দেশের সময় ঠাকুরনগর ঠাকুরনগরের মতুয়া মেলার মাঠে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর সম্প্রতি বনগাঁর এসডিওর কাছে ১৪৪ ধারার আবেদন করেছেন। তাঁর এই আবেদন ঘিরে ঠাকুরবাড়ির অন্দরেই জোর তরজা শুরু হয়েছে।
মতুয়াদের আধ্যাত্মিক চেতনাকে অবহেলার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকেই নিশানা করেছেন শান্তনু ঠাকুর। মতুয়াদের ধর্মীয় মেলা বন্ধ করার চক্রান্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। মমতাবালা ঠাকুরের দাবি, মেলায় দুষ্কৃতীদের প্রবেশ আটকাতেই এই আবেদন। মেলা চলবে মেলার মতোই।
চলতি মাসের ৬ তারিখ ঠাকুরনগরে শুরু হচ্ছে বারুনির মেলা। ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠে এই মেলা বসে। ১৯৫৩ সালে শুরু হয় মেলা। কয়েক বছর আগেও এই মতুয়া মেলার রাশ ছিল তৃণমূলের হাতে। কিন্তু শান্তনু ঠাকুর বনগাঁর সাংসদ হওয়ার পর রাজনীতির বিভাজন ঘটে ঠাকুরবাড়িতে।
গত কয়েক বছরে মেলার আগে কিছু না কিছু নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে তরজা লেগেই থাকে। স্থানীয়দের কথায়, মূলত মেলার মাঠের দখলদারি নিয়ে এই লড়াই। এই বছর লোকসভা নির্বাচনে আবহেই শুরু হচ্ছে ঠাকুরনগরের বারুনি মেলা। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা চলে এসেছেন। শুধু অন্যান্য জেলা নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকেও মতুয়া ভক্তরা আসতে শুরু করে দিয়েছেন।
মেলায় স্টল বসানোর কাজও প্রায় শেষের মুখে। এবারও মেলা নিয়ে রাজনৈতিক পারদ চড়তে শুরু করেছে। বারুনির মেলার মাঠে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলে সম্প্রতি মমতাবালা ঠাকুর ১৪৪ ধারার আবেদন করেছেন বনগাঁর মহকুমাশাসকের কাছে। মেলা বন্ধের চক্রান্তের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন কেন্দ্রের বিদায়ী জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর।
মতুয়াদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও শান্তনু নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব তিথিতে প্রতি বছরেই বারুনির মেলা হয়। মতুয়া ধর্মের প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মেলা বন্ধ করার জন্য ১৪৪ ধারার আবেদন করা হয়েছে। এর জবাব লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া ভক্তরাই দেবেন।’
মমতাবালা ঠাকুর অবশ্য বলেন, ‘গত দশ বছর ধরে মেলার প্রশাসনিক অনুমতি আমাকে দেওয়া হয়। অথচ আমরা মেলায় ঢুকতে পারি না। শান্তনু ঠাকুর মেলার মাঠে গিয়ে বসে থাকে। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করে। দুষ্কৃতীরা মেলায় ঢুকে দৌরাত্ম্য চালায়। শুধুমাত্র দুষ্কৃতীদের আটকাতে ১৪৪ ধারার আবেদন করা হয়েছে। এই মেলা ভক্ত এবং ভগবানের মহামিলন ক্ষেত্র। মেলা চলবে ভক্তদের উপস্থিতিতে। ভক্তদের আসার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।’
বনগাঁর এসডিও উর্মি দে বিশ্বাস বলেন, ‘আবেদনের ভিত্তিতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।’