড়ে আছে। একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে চাষিদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ছে।’‌ যদিও জেলা কৃষি দপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, এই সময় ঝড়বৃষ্টি হবে এটাই স্বাভাবিক। চাষিদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। বেশিরভাগ চাষি ধান কেটে নিয়েছে। যারা কাটেনি তারা কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here