সবাইকে শো-কজ করা সম্ভব? কটাক্ষ শান্তনুর
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত সোমবারই দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে বনগাঁয় পিকনিকে মেতেছিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তার এক সপ্তাহের মাথায় ফের আরেক পিকনিকের আয়োজন করলেন তিনি। এবার স্থান উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার গৈপুরে পুরমণ্ডলের সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগানবাড়ি ৷
রবিবার নেতাজির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গোবরডাঙায় পিকনিকের আয়োজন করেন শান্তনু ঘনিষ্ঠরা। এই পিকনিকে উজ্জ্বল উপস্থিত ছিলেন শান্তনু ঠাকুর।
রবিবার সকাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু এই পিকনিকের। ভাত, ডাল, চিকেন, মাছ ইত্যাদি সহযোগে আনন্দে মাতেন শান্তনুরা। শুধু তাই নয় এর পেছনেও আছে যে অন্য সমীকরণ।
এদিকে,রবিবার জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে শো-কজ করেছে রাজ্য বিজেপি। দল বিরোধী কাজের জন্য তাঁদের শো-কজ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এ বিষয়ে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বললেন, ‘‘শো-কজ করেছে করুক না! যা করতে চায় ওরা, করুক। আমার সঙ্গে আরও অনেক নেতা বৈঠক করবেন। সারা পশ্চিমবঙ্গের বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা বৈঠক করবেন। সবাইকে কি বাদ দিয়ে দেবে? সব বিক্ষুব্ধদের বাদ দেওয়া কি সম্ভব?’’
মতুয়া-ক্ষোভ, হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ এবং নয়া রাজ্য ও জেলা কমিটি নিয়ে দলের অন্দরের বিক্ষোভের আবহে এ বার বিজেপি-র ‘বঞ্চিত’ কর্মীদের চাঙ্গা করতে রাজ্য জুড়ে তিনি পিকনিকের কর্মসূচি নিতে চলেছেন বলেও সেখানে জানিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর৷ যদিও তখনও বিক্ষুব্ধ জয়প্রকাশ ও রীতেশকে শো-কজের খবর তাঁর কাছে এসে পৌঁছয়নি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শান্তনু আগেই বলেন, ‘‘অনেক কর্মী আক্রান্ত হয়ে বসে গিয়েছেন। অনেক কর্মী নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তাঁদেরকে উজ্জীবিত করতে এই সম্পর্ক-যাত্রার উদ্যোগ নিচ্ছি। আগামী দিনে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই পিকনিক হবে।’’ এর পর আশিসের বাড়ি থেকে বনভোজন সেরে বেরোনোর পরই শো কজের খবর পান তিনি।
বিজেপি-র নয়া রাজ্য ও জেলা কমিটিতে জায়গা না পাওয়া সায়ন্তন বসু, জয়প্রকাশ, রীতেশ ও পাঁচ বিক্ষুব্ধ মতুয়া বিধায়ক-সহ এক ঝাঁক নেতার সঙ্গে শান্তনুর লাগাতার রূদ্ধদ্বার বৈঠকে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে দল।
দিন কয়েক ধরেই এই বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা এক জোট হওয়ার চেষ্টা করছেন। আগের পিকনিকের পর দ্বিতীয় পিকনিকের পেছনে এমনই এক উদ্দেশ রয়েছে তা বলাই যায় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
এর পর এই রবিবার জয়প্রকাশ ও রীতেশকে শো-কজ করল রাজ্য-বিজেপি। উত্তর ২৪ পরগনার পরেই এমন পিকনিক হওয়ার কথা ছিল পুরুলিয়া জেলায়। সেখানে বিজেপি-র আর এক বিক্ষুব্ধ নেতা মনোজ মাহাতোর বাড়িতে বৈঠক করারও কথা ছিল জয়প্রকাশ, রীতেশদের। তা যাতে তাঁরা করতে না পারেন, তার জন্য রবিবারের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল৷
দলীয় সূত্রের খবর, দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছে, তাই রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে শো কজ নোটিশ দেওয়া হল দুই বিজেপি নেতাকে। জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে দল বিরোধী কাজের জন্যই তাঁদের শো কজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷
জানা গেছে, নোটিশে বলা হয়েছে শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে দল বিরোধী মন্তব্যের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়। এমনকি শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য দল কেন ব্যবস্থা নেবে না? তার উত্তরও জানতে চাওয়া হয় তাঁদের কাছে।
এই চিঠির বিষয়টি নিয়ে বিজেপি নেতা রীতেশ তিওয়ারির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘হ্যাঁ নোটিশ পেয়েছি। তবে দল বিরোধী কী মন্তব্য করছি তা জানি না এখনও।’ যদিও এই নোটিশের কথা অস্বীকার করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে এখনও কিছু জানি না। আমার কাছে কোনও নোটিশ আসেনি।’
তবে বিজেপি সূত্রের খবর দুজনকেই শো কজ করা হয়েছে। এই শো কজ করে কী দল বাকি বিক্ষুব্ধ নেতাদের কাছে বার্তা দিতে চাইছে? প্ৰশ্ন থেকেই যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।