দোল। রঙের উৎসবে রাঙা হওয়ার দিন। জীবনের সমস্ত হার্ডেল গুলো হেরে গিয়েও রঙের উৎসবে জয়ী হওয়া যায়। ওরাও জয়ী। সংবেদনের সকল সদস্য আজ একসঙ্গে জয়ী।
ওদের জন্য নেই বস্তা বোঝাই আবীর। নেই বালতি বালতি রঙের গোলা। নেই পিচকারি। নেই বেলুন। সব নেইয়ের মধ্যে আছে একমুঠো আনন্দ আর রোদ ধরতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। অন্ধকার আছে বলেই আলোর মহিমা বোঝা যায়। ওরা একসঙ্গে ‘অমলকান্তি’ হয়েছেন। রোদ্দুরকে ছুঁয়েছেন ওরা।
বসন্তোৎসবকে সার্থক করে রাখল সংবেদন । এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুরা রঙের উৎসবে মেতে উঠল শোভাবাজার রাজবাড়ীর নাট মন্দিরে, শনিবারের দুপুরে । দেখুন ভিডিও
আট থেকে আশির মিলনক্ষেত্রের নামই ‘ সংবেদন’। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু, দৃষ্টিহীন ভাইবোনদের কঠিন জীবনযুদ্ধে সমাজে এগিয়ে দেওয়ার প্রয়াস যারা সারাবছর অবিশ্রান্তভাবে করে চলেছে এই সংস্থা। না, কোনো কেমিক্যাল রং নয় হরেকরকম ফুলই ও হারবাল ছিল এই উৎসবের অভিনবত্ব। স্কুলের বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের সঙ্গে ফুল দিয়েই বসন্ত উৎসবে মাতেন সংবেদন পরিবারের সদস্যরা ।
এটি প্রথম বর্ষ নয়, গত ১৫ বছর ধরে এই শিশুগুলির জীবনও রঙিন হয়ে উঠেছে সংস্থার হাত ধরে। গন্ধ আর স্পর্শকে হাতিয়ার করে গোটা উৎসব চত্বর জুড়ে গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া আরও হরেক রকম ফুলের হোলিতে মাতে এই বিশেষ পড়ুয়ারা আর এই আনন্দযজ্ঞে সামিল হয় সংবেদন পরিবারের সদস্যরা। কেমিক্যাল রঙের ডালি নয়, ফুলের ও হারবাল আবিরের ডালি দিয়ে বরিত এই উৎসবের জন্য গোটা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে সকলে ।
সংবেদনের প্রেসিডেন্ট শ্রী গোবিন্দ রায় জানালেন, “সংবেদন গত ২৫ বছর ধরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ও দৃষ্টিহীন ভাইবোনদের জন্য কাজ করছে। এই বছরের থিম যারা সারা বছর রং নিয়ে কাজ করে যেমন প্রতিমা শিল্পী, রং মিস্তিরি, স্কেচ পেন কারখানায় কাজ করে তাদের সম্মান জ্ঞাপন করা ।”
সংবেদনের অন্য বসন্ত অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সকল ছাত্র ছাত্রীদের ও দৃষ্টিহীন ভাই বোনদের নৃত্য পরিবেশনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । বলাই যায় বিশেষভাবে সক্ষম এই শিশুরা এ দিনের অনুষ্ঠান উদযাপনে এক অন্য মাত্রা এনে দিল।