শম্পা গুহমজুমদার, কলকাতা: কলকাতার বেহালাতে অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন ব্লাইন্ড স্কুলে আজ এক অভূতপূর্ব ভাই ফোঁটা আয়োজিত হলো। প্রধান উদ্যোক্তারা হলেন ‘দক্ষিণ হাওড়া মুক্তধারা সংগঠন’। প্রতি বছরের মতো এবছরও এঁনারা কলকাতার নানা জায়গাতে আয়োজন করেছেন “বিভেদহীন ভাইফোঁটা”।
এই মিলন উৎসবে দক্ষিণ হাওড়া মুক্তধারার সক্রিয় সদস্য জয়দীপ দে’ র বক্তব্য অনুযায়ী ‘হাওড়া মুক্তধারা সংগঠনের’ উদ্দেশ্য হলো সমাজে পিছিয়ে পড়া দুঃস্থ এবং আনন্দে বঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। রাজ্যে প্রথমবার দৃষ্টিহীন ছাত্রদের ফোঁটা দিলেন এসিড আক্রান্ত ও ক্যান্সার যোদ্ধা বোনেরা।
এই উপলক্ষে সমাজের বিভিন্ন স্তর যেমন রাজনীতিক, ডাক্তার, সমাজসেবী, আইনজীবী, সঙ্গীত, নৃত্য, অভিনয়, পুলিশ ও অন্যান্য স্তরের ব্যক্তিরা এই ভাইফোঁটাতে অংশ গ্রহণ করেছেন। দৃষ্টিহীন বোনেরাও ফোঁটা দিলেন এসিডি আক্রান্ত ভাইদের। এই মিলনমেলাতে অংশ গ্রহণ করলেন এন সি সি ক্যাডাররা।
স্বনামধন্য আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চ্যাটার্জী, এসিড আক্রান্তদের ‘ব্রেইভসোল্স ফাউন্ডেশনের’ সমাজকর্মী অপরাজিতা গাঙ্গুলি, ‘অলোক ফাউন্ডেশনের’ দেবযানী ঘোষ ও দুর্বার মহিলা সংগঠনের মহাশ্বেতা মুখার্জীর প্রাঞ্জল উপস্থিতিতে শঙ্খ ধ্বনি সহ ফোঁটাদান পর্ব শুরু হয়ে গেল।
মিষ্টিমুখ ছাড়া ভাইফোঁটা হয় না। সবার জন্য উপহার ও মিষ্টির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। ব্লাইন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লিসা ব্যানার্জী ফোঁটা দিলেন এবং দুইচার কথায় আজকে তার অনুভতি সুন্দর ভাবে বর্ণনা করলেন। অ্যাসিড আক্রান্ত বোনেরাও অনেকে দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন।
দৃষ্টি হীনতার বঞ্চনাকে অতিক্রম করে আনন্দের উদ্ভাস কোথাও যেন এই নানা প্রান্তের মানুষদের আজকে মিলিয়ে দিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলোর এই উদ্যমকে সাধুবাদ জানাই। ওনারা এই মিলনমেলাতে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে এসেছেন। অরাজনৈতিক এই সংগঠন গুলোর এই প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।