কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকে যেগুলো শিক্ষাদান ও গ্রহণের চেনা গণ্ডি কে অতিক্রম করে কোন জনপদের ইতিহাসের অংশ হয়ে ওঠে। সীমান্ত শহর বনগাঁর ক্ষেত্রে বনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় তেমনি এক প্রতিষ্ঠান। ১৮৬৪ তে মিডল ইংলিশ স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৮৮৬ সালে হায়ার ইংলিশ স্কুলের স্বীকৃতি।

সার্ধশতবর্ষ অতিক্রম করে এই বিদ্যালয় নিজেই আজ এক মহীরুহ। কিন্তু তার গায়ে বার্ধক্যের চিহ্নমাত্র নেই। বরং নান্দনিকতা আর আধুনিকতার মিশেলে নতুন করে সেজে উঠেছে আজকের বনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় । বিদ্যালয়ে ঢোকার আগেই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে সহজপাঠের চিরচেনা ছবি দিয়ে সাজানো বিদ্যালয়ের পাঁচিল। আর বিদ্যালয়ের ভিতরে আপনাকে স্বাগত জানাবেন বিভূতিভূষণ।

বিদ্যালয়ের গর্বের মুকুটে কোহিনুর হলেন এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৫ টিরও বেশি শ্রেণীকক্ষের নামাংকন বিভূতিভূষণ রচিত নানা বইয়ের নাম অনুসরণে। রয়েছে পথের পাঁচালী ,মৌরীফুল, অভিযাত্রীক , ইছামতী এমনই আরো মণিমুক্ত। নবম শ্রেণীর ছাত্রদের হাতে আঁকা বিভূতিভূষণের ষোলটি বইয়ের প্রচ্ছদ দিয়ে সাজানো শ্রেণী কক্ষের প্রবেশপথ আপনাকে মুগ্ধ করবেই। সামনেই নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য রয়েছে অনুবর্তন মঞ্চ।

রয়েছে একটি সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা যাতে রয়েছে পথের পাঁচালীর পান্ডুলিপি। পাশাপাশি আধুনিক পাঠদানের জন্যও রয়েছে নানা ব্যবস্থা। বাতানুকূল সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব, স্মার্ট ক্লাসরুমের হাত ধরে বিদ্যালয় যেন তার শিকড় কে অক্ষুন্ন রেখে ডানা মেলেছে আধুনিকতার দিকে। সর্বজনশ্রদ্ধেয় প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র ইন্দ্রের নামে অত্যাধুনিক বাতানুকুল অডিটোরিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে।

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রয়েছে দুটি জলের কুলিং মেশিন। সব মিলিয়ে বনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় তার অনন্যতায় স্থিত। বিগত কয়েক বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম দশ জনের মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্র । আগামী ২৯ শে জানুয়ারি ২০২৩ এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা আবার মিলিত হবেন তাদের প্রিয় প্রাঙ্গণে। প্রায় ছয় বছর পর হতে চলেছে প্রাক্তন ছাত্র পুনর্মিলন অনুষ্ঠান।পৃথিবী জুড়ে ছড়ানো বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা ফিরে পাবে তাদের শৈশবের দিনগুলো। উদ্যোগী তরুণ প্রধান শিক্ষক কুনাল দে জানালেন ঐদিন প্রাক্তন ছাত্রদের জন্য থাকবে এক বিশেষ উপহার। প্রতীক্ষা রইলো ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here