দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ চিনে করোনাভাইরাসের নতুন উপরূপ ‘বিএফ.৭’-এর দাপাদাপিতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে মাস্ক পরার আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার করোনা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই মাস্ক পরার বার্তা দিয়েছেন মোদী৷

বর্ষশেষের মুখে করোনার নয়া উপরূপ যে ভাবে চোখ রাঙাচ্ছে পড়শি দেশে, সেই প্রেক্ষিতে ভারতেও আবার মাস্ক পরার মতো কোভিডবিধি বাধ্যতামূলক করা হবে কি না, এ নিয়ে চর্চা চলছিল। চিন-সহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে যে ভাবে দাপট দেখাচ্ছে সংক্রমণ, তাতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে বৃহস্পতিবার আবার দেশবাসীকে মাস্ক পরার জন্য আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

সেই সঙ্গে করোনা পরীক্ষা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে যাতে জোর দেওয়া হয়, রাজ্যগুলিকে সেই বার্তাও মোদী দিয়েছেন। ক’দিন বাদেই রয়েছে বড়দিন। তার পরই রয়েছে বর্ষশেষের উদ্‌‌যাপন। উৎসবের মরসুমে যাতে সংক্রমণ না বাড়ে সে কারণে দূরত্ববিধি মেনে চলা, মাস্ক এবং নিয়মিত স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছে কেন্দ্র।

চিনে কোভিড (Covid – Omicrom BF.7) হঠাৎই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করায় এবার নড়েচড়ে বসল কলকাতাও। বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এখনই আতঙ্কের কিছু নেই। কিন্তু তা যেমন ঠিক, তেমনই এও ঠিক যে ঝুঁকি নিতে চাইছে না নবান্ন। এদিন সন্ধেতেই স্বাস্থ্য ভবন নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গেও কোভিডের জিনোম সিকোয়েন্সিং (Genome Seaquencing at West Bengal) করা হবে। কারও শরীরে কোভিডের আরটিপিসিআর (RT PCR) টেস্টের পর পজিটিভ রেজাল্ট পেলেই বাধ্যতামূলক ভাবে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেয় স্বাস্থ্য ভবন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, আমেরিকা, চিন, জাপান, কোরিয়ায় হঠাৎ করে কোভিড কেস বাড়তে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে কোভিডের সমস্ত পজিটিভ রেজাল্ট ইনসাকগ (INSACOG) নেটওয়ার্ক ল্যাবে পাঠিয়ে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ইনসাকগ হল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে সার্স-কভ তথা কোভিডের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য ল্যাব নেটওয়ার্ক (INSACOG: Indian SARS-CoV-2 Consortium on Genomics or Indian SARS-CoV-2 Genetics Consortium)।

স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গেও ইনসাকগ স্বীকৃত ল্যাব রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ওই ডিপো সেন্টারগুলি হল—স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিন, এসএসকেএম হাসপাতাল, বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তরবঙ্গ এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং কল্যাণীর জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল।


স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ :
গত এক মাসে আরটিপিসিআর টেস্টে যে সব নমুনায় পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছে, তা ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নিকটবর্তী ডিপো সেন্টারে পাঠাতে হবে জিনমো সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য।

ডিপো সেন্টারগুলোকে স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনে সেই নমুনাগুলো ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠাতে হবে।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ এবং জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল ওই নমুনাগুলো পাঠাবে কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিকেল জিনোমিক্সে।

প্রাথমিক পর্যায়ে পুরনো রেজাল্টের নমুনা এভাবে পাঠিয়ে দেওয়ার পর নিয়মিত এই প্রক্রিয়া চালাতে হবে।
কোনও ল্যাবে পাঁচটি নমুনায় পজিটিভ রেজাল্ট পেলেই তা একত্র করে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কাছের ডিপোয় পাঠিয়ে দিতে হবে।

কোনও মাসে যদি পাঁচটা পজিটিভ কেস কোনও ল্যাবে না পাওয়া যায়, তা হলে যে কটা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে, তার নমুনাই পাঠিয়ে দিতে হবে।

ডিপো সেন্টারগুলি তিন দিন অন্তর নমুনা স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিন বা কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিকেল জিনোমিক্সে পাঠাবে।

প্রতিটি নমুনার সঙ্গে নির্দিষ্ট ফরম্যাট মোতাবেক তথ্য থাকতে হবে।

হাসপাতালে জ্বর, সর্দি, কাশি বা সে ধরনের কোনও উপসর্গ নিয়ে কেউ এলে তাঁকে ভর্তি নেওয়ার সময়ে অবশ্যই আরটিপিসিআর টেস্ট করাতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here