বুদ্ধের যুদ্ধাবসান। বৃহস্পতিবারের সকালে জীবনাবসান ঘটে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। ওইদিন চক্ষুদানের পর, তাঁর দেহ শায়িত ছিল পিস ওয়ার্ল্ডে। শুক্রবার সকালে শুরু হয়েছে তাঁর শেষযাত্রা। দেখুন ভিডিও
সকালে পিস ওয়ার্ল্ড থেকে শববাহী গাড়ি রওনা দেয় বিধানসভার উদ্দেশে। ২০১১ সালে রাজ্যের বিধায়ক, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিধানসভায় গিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। তারপরেই রাজ্যে বাম জমানার পতন ঘটে।
বিধায়ক হিসবে পরাজিত হন বুদ্ধদেব নিজেও। দীর্ঘ সময়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে জড়িয়ে এই বিধানসভা। শুক্রবার সেখানেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল শেষবার।
এদিন বিধানসভায় তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান শাসক-বিরোধী সকলেই। বিধানসভায় কার্যত অভাবনীয় ছবি ধরা পড়ল শুক্রবার। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মরদেহকে কেন্দ্র করে দেখা গেল শাসক-বিরোধী দলের অনেককেই। ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা সহ একাধিক তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি দেখা গেল বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কর ঘোষদেরও। ফুলের মালা দিয়ে তাঁরা সকলে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর মরদেহ সারারাত রাখা হয়েছিল পিস ওয়ার্ল্ডে। শুক্রবার সকালে বিধানসভার পর দুপুর ১২টায় বুদ্ধবাবুর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে মুজফফর আহমেদ ভবন, সেখানে ৩.১৫ মিনিট পর্যন্ত তাঁর দেহ শায়িত থাকার কথা। সেখান থেকে দীনেশ মজুমদার ভবন এবং তারপর দেহদানের জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দেহ নিয়ে আসা হবে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। বিকেল ৪টেয় হবে মরণোত্তর দেহদান।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে জানান, তাঁকে গান স্যালুট দেওয়া হবে। তবে শুক্রবার সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম স্পষ্ট জানান, গান স্যালুটের কোনও প্রশ্ন নেই। ভুল খবর প্রচার হয়েছে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সারাজীবন আড়ম্বরহীন জীবনযাপন করেছেন, তাঁর শেষ যাত্রাতেও কোনও আড়ম্বর থাকবে না।
এদিন বুদ্ধদেবের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী-সন্তান-সহ বাম নেতৃত্ব। শেষ যাত্রায় প্রয়াত বামনেতার সঙ্গী লাল পতাকা। কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় তাঁর শেষ যাত্রায়। রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়ক-নেতারা শেষবার পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বুদ্ধদেবকে। বিধানসভায় কিছুক্ষণ রাখা হয় তাঁর দেহ। শ্রদ্ধা জানান নেতা-মন্ত্রীরা।
বিধানসভা থেকে শেষবারের মতো বুদ্ধদেবকে নিয়ে যাওয়া হবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। সকাল থেকেই ভিড় বাড়ছে আলিমুদ্দিনে। আলিমুদ্দিনে দেহ থাকবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে দীনেশ মজুমদার ভবনে। দীনেশ মজুমদার ভবন থেকে শেষ গন্তব্য এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ। সেখানেই দেহ দান করা হবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।