” ইচ্ছেগুলো ভাসিয়েদেখ ইছামতির ধারায় – বইবে সে সব ইছামতির ইচ্ছা অনিচ্ছায়…. বনগাঁ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা শান্ত -স্নিগ্ধ নদী ইছামতি – কে নিয়ে গান লিখলেন আর্চার্য সঞ্জয় চক্রবর্তী, আর তাতে সুর বসালেন বিশাখজ্যোতি…. সৃষ্টি হল নতুন গান ৷ সেই গানেই বনগাঁ উৎসব ২০২২-এর মঞ্চ মাতালেন বিশাখজ্যোতি ৷ দেখুন ভিডিও:
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411132206065.jpg)
পার্থসারথি নন্দী, বনগাঁ : রবিবার ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় খেলাঘর ময়দানে কয়েক হাজার সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের উপস্থিতিতে জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী বিশাখজ্যোতিকে সংবর্ধনা দিল বনগাঁপুরসভার তরফে৷
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411142754969.jpg)
চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ জানান, এই শহরের কৃতি সন্তান বিশাখজ্যোতির -র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় পুরসভার পক্ষ থেকে৷
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411141428318.jpg)
গোপালের কথায় , ইছামতি নদীর তীরে বসলে আজও শোনা যায় স্রোতস্বিনী ইছামতির মিষ্টি সুর , সেই নদী পাড়ের বাসিন্দা আমাদের ঘরের ছেলে বিশাখের সুরে এখন দেশ-বিদেশ মেতে উঠেছে৷ বনগাঁ শহরের নাম ছড়িয়ে পড়ছে তাঁর কাজের দক্ষতায়৷
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411133201577.jpg)
তাঁকে দেখে যাতে আগামী দিনে আগামী প্রজন্মের আরও অনেকে বনগাঁ তথা বাংলার মুখ হয়ে ওঠে তার জন্য এই আয়োজন ছিল৷ এদিন পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা বিশাখের হাতে উপহার হিসেবে কেউ তুলে দেন গীটার ,কেউ দিয়েছেন ফল,মিষ্টি আবার কেউবা দিলেন বাংলাদেশের ইলিশ৷
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411140122293.jpg)
এদিন ওই মঞ্চেই ‘দেশের সময় ‘এর প্রতিনিধিরাও পুরপ্রধান গোপাল শেঠ কে শিল্পী মোহিনী বিশ্বাস-এর আঁকা একটি বিখ্যাত ছবি উপহার দেন৷ পাশাপাশি বিশাখ জ্যোতি-র হাতেও শিল্পী মোহিনী বিশ্বাস-এর আরও একটি ছবি উপহার স্বরুপ তুলেদেন দেশের সময়-র প্রতিনিধি প্রদীপ দে, রতন সিনহা৷
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411135438658.jpg)
এদিন প্রায় তিন ঘন্টা বাংলা ও হিন্দি গান গেয়ে বনগাঁ উৎসব ২০২২ -এর মঞ্চ কাঁপিয়ে অনুষ্ঠান শেষে দেশের সময়-কে বিশাখজ্যোতি জানালেন, “মনে হচ্ছে জীবনের সেরা মুহূর্ত কাটাচ্ছি…”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411161515384.jpg)
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/20220410_211205-1024x461.jpg)
দেশের সবচেয়ে বড় পুরষ্কার পেয়ে যেমন খুব আনন্দিত হয়েছি তেমনই খুশি হয়েছি বনগাঁ পুরসভা আমার সঙ্গীতে জাতীয় পুরষ্কারের বর্ষপূর্তি উদযাপন করায়৷ আমার প্রাণের শহর , আমার বনগাঁর সব প্রিয় মানুষদেরকে কাছে পেয়েছি তাঁদের এত ভালবাসা পেয়েছি এর থেকে আর খুশির কিছু হতে পারেনা৷ আজ তাঁদের জনাই দেশ-বিদেশের কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411142400602.jpg)
বিভিন্ন গুণী মানুষেরা শুভেচ্ছাবার্তা দিচ্ছেন। এর একটা অন্য অনুভূতি, ঠিক বোঝাতে পারব না। মনে হচ্ছে জীবনের সেরা মুহূর্তটা কাটাচ্ছি আমি…।”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411142609769.jpg)
শিল্পী আরও বলেন, “জাতীয় পুরষ্কার পাওয়ার আগেও মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির প্রতি দায়িত্ব ছিল অনেকটাই। আমার মনে হয় সমস্ত সঙ্গীত শিল্পীদেরই এটা থাকা উচিত। তবে পুরষ্কার পাওয়ার পর যারা আমায় চিনবেন এবং শুনবেন, তাঁদের হতাশ করতে চাই না। যারা আমার ফ্যান, তাঁদের প্রতাশ্যা মতই কাজ করার চেষ্টা করব। তাঁদের প্রতি দায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে।”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411143531790.jpg)
বিশাখ জ্যোতির কথায়, “সেই সঙ্গে আরও একটা ইচ্ছে আছে আমার, ইন্ডাস্ট্রি গুণীজনেরা কিংবা আমার গুরুরা যা শিখিয়েছেন, ইচ্ছে আছে পরবর্তী প্রজন্ম যারা মিউজিক নিয়ে কেরিয়ার করতে চান, তাদের সঙ্গে আমার সমস্ত শিক্ষা ভাগ করে নিতে চাই আমি। যে সমাজ থেকে আমি এতটা পেয়েছি, এটা ফিরিয়ে দেওয়া একটা বড় কর্তব্য বলে আমার মনে হয়। আর আরও ভাল কাজ উপহার দেওয়ার জন্য নিজের সঙ্গে লড়াইটা থাকবেই।”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411143824869.jpg)
প্রসঙ্গত, মাত্র ১০ বছর বয়স থেকে শুরু হয় তাঁর সঙ্গীত শিক্ষা।
মাত্র ১০ বছর বয়স থেকে সঙ্গীত শিক্ষা শুরু। ২০০৭ সালে গানের রিয়্যালিটি শো ‘সারেগামাপা'( বাংলা) (Sa Re Ga Ma Pa) -র মঞ্চ থেকে সঙ্গীতের যাত্রা শুরু। এরপর ছোট ছোট মাইলফলক ছুঁয়ে সোজা জাতীয় পুরষ্কার। কথা হচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগণা জেলার ছেলে বিশাখ জ্যোতিকে (Bisakh Jyoti) নিয়ে। সম্প্রতি ৬৭ তম জাতীয় ফিল্ম পুরষ্কারে (67th National Film Award) সেরা পরিচালকের ( Best Music Direction) সম্মান পেয়েছেন তিনি।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411144934265.jpg)
‘ক্রান্তি দর্শি গুরুজি – অ্যাহেদ অফ টাইম’ (Kranti Darshi Guruji- Ahead of Times) ছবির জন্যে সেরা পরিচালকের সম্মান পান বিশাখ জ্যোতি। জীবনের প্রথম গুরু শম্ভু মুখোপাধ্যায়। এরপর কিছুদিন সঙ্গীত চর্চা করেন শঙ্কর মণ্ডলের কাছে।সঙ্গীত শিক্ষা নেন সঞ্জয় চক্রবর্তী ও রেশমী চক্রবর্তীর কাছেও। ‘সারেগামাপা’-র মঞ্চে বিজয়ীর শিরোপা পাননি ঠিকই, দ্বিতীয় হয়েছিলেন। তবে সেখানেই থেমে থাকেনি বিশাখ জ্যোতির কেরিয়ার।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411144532985_20220411144808510.jpg)
এর পর ২০১১ সালে তিনি ফের অংশ নেন, হিন্দি ‘সারেগামাপা’-র মঞ্চে। তবে এখানেও দ্বিতীয় স্থানেই থেমে যায় তাঁর এই শোয়ের যাত্রা। জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক জুটি সাজিদ -ওজিদের সঙ্গেও কাজ করেন তিনি। গোটা দেশ জুড়ে একাধিক শো থেকে ছবির প্লেব্যাক!
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411144124896.jpg)
শিল্পী… শঙ্কর মহাদেবনের (Shankar Mahadevan) সঙ্গে কাজ করেছেন ‘বাবলু হ্যাপি হ্যায়’ ছবিতে। শঙ্কর মহাদেবনের সঙ্গে গাওয়া রাগাশ্রয়ী গান ‘উঁহে বাটিয়া’ (Uhe Batiya), বছরের সেরা রাগাশ্রয়ী গান হিসাবেও মনোনীত হয়।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411142128339.jpg)
সম্প্রতি জি টিভির ‘সারেগামাপা’ -র মঞ্চে জ্যুরি বিচারক হিসাবে ছিলেন তিনি। বলিউডের নামজাদা শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছেন বিশাখ জ্যোতি। তাঁর স্বপ্ন এ আর রহমানের সঙ্গে গান বাঁধার। আপাতত স্বপ্ন সার্থকে কঠোর পরিশ্রম করে, এগিয়ে যাচ্ছেন বনগাঁর এই তরুণ।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2022/04/DESHER-SAMAY_20220411145208458.jpg)